সর্বশেষ

2/recent/ticker-posts

"নাস্তিকতা বিস্তার ও আমাদের অসারতা"

 

"নাস্তিকতা বিস্তার ও আমাদের অসারতা"

লেখাঃ জিয়ানুর রহমান
 
"আপনি যদি শক্ত হন তাহলে আপনার সামনে ভীত অথবা দেখানো সম্মান করবে।"
প্রথমে আজকের ঘটনা বর্ণনা করি।
করোনার সময় সকালে বসে না থেকে যুক্ত হলাম একটা হাফেজিয়া ও কওমী মাদ্রাসায় জেনারেল শিক্ষক হিসাবে, যদিও আমি উভয় লাইনের ছাত্র। যাহোক, আমি তাদের বিভিন্ন ক্লাস নিয়ে থাকি আর আমার ছাত্রদের বয়স ৭-১৯ এর মধ্যে।
বলছিলাম আজকের অভিজ্ঞতার কথা, সাধারণত ক্লাসে একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় এসে যায় এবং সে গুলি ও আলোচনা করতে হয়।
স্বভাবতই ছাত্রদের সাথে মিশে যাই এবং উন্মুক্ত প্রশ্ন ও থাকে।
আজ ক্লাস নিচ্ছিলাম ২য় ও ৪র্থ শ্রেণীর, তাদের বয়স সর্বোচ্চ ১২ বছর হবে।
ক্লাসের মাঝে তাদের সাথে সাধারণ বিজ্ঞানের সৃষ্টি, গ্রহ-উপগ্রহ নিয়ে আলোচনা করছিলাম।
আমার বক্তব্যের মাঝেই ৯/১০ বছরের বাচ্ছা আমাকে প্রশ্ন করলো আচ্ছা স্যার, আমার এ-ই প্রশ্ন টি প্রায় মনে আসে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে?
তার সাথে বাকিরা ও বলল জি স্যার বলুন না স্যার এই প্রশ্ন আমাদেরকে ও অনেকে করে থাকে।
শুনে অবাক হয়নি কেননা নাস্তিকদের প্রচার ও প্রসারতা আগে থেকেই আমার জানা ছিল।
আমি উত্তর দিলাম লম্বা ভাবে। যেহেতু এ-ই ধরনের প্রশ্ন-উত্তর নিয়ে আগে থেকে পড়াশুনা কিংবা বিতর্ক করা ছিল অর্থাৎ পূর্ব অভিজ্ঞতা। সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরলে বলা যায় সূরা ইখলাস।
প্রশ্নের উত্তর বিস্তারিত পড়তেঃ-
এছাড়া প্যারাডক্সিকাল সাজিদ কিংবা "সত্য কথন/নাস্তিকদের দাত ভাঙা জবাব" মোবাইল এপ্লিকেশন তাছাড়া বিভিন্ন ভাবে জানতে পারেন।
উত্তর শেষ না হতেই আবারও প্রশ্ন- আচ্ছা স্যার, আল্লাহ কেমনে হয়েছে? প্রশ্ন প্রথম প্রশ্নের সমার্থক। বিস্তারিত আলোচনা করলাম সেখানে। সংক্ষেপেঃ- হওয়া, না হওয়া, সময় এই বিষয় গুলি সৃষ্টির সাথে সম্পর্ক আল্লাহর সাথে নয় আল্লাহ পূর্ব থেকে ছিলেন, আল্লাহর শুরু ও শেষ নেই। টাইম ব্যাপার টা এ সৃষ্টির জন্য আল্লাহর জন্য নয়। আরো কিছু উদাহরণ সেখানে আলোচনা করলাম।
বিস্তারিত পড়তে পারেন উপরের লিংক থেকে।
বাচ্চার ফের প্রশ্নঃ আচ্ছা, স্যার মানুষ কি বানর থেকে আসছে? মানুষ না-কি আগে বানর ছিল।
ডারউইনের বিবর্তনতত্ত্ব সম্পর্কে জানা ছিল এ জন্য সে গুলি যতদূর পারি উত্তর দিলাম সহজ ভাষায়। কেননা তারা বাচ্চা তাদের মনের মধ্যে নাস্তিকরা প্রশ্ন ঢুকিয়ে দিয়েছে আর আপনি যতই বিজ্ঞান বুঝান তারা বুঝবেনা কেননা ৮/১০ বছরের বাচ্চারা জটিল ভাষা বোঝার ক্ষমতা রাখেনা। বাচ্চাদের বোঝাতে হয়ত সক্ষম হয়েছিলাম তাদের ফেস দেখে অনুমান।
যাহোক, বিবর্তনের ভ্রান্ত থিওরি সম্পর্কে ইন্টারনেটে কিংবা বিভন্ন বই থেকে তথ্য পেয়ে যাবেন।
 
শিক্ষাঃ-
ক) নাস্তিকরা মাদ্রাসা পড়ুয়া বাচ্চাদেরকে টার্গেট করে থাকে যাতে সহজে তাদের মাঝে সন্দেহর জাল তৈরি করতে পারে।
খ) মাদ্রাসার ছাত্ররায় আগামী দিনের ঈমানের জন্য লড়বে তাই নাস্তিকরা যেভাবে হোক তাদেরকে কনভার্ট করবে বর্তমানে আমরা দেখতে পাই মাদ্রাসার ছাত্ররা নোংরা রাজনীতির সাথে জড়িয়ে বিভিন্ন শিরক করতে বাধ্য হচ্ছে এটি ও কিন্তু তাদের সফলতা যদিও সেটি সফলতা নয়।(স্পষ্ট নয়)
গ) বাচ্চাদের করা প্রশ্ন আপনার মনে কত বছর বয়সে এসেছিল? তাও আবার এ-ই ধরনের প্রশ্ন। আপনি হয়ত এখনো ভাবতে পারেন না।
ঘ) মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে এ-ই ভাবে কনভার্ট করার সাহস পেলে জেনারেল স্টুডেন্টদের কে আরো সহজে তারা কনভার্ট করতে পারছে সেটি হয়ত অন্য ভাবে। যেমনঃ- বাধার শিকল ভেঙে ফেলার মন্ত্রণা।
 
আমাদের অসারতাঃ-
ক) আমরা কুরআন পড়তে পারিনা আর সেখানে অর্থ কিভাবে সম্ভব? ইসলামী বই গুলিকে সেভাবে আমরা প্রমোট করিনা। যেমনঃ- 'কুরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান' লেখা জাকির নায়েক কিংবা 'কুরআন-বাইবেল ও বিজ্ঞান' মুরের লেখা অথবা আরিফ আজাদের লেখা বই গুলি।
খ) আমারা লেবাস ও সুরকে প্রাধান্য দিয়ে স্টেজে নিয়ে আসি যা থেকে আমরা কিছুই শিখতে পারিনা তবে কিছু অযুক্তিক কিচ্ছা কাহেনী ঠিকই জানা হয়।
আমাদের আলেমদের কে প্রাধান্য দেওয়া দরকার তাওহীদ-ঈমান-আকিদা সম্পর্কে ব্যপকভাবে আলোচনার প্রয়োজন। আল্লাহর সিফাত সম্পর্কে আমরা কিছুই জানিনা বললে চলে।
গ) প্রতারক লিবাসধারী কিংবা ওয়াজ করে পেট পূর্ণ, নামে আলেমদেরকে বর্জণ করে প্রকৃত আলেমদেরকে সমাজে স্থান দিতে হবে কিন্তু আমরা তার বিপরীত।
ঘ) হুজুরদের আলোচনার অর্ধেক থাকে অন্য হুজুরকে নিয়ে সমালোচনা অথচ তারা কাফের কিংবা নাস্তিকদের নিয়ে আমাদেরকে সচেতন করে না এমনকি তাদের নলেজ ও নেই।
ঙ) আমাদের যুবকরা যারা নতুন দ্বীনে ফিরে আসছে তারা ফেসবুকে কিংবা ইউটিউবে জিহাদ করে বেড়ায় অথচ তারা জানেনা জিহাদ কোন ধরনের ইবাদত তাদের ঈমান-আকিদা সম্পর্কে নলেজ নেই তার মাঠে তাওহীদের কাজ না করে ইমাম মাহদী কিংবা খোরাসান নিয়ে ব্যস্ত। হ্যাঁ আমাদের কে জিহাদ বিমুখতা এটিও একটি খারাপ দিকে পরিণত করেছে তবে যদি ঈমান না থাকে কিংবা ঈমান মজবুত না হয় তাহলে জিহাদ কিবোর্ড এ সমাপ্ত। তাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য তাওহীদ প্রচার করা তারপরে সিরিয়াল ও গ্রুরুত্ব অনুযায়ী।
 
কিন্তু আজকের দ্বীনি যুবকদের অর্ধেকের বেশি আছে সেখানে আমরা কেও জাকির নায়েক হতে চাই না কিংবা আহমেদ দিদাত আমরা সরাসরি গোহা পথে যেতে চাই যেটি আমাদের অসারতা। আমাদের কে বুঝতে হবে তাওহীদ ও ঈমান কি? মুসলিমরা তাওহীদ সম্পর্কে কতটা অজ্ঞ হলে খ্রিস্টানদের বানানো উন্মাদময় ট্রিনিটি বিশ্বাস করে খ্রিস্টান হচ্ছে। বাংলাদেশে এমন উদাহরণ শতশত আছে।
আমাদের আল্লাহকে জানতে হবে। ঈমানের রুকন সম্পর্কে বিস্তারিত ও মজবুত জ্ঞান রাখতে হবে। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমিন।
সর্বোপরি তাওহীদ সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে কুরআন পড়তে হবে (অনুবাদ ও তাফসির সহ)।
 

 
 
 

Post a Comment

0 Comments