সর্বশেষ

2/recent/ticker-posts

“DNA ও স্রষ্টার অস্তিত্ব”


“DNA ও স্রষ্টার অস্তিত্ব
Dna কাকে বলে?? কোষের কেন্দ্রে অবস্থিত DNA নিউক্লিয়াসের উপাদান।
এর আরও একটা পরিচয় আছে।
ডাটা ব্যাংক। যা বংশগতির সমস্ত তথ্যাবলী বহন করে। আর শুধু বংশগতি নয়, বরং একজন মানুষের শারীরবৃত্তীয় যত প্রক্রিয়া ঘটবে তার সবটাই DNA-তে কোড করা থাকে। গণনা করে দেখা গেছে, DNA-তে যে তথ্যাদি সংকলিত রয়েছে তা যদি লিপিবদ্ধ করা হয়, তাহলে তার জন্য ৯০০ ভলিউমের এক বিশালাকার এনসাইক্লোপেডিয়ার দরকার হবে। যেখানে প্রতিটি ভলিউমের পৃষ্ঠা সংখ্যা হবে প্রায় ৫০০।
- Very interesting!
- Really interesting
.
DNA-র পূর্ণরূপ হল ডি-অক্সিরাইবো নিউক্লিক এসিড। যা এডেনিন (A), গুয়ানিন (G), সাইটোসিন (G) ও থায়ামিন (T) নামক নাইট্রোজেন বেইজ দিয়ে গঠিত। উক্ত বেইজগুলো ডি-অক্সিজেনেট রাইবোজর সাথে যুক্ত থাকে। যাদেরকে বলে নিউক্লিউসাইট। প্রতিটি নিউক্লিউসাইডের রাইবোজ সুগারে ফসফেট যুক্ত হলে গঠিত হয় নিউক্লিউটাইড। মূলত এই নিউক্লিউটাইড-ই হল DNA-র গাঠনিক একক। অর্থাৎ এরকম একেকটি নিউক্লিউটাইড অণু পাশাপাশি যুক্ত হয়ে যে পলি-নিউক্লিউটাইড চেইন গঠন করে তাকেই DNA বলে। আর এক একটি DNA মলিকুলে প্রায় তিন বিলিয়ন বেইজ পেয়ার থাকে। নিউক্লিউটাইডগুলো পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে ডাবল হেলিক্স গঠন করে। আর ডাবল হেলিক্স গঠনের ক্ষেত্রে পাশাপাশি দুটি চেইন থাকে। দুটি চেইনের একটির A অপরটির T এর সাথে এবং একটির C অপরটির G এর সাথে হাইড্রোজেন বন্ধন দিয়ে যুক্ত থাকে।
প্রত্যেকটা নিউক্লিউটাইড-এ ৩৪ টা এটম থাকে।
.
এবার বলুন, একটি DNA -তে কতগুলো নিউক্লিউটাইড থাকে?
এক একটা DNA -তে ছয়শ কোটি নিউক্লিউটাইড থাকে।
আরও মজার ব্যাপার কি জানেন?
- দুশত কোটি এটমকে কেমিক্যালি কম্বাইন্ড হতে হয় একটা সিংগেল মলিকুল গঠনের জন্যে। আর একটা সিংগেল DNA মলিকুল বানাতে তোর কত সময়ের দরকার হবে জানেন?
আপনি যদি একটি এটমকে এক সেকেন্ডে প্রসেস করতে পারেন, তাহলে দৈনিক ৮ ঘণ্টা ব্যয় করে এই কাজ শেষ করতে তোর সময় লাগবে ২০০০০ বছরের বেশি।
নাস্তিকদের কাছে Richard Dawkins বেশ প্রিয় একজন বিজ্ঞানী যিনি বিবর্তনবাদের প্রচারক। তার কথাকে নাস্তিকরা ঈশ্বরের বাণীর মত মনে করে।
Richard Dawkins কোষের গঠন বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, “Each nucleus . . . contains a digitally coded database larger in information content, than all thirty volumes of the Encyclopedia Britannica put together. And this figure is for each cell, not all the cells of the body put together”.
.,
- তিরিশ ভলিউমের এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা?একবার চিন্তা করেছেন? । বিষয়টা কত্ত জটিল।
আরও জটিল তথ্য আছে!!লাইনে থাকুন
- মানব দেহের একটি কোষের DNA-তে প্রায় দুই লক্ষ জিন থাকে।
আর এই সব জিনগুলো মিলে প্রায় দুই লাখ প্রোটিনের কোড বহন করে যা কোষের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। একটি মাঝারি ধরণের প্রোটিন প্রায় তিনশত এমাইনো এসিড বহন করার সক্ষমতা রাখে। এটাকে যে DNA জীন কন্ট্রোল করে তার চেইনে ১০০০ টি নিউক্লিউটাইড থাকে।
একটি DNA চেইনে চার প্রকার নিউক্লিউটাইড আছে।তাহলে আমরা বলতে পারি ১০০০ লিংক-ওয়ালা যে নিউক্লিউটাইড আছে তা বিন্যস্ত হতে পারে 4 to the power 1000 উপায়ে। তাহলে এই সম্ভাব্যতার উত্তর কত হবে বলতে পারেন?
.
ভাই রে এটা তো ক্যালকুলেটরে বের করা যাবে না,
সত্যিই বের করা যাবে না। কেননা এর উত্তরটা হবে 10 to the power 600. আর এই সংখ্যাটা আমাদের হিসাবের বাইরে।
আরও মজার কথা কি জানেন? এই হিসাবটা আমার না। বিশিষ্ট্য বিবর্তনবাদি বিজ্ঞানী Frank Salisbury এই হিসাবটা বের করে দেখিয়েছেন।
.
একের পর যদি ৬০০ শূন্য হয়, তাহলে দৈবভাবে নিউক্লিওটাইডের গঠন হওয়ার সম্ভাব্যতা কত?
শূন্য,
সম্ভ্যাব্যতার সূত্রানুসারে বিশ্বজনীন সম্ভাব্যতার সীমা ১০১৫০। যে কোন র‍্যাণ্ডম ঘটনা এই সীমাকে ছাড়িয়ে গেলে আমাদের মহাবিশ্বে তা ঘটার কোন সম্ভাবনা নেই। অর্থাৎ তার সম্ভাব্যতা শূন্য।
.
Francis Crick এর নাম শুনেছেন ত?
বিখ্যাত বায়োকেমিস্ট। যিনি DNA আবিষ্কার করেন এবং পরবর্তীতে নোবেল প্রাইজ পান।
- Francis Crick তার ‘Life Itself” বই-এ বলেছেন, “An honest man, armed with all the knowledge available to us now, could only state that, in some sense, the origin of life appears at the moment to be almost a miracle”
.
যিনি DNA-র আবিষ্কারক তিনিই নিজেই এ কথা স্বীকার করছেন, জীবনের উৎপত্তি মিরাকল ছাড়া আর কিছুই নয়।
এবার বলুন ১২৪৮ পৃষ্ঠার এই Fundamentals of Biochemistry-বইটা কি এমনি এমনি সৃষ্টি হতে পারে? ইটের কোন অংশ খসে পরে?
সত্যিই পারে না। আর Prof. Phillip Johnson বলেছেন, "In the beginning was the Word” -এর মত একটি যোগ্যতাসম্পন্ন বাক্যও কখনো র‍্যান্ডমলি সৃষ্টি হতে পারে না। বরং এর জন্যে একজন স্রষ্টা থাকতে হয়। আর এতক্ষণ আমরা যে DNA নিয়ে আলোচনা করলাম তার গঠন কি এই ১২৪৮ পৃষ্ঠার বই থেকেও জটিল নয়?
- আমার ভাই। একটু চিন্তা কর। DNA-র গঠন কতটা জটিল। কত কোটি কোটি ইনফরমেশন একটা DNA-তে কোডিং করা থাকে। আর এই DNA’র গঠন এতই ক্ষুদ্র যে, তা খালি চোখে তো দূরের কথা জটিল অণুবীক্ষণযন্ত্রের সাহায্যেও দেখা যায় না। বরং ইলেট্রন মাইক্রোস্কোপের দরকার হয়। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে কোটি কোটি জীবের মধ্যে হাজার হাজার কোটি জটিল থেকে জটিলতর এসব ইনফরমেশন ইনকোডেট হয়ে আছে অতিক্ষুদ্র DNA মলিকুলের মধ্যে। আর এমনভাবে এনকোডেট হয়ে আছে যেখানে কোন বিশৃঙ্খলা নেই। একটি বাক্যও যেখানে র‍্যান্ডমলি অর্থবোধক হতে পারে না। সেখানে এই কমপ্লেক্স DNA কি র‍্যান্ডমলি হওয়া সম্ভব? প্রকৃতির কোন জড় বস্তু থেকে কি এমন কমপ্লেক্স জিনিস তৈরি হতে পারে? এর জন্য কি সত্যিই কোন স্রষ্টার দরকার নেই?
.
- অনেক তো হয়েছে। এবার ফিরে আসুন না। আর কত নিজের উপর যুলুম করবেন? আর কত মিথ্যার উপর ভিত্তি করে নিজের জীবনকে নিঃশেষ করবেন? এখনো কি আপনার চোখ খুলে নি? সত্যের সামনে তোর শত মিথ্যা দাবি টিকেছে কোনদিন? টিকে নি। বরং বারবার পরাজিত হয়েছে। তবুও কেন মিথ্যাকে আঁকড়ে ধরে থাকবেন? এত দাম্ভিকতা কিসের?
স্রষ্টার আহ্বানে সাড়া দেন আমার ভাই। ছিন্ন করুন শত সংশয়ের বাধন। আপনার স্রষ্টা যে আপনাকে ডাকছেন। তিনি আপনাকে লক্ষ্য করে বলছেন, “হে প্রশান্ত আত্মা। তুমি ফিরে এস তোমার রবের প্রতি, (ফিরে এস) সন্তুষ্টচিত্তে ও সন্তোষভাজন হয়ে। আমার বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত হও। আর প্রবেশ কর আমার জান্নাতে। (সূরা ফজরঃ ২৭-৩০)।
একেবারে নিশ্চুপ। মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না আপনার। হাত পা কাপছে। আর দুচোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।জীবনের অনেকটা সময় মরীচিকার পেছনে দৌড়িয়েছেন। নিজের উপর অনেক যুলুম করে ফেলেছেন।ভাবছেন আমার স্রষ্টা কি আমাকে মাফ করবে?
কোরআন কারীমের একটি আয়াত পড়ে শুনাচ্ছি, “বল হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের উপর অবিচার করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সকল পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা যুমারঃ ৫৩)।
.
তথ্যসূত্রঃ
1) Donald Voet, Judith G. Voet, Charlotte W. Pratt, Fundamentals of Biochemistry; (John & Sons company, New York, 2nd ed., 2006)
2) Edward Staunton, Wilbert, Howards, John, Text book of Biochemistry; (Oxford & IBH company, New Delhi, India)
3) Raymond Chang, Chemistry, (Mc Graw-Hill company, New York, 7th ed.)
4) Harun Yahya, If Darwin Had Know About DNA; (Global Publishing, Istanbul, Turkey, 2008)
5) Harun Yahya, The Miracle of Creation DNA; (Godword Books, New Delhi, India, 2002)
6) MN Chatterjea, Rana Shinde, Text Book of Medical Biochemistry, ( Jaypee Brothers, New Delhi, India, 2002)
7) Francis Crick, Life Itself: Its Origin and Nature,( Simon & Schuster, New York, 1982)
8) Phillip E. Johnson, Defeating Darwinism by Opening Minds, (InterVarsity Press, Illionis, 1997)