আল্লাহুর কি আকৃতি আছে?এ ব্যাপারে ইমাম আবু হানিফা(র) কি বলেন?
লেখক
জিয়ানুর রহমান
আল্লাহুর কি আকৃতি
আছে?এ
ব্যাপারে ইমাম
আবু হানিফা(র) কি
বলেন?
সতর্ক বার্তাঃআল্লাহু তায়ালার গুন বা সিফাত সৃষ্টি জগতের কোনোটির সাথে তুলনা করা যাবে না।করলে সে কুফরি করবে অর্থ্যাত সে কাফের হয়ে যাবে।আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহুর গুন আল্লাহু ভালো জানেন।এ নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করবো না।
চলুন শুরু করি,,,
সতর্ক বার্তাঃআল্লাহু তায়ালার গুন বা সিফাত সৃষ্টি জগতের কোনোটির সাথে তুলনা করা যাবে না।করলে সে কুফরি করবে অর্থ্যাত সে কাফের হয়ে যাবে।আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহুর গুন আল্লাহু ভালো জানেন।এ নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করবো না।
চলুন শুরু করি,,,
আমাদের সমাজে একটি
প্রচলিত ধারণা
হচ্ছে মহান
আল্লাহ নিরাকার,
তাঁর কোন
আকার নেই।
কিন্তু এটি
একটি ভুল
ধারণা। মহান
আল্লাহ নিরাকার
নন। তাঁর
আকার রয়েছে।
তবে মনে
রাখতে হবে
যে, আল্লাহর
আকার আল্লাহর
মতই। আল্লাহর
আকার-আকৃতির
সাথে কোন
সৃষ্টির আকার-আকৃতির সাদৃশ্য
বা মিল
নেই। পবিত্র
কুরআন ও
সহীহ হাদিসে
আল্লাহ তায়ালার
হাত, পা,
চেহারা, আঙ্গুল,
চোখ ইত্যাদি
সম্পর্কে সুস্পষ্ট
আলোচনা পাওয়া
যায়। নিম্নে
সে সমস্ত
কুরআনের আয়াত,
হাদিস এবং
ইমাম আবু
হানিফা রহিমাহুল্লাহ
এর বক্তব্য উল্লেখ করা হলঃ
.
১) মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে
ইহুদীদের একটি
বক্তব্য এভাবে
তুলে ধরেছেনঃ
“আর ইহুদীরা
বলে, আল্লাহর
হাত বাঁধা।
তাদের হাতই
বেঁধে দেয়া
হয়েছে। তাদের
এ উক্তির
দরুণ তাদের
প্রতি অভিশাপ
করা হয়েছে।
বরং তাঁর
(আল্লাহর) উভয় হাত প্রসারিত”।
[সূরা মায়িদাহ,
আয়াত ৬৪]
.
২) আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ “তারা
আল্লাহর যথোচিত
সম্মান করে
না। ক্বিয়ামতের
দিন গোটা
পৃথিবী থাকবে
তাঁর হাতের
মুঠোতে এবং
আকাশ সমূহ
ভাঁজ করা
অবস্থায় থাকবে
তাঁর ডান
হাতে”।
[সূরা যুমার,
আয়াত ৬৭]
.
এ আয়াতের তাফসীরে সহীহ বুখারীতে
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু
হতে বর্ণিত
আছে যে,
ইহুদীদের একজন
বড় আলেম
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর নিকট
এসে বললঃ
হে মুহাম্মাদ,
আমরা (তাওরাতে)
এটা লিখিত
পাচ্ছি যে,
আল্লাহ তায়ালা
সপ্ত আকাশ
রাখবেন এক
আঙ্গুলের উপর
এবং যমীনগুলো
রাখবেন এক
আঙ্গুলের উপর,
বৃক্ষরাজিকে রাখবেন এক আঙ্গুলের উপর
এবং পানি
ও মাটি
রাখবেন এক
আঙ্গুলের উপর
আর সমস্ত
মাখলুককে রাখবেন
এক আঙ্গুলের
উপর। অতঃপর
তিনি বলবেন,
আমিই সব
কিছুর মালিক
ও বাদশা।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ইহুদী আলেমের
কথার সত্যতায়
হেসে ফেলেন,
এমনকি তার
মাড়ির দাঁত
প্রকাশিত হয়ে
পড়ে। অতঃপর
তিনি উপরোক্ত
আয়াতটি পাঠ
করেন। [সহীহ
বুখারী, হাদিস
নং ৪৮১১,
তাফসীর অধ্যায়]
.
৩) ইবনু উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু
থেকে বর্ণিত,
তিনি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে
বর্ণনা করেন
যে, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“আল্লাহ তায়ালা
কিয়ামতের দিন
সমস্ত পৃথিবীকে
তাঁর মুঠোতে
ধারণ করবেন
এবং সমস্ত
আকাশকে স্বীয়
ডান হাতে
গুটিয়ে নিয়ে
বলবেন, আমিই
একমাত্র বাদশাহ”। [সহীহ বুখারী, হাদিস নং
৭৪১২]
৪) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেছেনঃ
“আল্লাহ তায়ালা
পশ্চিম দিক
থেকে সূর্যোদয়
না হওয়া
পর্যন্ত প্রতি
রাতে তাঁর
হাত প্রসারিত
করতে থাকবেন,
যাতে করে
দিনের গুনাহগার
তওবা করে।
আর তিনি দিনে তাঁর হাত
প্রসারিত করতে
থাকবেন, যাতে
করে রাতের
গুনাহগার তওবা
করে”।
[সহীহ মুসলিম,
হাদিস নং
২৭৫৯, তওবা
অধ্যায়, অনুচ্ছেদ
৫]
৫) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম
বলেনঃ “নিশ্চয়ই
সকল আদম
সন্তানের অন্তর
সমূহ একটি
অন্তরের ন্যায়
আল্লাহ তায়ালার
আঙ্গুল সমূহের
দুটি আঙ্গুলের
মাঝে অবস্থিত।
তিনি যেমন
ইচ্ছা তা
পরিচালনা করেন”। [সহীহ মুসলিম, হাদিস নং
২৬৫৪, ভাগ্য
অধ্যায়, অনুচ্ছেদ
৩]
৬) আল্লাহ তায়ালার পা মুবারক
সম্পর্কে আল্লাহর
রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেনঃ
“জাহান্নামে (জাহান্নামীদের) নিক্ষেপ করা হতে
থাকবে আর
সে (জাহান্নাম)
বলবে, আরো
আছে কি?
শেষ পর্যন্ত
বিশ্ব জাহানের
প্রতিপালক তাতে পা রাখবেন। তাতে
জাহান্নামের একাংশের সাথে আরেকাংশ মিশে
যাবে। অতঃপর
জাহান্নাম বলবে, তোমার প্রতিপত্তি ও
মর্যাদার শপথ,
যথেষ্ট হয়েছে
যথেষ্ট হয়েছে”। [সহীহ বুখারী, হাদিস নং
৭৩৮৪, তাওহীদ
অধ্যায়]
৭) আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু
আনহু হতে
বর্ণিত। তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
(কিয়ামতের দিন) আমাদের প্রভু পায়ের
নলা উন্মুক্ত
করে দিবেন।
অতঃপর সকল
মুমিন পুরুষ
ও নারী
তাকে সিজদা
করবে। কিন্তু
বাকী থাকবে
ঐসব লোক,
যারা দুনিয়ায়
সিজদা করতো
লোক দেখানো
ও প্রচারের
জন্য। তারা
সিজদা করার
জন্য যাবে
কিন্তু তাদের
পৃষ্ঠদেশ একখন্ড
তক্তার মত
শক্ত হয়ে
যাবে। [সহীহ
বুখারী, হাদিস
নং ৪৯১৯,
তাফসীর অধ্যায়]
৮) আল্লাহ তায়ালার চেহারা মুবারক
সম্পর্কে আল্লাহ
তায়ালা বলেনঃ
“ভূপৃষ্ঠের সব কিছুই ধ্বংসশীল। একমাত্র
আপনার মহিমাময়
ও মহানুভব
পালনকর্তার চেহারা ব্যতীত”। [সূরা আর রহমান, আয়াত
২৬-২৭]
৯) আল্লাহ তায়ালার চোখ মুবারক
সম্পর্কে আল্লাহ
তায়ালা বলেনঃ
“আর আমি
আমার পক্ষ
থেকে তোমার
প্রতি ভালোবাসা
ঢেলে দিয়েছিলাম
যেন তুমি
আমার চোখের
সামনে প্রতিপালিত
হও”।
[সূরা ত্ব-হা, আয়াত
৩৯]
১০) সাধারণত নিরাকার কোন কিছু
দেখা যায়
না। কিন্তু
কিয়ামতের দিন
প্রত্যেক জান্নাতবাসী
আল্লাহ তায়ালাকে
স্বীয় আকৃতিতে
দেখতে পাবে।
সুতরাং প্রমাণিত
হয় যে,
আল্লাহ তায়ালা
নিরাকার নন।
সহীহ বুখারীর
একটি বর্ণনা
পাওয়া যায়
যে, লোকেরা
জিজ্ঞেস করলেনঃ
হে আল্লাহর
রাসূল, কিয়ামতের
দিন কি
আমরা আমাদের
প্রতিপালককে দেখতে পাবো? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) উত্তরে
বললেনঃ পূর্ণিমা
রাতে চাঁদ
দেখতে কি
তোমাদের কোন
কষ্ট হয়?
তারা বললঃ
না, হে
আল্লাহর রাসূল।
তিনি আরো
বললেনঃ যখন
আকাশ মেঘশূন্য
ও সম্পূর্ণ
পরিষ্কার থাকে
তখন সূর্য
দেখতে তোমাদের
কোন কষ্ট
হয় কি?
উত্তরে তারা
বললেনঃ জ্বী
না। তখন
তিনি বললেনঃ
এভাবেই তোমরা
তোমাদের প্রতিপালককে
দেখতে পাবে।
[সহীহ বুখারী,
হাদিস নং
৭৪৩৭, তাওহীদ
অধ্যায়, অনুচ্ছেদ
২৪]
১১) আল্লাহ তায়ালার আকার সম্পর্কে
ইমাম আবু
হানীফা রহিমাহুল্লাহ
বলেনঃ “তাঁর
(আল্লাহর) হাত, মুখমন্ডল এবং নফস
রয়েছে। যেমনভাবে
পবিত্র কুরআনে
আল্লাহ তায়ালা
উল্লেখ করেছেন।
কুরআনে আল্লাহ
তাঁর মুখমন্ডল,
হাত ও
নফসের যে
কথা উল্লেখ
করেছেন সেগুলো
তাঁর গুণ।
কিন্তু কারো
সাথে সেগুলোর
সাদৃশ্য নেই।
আর একথা
বলা যাবে
না যে,
তাঁর হাত
অর্থ তাঁর
কুদরত বা
নিয়ামত। কেননা
এতে আল্লাহর
গুণকে বাতিল
সাব্যস্ত করা
হয়। আর
এটা ক্বাদারিয়া
ও মু’তাযিলাদের মত।
বরং তাঁর
হাত তাঁর
গুণ, কারো
হাতের সাথে
সাদৃশ্য ব্যতীত।
আর তাঁর
রাগ ও
সন্তুষ্টি কারো রাগ ও সন্তুষ্টির
সাথে সাদৃশ্য
ব্যতীত আল্লাহর
দুটি সিফাত”। [আল ফিকহুল আকবার, পৃষ্ঠা
৩০২]
১২) ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ
আরো বলেনঃ
“আল্লাহর সত্তার
ব্যাপারে কারো
কথা বলা
উচিত হবে
না। বরং
তাঁর সিফাতকে
ঐভাবে বর্ণনা
করতে হবে
যেভাবে তিনি
নিজের জন্য
বর্ণনা করেছেন
এবং আল্লাহর
ব্যাপারে নিজের
পক্ষ থেকে
কোন কিছু
বানিয়ে বাড়িয়ে
বলা যাবে
না। কেননা
তিনি হচ্ছেন
বারাকাতময় সবার ঊর্ধ্বে বিশ্ব জাহানের
প্রতিপালক”। [শরহে
আক্বীদাহ আত
ত্বহাবী, ২/৪৭২৭, তাহক্বীকঃ
ড. তুরকী;
জালাউল আইমাইন,
পৃষ্ঠা ৩৬(তথ্য সূত্র মিডিয়া ডট কম)
সতর্ক বার্তাঃআল্লাহু তায়ালার গুন বা সিফাত সৃষ্টি জগতের কোনোটির সাথে তুলনা করা যাবে না।করলে সে কুফরি করবে অর্থ্যাত সে কাফের হয়ে যাবে।আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহুর গুন আল্লাহু ভালো জানেন।এ নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করবো না।
সতর্ক বার্তাঃআল্লাহু তায়ালার গুন বা সিফাত সৃষ্টি জগতের কোনোটির সাথে তুলনা করা যাবে না।করলে সে কুফরি করবে অর্থ্যাত সে কাফের হয়ে যাবে।আমাদের মনে রাখতে হবে আল্লাহুর গুন আল্লাহু ভালো জানেন।এ নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করবো না।
এখন বিস্তারিত আলোচনা দেখুন,,,,,
وَ قَالَتِ الۡیَہُوۡدُ یَدُ اللّٰہِ مَغۡلُوۡلَۃٌ ؕ غُلَّتۡ اَیۡدِیۡہِمۡ وَ لُعِنُوۡا بِمَا
قَالُوۡا ۘ بَلۡ
یَدٰہُ مَبۡسُوۡطَتٰنِ ۙ
یُنۡفِقُ کَیۡفَ یَشَآءُ ؕ وَ لَیَزِیۡدَنَّ کَثِیۡرًا مِّنۡہُمۡ مَّاۤ
اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ
رَّبِّکَ طُغۡیَانًا وَّ
کُفۡرًا ؕ وَ
اَلۡقَیۡنَا بَیۡنَہُمُ الۡعَدَاوَۃَ وَ الۡبَغۡضَآءَ اِلٰی
یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ ؕ
کُلَّمَاۤ اَوۡقَدُوۡا نَارًا
لِّلۡحَرۡبِ اَطۡفَاَہَا اللّٰہُ ۙ وَ یَسۡعَوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ فَسَادًا ؕ وَ اللّٰہُ لَا یُحِبُّ الۡمُفۡسِدِیۡنَ ﴿۶۴
﴾আর ইয়াহুদীরা বলে, ‘আল্লাহর হাত [১] রুদ্ধ’ [২]। তাদের হাতই রুদ্ধ করা
হয়েছে এবং তারা যা বলে সে জন্য তারা অভিশপ্ত [৩], বরং আল্লাহর উভয় হাতই প্রসারিত
[৪]; যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করেন। আর আপনার রব-এর কাছ থেকে যা আপনার প্রতি নাযিল
করা হয়েছে, তা অবশ্যই তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফরী বৃদ্ধি করবে। আর আমরা তাদের
মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঢেলে দিয়েছি [৫]। যখনই তারা
যুদ্ধের আগুন জ্বালায় তখনই আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন এবং তারা দুনিয়ায় ফাসাদ করে
বেড়ায়; আর আল্লাহ ফাসাদকারীদেরকে ভালবাসেন না। [১] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা'আলা কেয়ামতের দিন সমস্ত যমীনকে তার
মুঠিতে ধারণ করবেন। এবং সমস্ত আকাশকে স্বীয় ডান হাতে নিয়ে নিবেন। তারপর বলবেন,
আমিই একমাত্র বাদশাহ। [বুখারীঃ ৭৪১২] [২] হাত রুদ্ধ বলে অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে,
কৃপণতা বোঝানো হয়েছে। সূরা আল-ইসরার ২৯ নং আয়াতেও এ শব্দটি উক্ত অর্থে ব্যবহৃত
হয়েছে। সুতরাং এর অর্থ এটা নয় যে, আল্লাহর হাত বেঁধে রাখা হয়েছে। [ইবন কাসীর]
[৩] আয়াতে ইয়াহুদীদের একটি গুরুতর অপরাধ ও জঘন্য উক্তি বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ
হতভাগারা বলতে শুরু করেছে যে, আল্লাহ তা'আলা দরিদ্র হয়ে গেছেন৷ ঘটনা ছিল এই যে,
আল্লাহ তা'আলা মদীনার ইয়াহুদীদেরকে বিত্তশালী ও স্বাচ্ছন্দ্যশীল করেছিলেন, কিন্তু
যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় আগমন করেন এবং তাদের
কাছে ইসলামের আহবান পৌছে, তখন পাষণ্ডরা সামাজিক মোড়লি ও কুপ্রথার মাধ্যমে প্রাপ্ত
নযর-নিয়াযের খাতিরে এ আহবান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধাচরণ করে। ফলে তারা দরিদ্র হয়ে পড়ে। তখন মূর্খদের
মুখ থেকে এ জাতীয় কথাবার্তা বের হতে থাকে যে, আল্লাহর ধনভাণ্ডার ফুরিয়ে গেছে অথবা
আল্লাহ কৃপণ হয়ে গেছেন। অন্য বর্ণনায় এসেছে, এ কথাটি ইয়াহুদীরা ঐ সময় বলেছিল
যখন তারা দেখল যে, আল্লাহ্ তা'আলা কর্জে হাসানাহ দেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন। আর
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন কোন লোকের দিয়াতের ব্যাপারে
সবার থেকে সহযোগিতা নিচ্ছেন। তখন তারা বলতে লাগল যে, মুহাম্মাদের ইলাহ ফকীর হয়ে
গেছে। তখন আল্লাহ্ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেন। [কুরতুবী] এর উত্তরে আলোচ্য আয়াতে
বলা হয়েছে যে, হাত তো তাদেরই বাঁধা হবে এবং তাদের প্রতি অভিসম্পাত হবে, যার ফলে
আখেরাতে আযাব এবং দুনিয়াতে লাঞ্ছনা ও অবমাননা ভোগ করতে হবে। আল্লাহ তা’আলার হাত
সব সময়ই উন্মুক্ত রয়েছে। তাঁর দান চিরকাল অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে। কিন্তু তিনি
যেমন ধনবান ও বিত্তশালী, তেমনি সুবিজ্ঞও বটে। তিনি বিজ্ঞতা অনুযায়ী ব্যয় করেন;
যাকে উপযুক্ত মনে করেন, বিত্তশালী করে দেন এবং যার ঘাড়ে উপযুক্ত মনে করেন,
অভাব-অনটন ও দারিদ্র্য চাপিয়ে দেন। [সা’দী] [৪] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহর ডান হাত পরিপূর্ণ। খরচ করে তা কমানো যায় না। রাত-দিন
সবাইকে তিনি দিচ্ছেন। তোমরা কি দেখনা আসমান-যমীনের সৃষ্টিলগ্ন থেকে শুরু করে
অদ্যাবধি তিনি সবাইকে যা দিচ্ছেন, তাতে তাঁর ডান হাতে যা আছে তাঁর একটুও কমেনি। আর
তাঁর আরশ রয়েছে পানির উপর। তাঁর অপর হাতে রয়েছে গ্রহণ করা। উন্নতি এবং অবনতি
তারই হাতে। [বুখারীঃ ৭৪১৯, মুসলিমঃ ৯৯৩] [৫] এখানে বলা হয়েছে যে, এরা উদ্ধত জাতি।
আপনার প্রতি নাযিল করা কুরআনী নির্দেশাবলীর দ্বারা উপকৃত হওয়ার পরিবর্তে তাদের
কুফর ও অবিশ্বাস আরও কঠোর হয়ে যায়। আল্লাহ তা’আলা মুসলিমদেরকে তাদের অনিষ্ট থেকে
বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে তাদের বিভিন্ন দলের মধ্যে ঘোর মতানৈক্য সঞ্চারিত করে
দিয়েছেন। ফলে মুসলিমদের বিরুদ্ধে তারা প্রকাশ্য যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে সাহসী হয় না
এবং তাদের কোন চক্রান্তও সফল হয় না। [বাগবী, ইবন কাসীর, সাদী, ফাতহুল কাদীর]
وَ مَا قَدَرُوا اللّٰہَ حَقَّ قَدۡرِہٖ ٭ۖ وَ الۡاَرۡضُ جَمِیۡعًا قَبۡضَتُہٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَ السَّمٰوٰتُ مَطۡوِیّٰتٌۢ بِیَمِیۡنِہٖ ؕ سُبۡحٰنَہٗ وَ تَعٰلٰی عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ ﴿۶۷﴾
আর তারা
আল্লাহকে যথোচিত সম্মান করেনি অথচ কিয়ামতের দিন সমস্ত যমীন থাকবে তাঁর হাতের
মুঠিতে এবং আসমানসমূহ থাকবে ভাঁজ করা অবস্থায় তাঁর ডান হাতে [১]। পবিত্র ও মহান
তিনি, তারা যাদেরকে শরীক করে তিনি তাদের উর্ধ্বে। [১] কেয়ামতের দিন পৃথিবী
আল্লাহর মুঠোতে থাকবে এবং আকাশ ভাঁজ করা অবস্থায় তার ডান হাতে থাকবে। আলেমগণের
মতে আক্ষরিক অর্থেই এমনটি হবে। যার স্বরূপ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ জানে না। এ
আয়াতের ভাষ্য থেকে জানা যায় যে, আল্লাহ তা'আলার মুঠি” ও “ডান হাত’ আছে। এ দুটি
আল্লাহর অন্যান্য গুণাগুণের মতই দুটি গুণ। এগুলোতে বিশ্বাস করতে হবে। এগুলোর অর্থ
সাব্যস্ত করতে হবে। কিন্তু পরিচিত কোন অবয়ব দেয়া যাবে না। একথা মানতে হবে যে,
আল্লাহর সত্ত্বা যেমন আমরা না দেখে সাব্যস্ত করছি তেমনিভাবে তার গুণও নাদেখে
সাব্যস্ত করব। যমীন আল্লাহ তা'আলার হাতের মুঠিতে থাকা এবং আসমান ডান হাতে পেঁচানো
থাকার মাধ্যমে মহান আল্লাহর সঠিক মর্যাদা, বড়ত্ব ও সম্মান সম্পর্কে মানুষকে
কিছুটা ধারণা দেয়া হয়েছে। কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ (যারা আজ আল্লাহর বড়ত্ব ও
মহত্বের অনুমান করতেও অক্ষম) নিজ চোখে দেখতে পাবে। যমীন ও আসমান আল্লাহর হাতে একটা
নগণ্যতম বিল ও ছোট একটি রুমালের মত। হাদীসে এসেছে, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম মিম্বরে উঠে খুতবা দিচ্ছিলেন। খুতবা দানের সময় তিনি এ আয়াতটি
তিলাওয়াত করলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ তা'আলা আসমান ও যমীনকে (অর্থাৎ গ্রহসমূহকে)
তাঁর মুষ্ঠির মধ্যে নিয়ে এমনভাবে ঘুরাবেন যেমন শিশুরা বল ঘুরিয়ে থাকে। এবং
বলবেনঃ আমি একমাত্র আল্লাহ। আমি বাদশাহ। আমি সর্বশক্তিমান। আমি বড়ত্ব ও
শ্রেষ্ঠত্বের মালিক। কোথায় পৃথিবীর বাদশাহ? কোথায় শক্তিমানরা? কোথায় অহংকারীরা?
এভাবে বলতে বলতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনভাবে কাঁপতে থাকলেন যে,
তিনি মিম্বারসহ পড়ে না যান আমাদের সে ভয় হতে লাগলো।
[মুসলিম:২৭৮৮] অপর হাদীসে এসেছে, ইয়াহুদী এক আলেম
এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেন: হে মুহাম্মাদ! আমরা আমাদের
কিতাবে পাই যে, আল্লাহ তা’আলা আসমানসমূহকে এক আঙ্গুলো রাখবেন, যমীনসমূহকে অপর
আঙ্গুলো রাখবেন, গাছ-গাছালীকে এক আঙ্গুলে রাখবেন, পানি ও মাটিকে এক আঙ্গুলো রাখবেন
আর সমস্ত সৃষ্টিকে অপর আঙ্গুলে রাখবেন, তারপর বলবেন; আমিই বাদশাহ্! তখন রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ইয়াহুদী আলেমের বক্তব্যের সমর্থনে এমনভাবে
হাসলেন যে, তার মাড়ির দাঁত পর্যন্ত দেখা গিয়েছিল। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন। [বুখারী: ৪৮১১]
অন্য এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা যমীনকে মুষ্ঠিবদ্ধ করবেন। আর
আসমানসমূহকে ডানহাতে গুটিয়ে রাখবেন তারপর বলবেন; আমিই বাদশাহ! কোথায় দুনিয়ার
বাদশাহরা? [বুখারী: ৪৮:১২, মুসলিম: ২৭৮১]
অপর এক হাদীসে এসেছে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা
বলেন: আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল!
“কিয়ামতের দিন সমস্ত যমীন থাকবে তাঁর হাতের মুঠিতে এবং আসমানসমূহ থাকবে ভাঁজ করা
অবস্থায় তাঁর ডান হাতে।” সেদিন ঈমানদারগণ কোথায় থাকবে? তিনি বললেন: হে আয়েশা!
সিরাতের (পুলসিরাতের) উপরে থাকবে। [তিরমিয়ী: ৩২৪২]তাফসীর ড. মোহাম্মাদ আবু বকর যাকারিয়া
·
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী
(তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৯৭/ তাওহীদ (كتاب التوحيد)
হাদিস নম্বরঃ ৭৪৩৭
অধ্যায়ঃ ৯৭/ তাওহীদ (كتاب التوحيد)
হাদিস নম্বরঃ ৭৪৩৭
·
৯৭/২৪. আল্লাহর বাণীঃ কতক মুখ সেদিন উজ্জ্বল হবে। তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে। (সূরাহ আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/২২-২৩)
৯৭/২৪. আল্লাহর বাণীঃ কতক মুখ সেদিন উজ্জ্বল হবে। তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে। (সূরাহ আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/২২-২৩)
·
৭৪৩৭. আবূ হুরাইরাহ
(রাঃ) হতে
বর্ণিত। তিনি
বলেন, লোকেরা
(সহাবাগণ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর
রাসূল! ক্বিয়ামাতের
দিন আমরা
কি আমাদের
রববকে দেখতে
পাব? রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের
কি পূর্ণিমার
রাতে চাঁদ
দেখতে অসুবিধা
হয়? সবাই
বলে উঠলেন,
না, হে
আল্লাহর রাসূল!
তিনি আবার
বললেনঃ মেঘহীন
আকাশে সূর্য
দেখতে তোমাদের
কি অসুবিধা
হয়? সবাই
বলে উঠলেন,
না, হে
আল্লাহর রাসূল।
·
তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেনঃ তোমরা
সেরকমই আল্লাহ্কে
দেখতে পাবে।
ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ লোকদেরকে একত্রিত
করে বলবেন,
যে যার
‘ইবাদাত করছিলে
সে যেন
তার অনুসরণ
করে। তারপর
যারা সূর্যের
‘ইবাদত করত,
সূর্যের অনুসরণ
করবে। যারা
চন্দ্রের ‘ইবাদাত করত, তারা চন্দ্রের
অনুসরণ করবে।
আর যারা
তাগুতদের পূজা
করত, তারা
তাদের অনুসরণ
করবে। বাকী
থাকবে এই
উম্মাত। এদের
মধ্যে এদের
সুপারিশকারীরাও থাকবে অথবা রাবী বলেছেন,
মুনাফিকরাও থাকবে।
·
এখানে বর্ণনাকারী ইবরাহীম
(রহ.) সন্দেহ
পোষণ করেছেন।
তারপর আল্লাহ্
তাদের কাছে
এসে বলবেনঃ
আমিই তোমাদের
রব। তখন
তারা বলবে,
যতক্ষণ আমাদের
রব আমাদের
কাছে না
আসবেন, ততক্ষণ
আমরা এ
স্থানেই থাকব।
আমাদের রব
যখন আসবেন,
তখন আমরা
তাকে চিনতে
পারব। তারপর
আল্লাহ্ এমন
এক সুরতে
তাদের কাছে
আসবেন, যে
সুরতে তারা
তাঁকে চিনবে।
তখন তিনি
বলবেন, তোমাদের
রব আমিই।
তারা বলে
উঠবে হাঁ,
আপনিই আমাদের
রব। তারপর
তারা তাঁর
অনুসরণ করবে।
এরপর জাহান্নামের
উপর পুল
কায়িম করা
হবে। যারা
পুল পার
হবে, আমি
এবং আমার
উম্মাত তাদের
মধ্যে প্রথম
থাকব। সেদিন
একমাত্র রাসূলগণ
ব্যতীত আর
কেউই কথা
বলতে পারবে
না। আর
রাসূলগণেরও আবেদন হবে শুধু আল্লাহুম্মা
সাল্লিম, সাল্লিম
(আয় আল্লাহ্!
নিরাপদে রাখুন,
নিরাপদে রাখুন)। এবং জাহান্নামে সাদান-এর
কাঁটার মত
অাঁকড়া থাকবে।
তোমরা দেখেছ
কি সাদান-এর কাঁটা?
সহাবাগণ বললেন,
জী হ্যাঁ,
হে আল্লাহর
রাসূল।
·
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জাহান্নামের
সে কাঁটাগুলো
এ সাদান-এর কাঁটার
মত। হ্যাঁ,
তবে সেগুলো
যে কত
বড় হবে
তা একমাত্র
আল্লাহ্ই জানেন।
ওসব কাঁটা
মানুষকে তাদের
আমলের অনুপাতে
বিদ্ধ করবে।
কতিপয় মানুষ
থাকবে ঈমানদার,
তারা তাদের
আমলের কারণে
নিরাপদ থাকবে।
আর কেউ
কেউ তার
‘আমালের কারণে
ধ্বংস হবে।
কাউকে নিক্ষেপ
করা হবে,
আর কাউকে
প্রতিদান দেয়া
হবে। কিংবা
সেরকমই কিছু
রাবী বলেছেন।
তারপর (আল্লাহ্)
প্রকাশিত হবেন।
তিনি বান্দাদের
বিচার শেষ
করে যখন
আপন রহমতে
কতক জাহান্নামবাসীকে
বের করতে
চাইবেন, তখন
তিনি তাদের
মধ্যকার শির্ক
হতে মুক্তদেরকে
জাহান্নাম থেকে বের করে দেয়ার
জন্য ফেরেশ্তাদেরকে
আদেশ দেবেন।
তারাই হচ্ছে
ওসব বান্দা
যাদের উপর
আল্লাহ রহমত
করবেন, যারা
সাক্ষ্য দিয়েছে
যে, আল্লাহ্
ব্যতীত কোন
ইলাহ্ নেই।
সাজদাহর চিহ্ন
দ্বারা তাদেরকে
ফেরেশ্তারা চিনতে পারবেন। সাজদাহর চিহ্নগুলো
ছাড়া সে
সব আদাম
সন্তানের সারা
দেহ জাহান্নামের
আগুন ভসমীভূত
করে দেবে।
·
সাজদাহর চিহ্নগুলো জ্বালিয়ে
দেয়া আল্লাহ্
জাহান্নামের উপর হারাম করে দিয়েছেন।
অতঃপর তাদেরকে
আগুনে দগ্ধ
অবস্থায় জাহান্নাম
থেকে বের
করা হবে।
তাদের ওপর
ঢালা হবে
সঞ্জীবনীর পানি। এর ফলে নিম্নভাগ
থেকে তারা
এমনভাবে সজীব
হয়ে ওঠবে,
প্লাবনের পানিতে
বীজ মাটি
থেকে যেভাবে
গজিয়ে ওঠে।
এরপর আল্লাহ্
বান্দাদের বিচার কাজ শেষ করবেন।
এদের মধ্য
থেকে একজন
বাকী থেকে
যাবে, যে
জাহান্নামের দিকে মুখ করে থাকবে।
জাহান্নামীদের মধ্যে এই হচ্চে সর্বশেষ
জান্নাতে প্রবেশকারী।
তখন সে
বলবে, হে
আমার রব!
আমার চেহারাটা
জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দাও।
কেননা, জাহান্নামের
(দুর্গন্ধযুক্ত) হাওয়া আমাকে অস্থির করে
তুলছে এবং
এর শিখা
আমাকে জ্বালাচ্ছে।
·
তখন সে আল্লাহর
ইচ্ছা মুতাবিক
তাঁর কাছে
প্রার্থনা করবে। তারপর আল্লাহ্ বলবেন,
তোমার প্রার্থিত
বস্ত্ত যদি
তোমাকে দেয়া
হয়, তবে
অন্য কিছু
চাইবে না
তো? তখন
সে বলবে,
না, তোমার
ইয্যতের শপথ
করে বলছি,
তা ব্যতীত
আমি আর
কিছু চাইব
না। তখন
সে আল্লাহর
ইচ্ছা মোতাবেক
তাঁকে বহু
অঙ্গীকার ও‘য়াদা দেবে।
ফলে আল্লাহ্
তার চেহারা
জাহান্নাম থেকে ফিরিয়ে দেবেন। যখন
সে জান্নাতের
দিকে মুখ
ফিরাবে এবং
জান্নাতকে দেখবে, সে আল্লাহর ইচ্ছা
মোতাবেক যতক্ষণ
চুপ থাকার
চুপ থেকে
বলবে, হে
আমার রব!
আমাকে জান্নাতের
দ্বার পর্যন্ত
এগিয়ে দাও।
আল্লাহ্ তখন
তাকে বলবেন,
তুমি কি
বহু ও‘য়াদা ও
অঙ্গীকার দাওনি
যে তোমাকে
যা দেয়া
হবে, তা
ব্যতীত আর
কিছুই তুমি
কখনো চাইবে
না।
·
সর্বনাশ তোমার, হে
আদাম সন্তান!
কতই না
ও‘য়াদা
ভঙ্গকারী তুমি।
তখন সে
বলবে, হে
আমার রব
সে আল্লাহকে
ডাকতে থাকবে।
আল্লাহ্ তখন
তাকে বলবেন,
আচ্ছা, এটি
যদি তোমাকে
দেয়া হয়,
আর কিছু
তো চাইবে
না? সে
বলবে, তোমার
ইয্যতের কসম!
সেটি ব্যতীত
আমি আর
কিছুই চাইব
না। তারপর
আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী
ও‘য়াদা
ও অঙ্গীকার
দেবে আর
আল্লাহ্ তাকে
জান্নাতের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিবেন।
যখন সে
জান্নাতের দরজার কাছে দাঁড়াবে, তখন
তার জন্য
জান্নাত উন্মুক্ত
হয়ে যাবে,
তখন সে
এর মধ্যকার
আরাম আয়েশ
ও ভোগ
বিলাসের প্রাচুর্য
দেখতে পাবে।
তখন সে
আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী
চুপ থেকে
পরে বলবে,
হে আমার
রব! আমাকে
জান্নাতে প্রবেশ
করিয়ে দিন।
আল্লাহ্ বলবেনঃ
তুমি কি
আমাকে এই
ও‘য়াদা
ও অঙ্গীকার
দাওনি যে,
তোমাকে যা
দেয়া হবে,
সেটা ব্যতীত
আর কিছুর
প্রার্থনা করবে না?
·
সর্বনাশ তোমার! হে
বানী আদাম!
কতই না
ও‘য়াদা
ভঙ্গকারী তুমি।
তখন সে
বলবে, হে
আমার রব!
আমি তোমার
সৃষ্টিকুলের মধ্যে নিকৃষ্টতর হতে চাই
না। তখন
সে আল্লাহর
কাছে প্রার্থনা
করতে থাকবে।
অবশেষে আল্লাহ্
এতে হেসে
দেবেন। আল্লাহ্
তার অবস্থার
জন্য হেসে
তাকে নির্দেশ
দেবেন, তুমি
জান্নাতে প্রবেশ
কর। সে
জান্নাতে প্রবেশ
করলে আল্লাহ্
তাকে বলবেনঃ
এবার তুমি
চাও। সে
তখন রবের
কাছে চাইবে
এবং আকাঙ্ক্ষা
জানাবে। সর্বশেষে
আল্লাহ্ নিজে
তাকে স্মরণ
করিয়ে দিয়ে
বলবেন, এটা,
ওটা চাও।
এতে তার
আবেদন-আকাঙ্ক্ষা
শেষ হলে
আল্লাহ বলবেনঃ
তোমাকে ওগুলো
দেয়া হল,
সঙ্গে সঙ্গে
সে পরিমাণ
আরো দেয়া
হল। [৮০৬]
(আধুনিক প্রকাশনী-
৬৯২০, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন- ৬৯৩১)
·
Narrated 'Ata' bin Yazid Al-Laithi: On the
authority of Abu Huraira: The people said, "O Allah's Messenger (ﷺ)! Shall
we see our Lord on the Day of Resurrection?" The Prophet (ﷺ) said,
"Do you have any difficulty in seeing the moon on a full moon night?"
They said, "No, O Allah's Messenger (ﷺ)." He said, "Do you have
any difficulty in seeing the sun when there are no clouds?" They said,
"No, O Allah's Messenger (ﷺ)." He said, "So you will see Him,
like that. Allah will gather all the people on the Day of Resurrection, and
say, 'Whoever worshipped something (in the world) should follow (that thing),'
so, whoever worshipped the sun will follow the sun, and whoever worshiped the
moon will follow the moon, and whoever used to worship certain (other false)
deities, he will follow those deities. And there will remain only this nation
with its good people (or its hypocrites). (The sub-narrator, Ibrahim is in
doubt.) Allah will come to them and say, 'I am your Lord.' They will (deny Him
and) say, 'We will stay here till our Lord comes, for when our Lord comes, we
will recognize Him.' So Allah will come to them in His appearance which they
know, and will say, 'I am your Lord.' They will say, 'You are our Lord,' so
they will follow Him. Then a bridge will be laid across Hell (Fire)' I and my
followers will be the first ones to go across it and none will speak on that
Day except the Apostles. And the invocation of the Apostles on that Day will
be, 'O Allah, save! Save!' In Hell (or over The Bridge) there will be hooks
like the thorns of As-Sa'dan (thorny plant). Have you seen As-Sa'dan? "
They replied, "Yes, O Allah's Messenger (ﷺ)!" He said, "So those
hooks look like the thorns of As-Sa'dan, but none knows how big they are except
Allah. Those hooks will snap the people away according to their deeds. Some of
the people will stay in Hell (be destroyed) because of their (evil) deeds, and
some will be cut or torn by the hooks (and fall into Hell) and some will be
punished and then relieved. When Allah has finished His Judgments among the
people, He will take whomever He will out of Hell through His Mercy. He will
then order the angels to take out of the Fire all those who used to worship
none but Allah from among those whom Allah wanted to be merciful to and those
who testified (in the world) that none has the right to be worshipped but
Allah. The angels will recognize them in the Fire by the marks of prostration
(on their foreheads), for the Fire will eat up all the human body except the
mark caused by prostration as Allah has forbidden the Fire to eat the mark of
prostration. They will come out of the (Hell) Fire, completely burnt and then
the water of life will be poured over them and they will grow under it as does
a seed that comes in the mud of the torrent. Then Allah will finish the
judgments among the people, and there will remain one man facing the (Hell)
Fire and he will be the last person among the people of Hell to enter Paradise.
He will say, 'O my Lord! Please turn my face away from the fire because its air
has hurt me and its severe heat has burnt me.' So he will invoke Allah in the
way Allah will wish him to invoke, and then Allah will say to him, 'If I grant
you that, will you then ask for anything else?' He will reply, 'No, by Your Power,
(Honor) I will not ask You for anything else.' He will give his Lord whatever
promises and covenants Allah will demand. So Allah will turn his face away from
Hell (Fire). When he will face Paradise and will see it, he will remain quiet
for as long as Allah will wish him to remain quiet, then he will say, 'O my
Lord! Bring me near to the gate of Paradise.' Allah will say to him, 'Didn't
you give your promises and covenants that you would never ask for anything more
than what you had been given? Woe on you, O Adam's son! How treacherous you
are!' He will say, 'O my lord,' and will keep on invoking Allah till He says to
him, 'If I give what you are asking, will you then ask for anything else?' He
will reply, 'No, by Your (Honor) Power, I will not ask for anything else.' Then
he will give covenants and promises to Allah and then Allah will bring him near
to the gate of Paradise. When he stands at the gate of Paradise, Paradise will
be opened and spread before him, and he will see its splendor and pleasures whereupon
he will remain quiet as long as Allah will wish him to remain quiet, and then
he will say, O my Lord! Admit me into Paradise.' Allah will say, 'Didn't you
give your covenants and promises that you would not ask for anything more than
what you had been given?' Allah will say, 'Woe on you, O Adam's son! How
treacherous you are! ' The man will say, 'O my Lord! Do not make me the most
miserable of Your creation,' and he will keep on invoking Allah till Allah will
laugh because of his sayings, and when Allah will laugh because of him, He will
say to him, 'Enter Paradise,' and when he will enter it, Allah will say to him,
'Wish for anything.' So he will ask his Lord, and he will wish for a great
number of things, for Allah Himself will remind him to wish for certain things
by saying, '(Wish for) so-and-so.' When there is nothing more to wish for,
Allah will say, 'This is for you, and its equal (is for you) as well."
بَاب قَوْلِ اللهِ تَعَالَى {وُجُوهٌ يَوْمَئِذٍ نَاضِرَةٌ إِلَى رَبِّهَا
نَاظِرَةٌ} عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ
سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّاسَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ
الْقِيَامَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ تُضَارُّونَ فِي
الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ فَهَلْ
تُضَارُّونَ فِي الشَّمْسِ لَيْسَ دُونَهَا سَحَابٌ قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللهِ
قَالَ فَإِنَّكُمْ تَرَوْنَهُ كَذَلِكَ يَجْمَعُ اللهُ النَّاسَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
فَيَقُولُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ شَيْئًا فَلْيَتْبَعْهُ فَيَتْبَعُ مَنْ كَانَ
يَعْبُدُ الشَّمْسَ الشَّمْسَ وَيَتْبَعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الْقَمَرَ الْقَمَرَ
وَيَتْبَعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الطَّوَاغِيتَ الطَّوَاغِيتَ وَتَبْقَى هَذِهِ
الْأُمَّةُ فِيهَا شَافِعُوهَا أَوْ مُنَافِقُوهَا شَكَّ إِبْرَاهِيمُ
فَيَأْتِيهِمْ اللهُ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ هَذَا مَكَانُنَا
حَتَّى يَأْتِيَنَا رَبُّنَا فَإِذَا جَاءَنَا رَبُّنَا عَرَفْنَاهُ فَيَأْتِيهِمْ
اللهُ فِي صُورَتِهِ الَّتِي يَعْرِفُونَ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ
أَنْتَ رَبُّنَا فَيَتْبَعُونَهُ وَيُضْرَبُ الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَيْ جَهَنَّمَ
فَأَكُونُ أَنَا وَأُمَّتِي أَوَّلَ مَنْ يُجِيزُهَا وَلاَ يَتَكَلَّمُ يَوْمَئِذٍ
إِلاَّ الرُّسُلُ وَدَعْوَى الرُّسُلِ يَوْمَئِذٍ اللهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ وَفِي
جَهَنَّمَ كَلاَلِيبُ مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ هَلْ رَأَيْتُمْ السَّعْدَانَ
قَالُوا نَعَمْ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ فَإِنَّهَا مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ
غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَعْلَمُ مَا قَدْرُ عِظَمِهَا إِلاَّ اللهُ تَخْطَفُ النَّاسَ
بِأَعْمَالِهِمْ فَمِنْهُمْ الْمُوبَقُ بَقِيَ بِعَمَلِهِ أَوْ الْمُوثَقُ
بِعَمَلِهِ وَمِنْهُمْ الْمُخَرْدَلُ أَوْ الْمُجَازَى أَوْ نَحْوُهُ ثُمَّ
يَتَجَلَّى حَتَّى إِذَا فَرَغَ اللهُ مِنْ الْقَضَاءِ بَيْنَ الْعِبَادِ
وَأَرَادَ أَنْ يُخْرِجَ بِرَحْمَتِهِ مَنْ أَرَادَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ أَمَرَ
الْمَلاَئِكَةَ أَنْ يُخْرِجُوا مِنْ النَّارِ مَنْ كَانَ لاَ يُشْرِكُ بِاللهِ
شَيْئًا مِمَّنْ أَرَادَ اللهُ أَنْ يَرْحَمَهُ مِمَّنْ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ
إِلاَّ اللهُ فَيَعْرِفُونَهُمْ فِي النَّارِ بِأَثَرِ السُّجُودِ تَأْكُلُ
النَّارُ ابْنَ آدَمَ إِلاَّ أَثَرَ السُّجُودِ حَرَّمَ اللهُ عَلَى النَّارِ أَنْ
تَأْكُلَ أَثَرَ السُّجُودِ فَيَخْرُجُونَ مِنْ النَّارِ قَدْ امْتُحِشُوا
فَيُصَبُّ عَلَيْهِمْ مَاءُ الْحَيَاةِ فَيَنْبُتُونَ تَحْتَهُ كَمَا تَنْبُتُ
الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ ثُمَّ يَفْرُغُ اللهُ مِنْ الْقَضَاءِ بَيْنَ
الْعِبَادِ وَيَبْقَى رَجُلٌ مِنْهُمْ مُقْبِلٌ بِوَجْهِهِ عَلَى النَّارِ هُوَ
آخِرُ أَهْلِ النَّارِ دُخُولاً الْجَنَّةَ فَيَقُولُ أَيْ رَبِّ اصْرِفْ وَجْهِي
عَنْ النَّارِ فَإِنَّهُ قَدْ قَشَبَنِي رِيحُهَا وَأَحْرَقَنِي ذَكَاؤُهَا
فَيَدْعُو اللهَ بِمَا شَاءَ أَنْ يَدْعُوَهُ ثُمَّ يَقُولُ اللهُ هَلْ عَسَيْتَ
إِنْ أَعْطَيْتُكَ ذَلِكَ أَنْ تَسْأَلَنِي غَيْرَهُ فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ
لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهُ وَيُعْطِي رَبَّهُ مِنْ عُهُودٍ وَمَوَاثِيقَ مَا شَاءَ
فَيَصْرِفُ اللهُ وَجْهَهُ عَنْ النَّارِ فَإِذَا أَقْبَلَ عَلَى الْجَنَّةِ
وَرَآهَا سَكَتَ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَسْكُتَ ثُمَّ يَقُولُ أَيْ رَبِّ
قَدِّمْنِي إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ فَيَقُولُ اللهُ لَهُ أَلَسْتَ قَدْ أَعْطَيْتَ
عُهُودَكَ وَمَوَاثِيقَكَ أَنْ لاَ تَسْأَلَنِي غَيْرَ الَّذِي أُعْطِيتَ أَبَدًا
وَيْلَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا أَغْدَرَكَ فَيَقُولُ أَيْ رَبِّ وَيَدْعُو اللهَ
حَتَّى يَقُولَ هَلْ عَسَيْتَ إِنْ أُعْطِيتَ ذَلِكَ أَنْ تَسْأَلَ غَيْرَهُ
فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهُ وَيُعْطِي مَا شَاءَ مِنْ
عُهُودٍ وَمَوَاثِيقَ فَيُقَدِّمُهُ إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ فَإِذَا قَامَ إِلَى
بَابِ الْجَنَّةِ انْفَهَقَتْ لَهُ الْجَنَّةُ فَرَأَى مَا فِيهَا مِنْ
الْحَبْرَةِ وَالسُّرُورِ فَيَسْكُتُ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَسْكُتَ ثُمَّ يَقُولُ
أَيْ رَبِّ أَدْخِلْنِي الْجَنَّةَ فَيَقُولُ اللهُ أَلَسْتَ قَدْ أَعْطَيْتَ
عُهُودَكَ وَمَوَاثِيقَكَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ غَيْرَ مَا أُعْطِيتَ فَيَقُولُ
وَيْلَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا أَغْدَرَكَ فَيَقُولُ أَيْ رَبِّ لاَ أَكُونَنَّ
أَشْقَى خَلْقِكَ فَلاَ يَزَالُ يَدْعُو حَتَّى يَضْحَكَ اللهُ مِنْهُ فَإِذَا
ضَحِكَ مِنْهُ قَالَ لَهُ ادْخُلْ الْجَنَّةَ فَإِذَا دَخَلَهَا قَالَ اللهُ لَهُ
تَمَنَّهْ فَسَأَلَ رَبَّهُ وَتَمَنَّى حَتَّى إِنَّ اللهَ لَيُذَكِّرُهُ يَقُولُ
كَذَا وَكَذَا حَتَّى انْقَطَعَتْ بِهِ الأَمَانِيُّ قَالَ اللهُ ذَلِكَ لَكَ
وَمِثْلُهُ مَعَهُ
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) অধ্যায়ঃ ৬৫/ কুরআন মাজীদের তাফসীর (كتاب التفسير) হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৯ ৬৫/৬৮/২. আল্লাহর বাণীঃ পায়ের গোছা পর্যন্ত উন্মুক্ত করার দিনের কথা স্মরণ কর। (সূরাহ আল-ক্বলাম ৬৮/৪২) ৪৯১৯.
আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, আমাদের প্রতিপালক যখন তাঁর পায়ের গোড়ালির জ্যোতি বিকীর্ণ করবেন, তখন ঈমানদার নারী ও পুরুষ সবাই তাকে সাজ্দাহ করবে। কিন্তু যারা দুনিয়াতে লোক দেখানো ও প্রচারের জন্য সাজ্দাহ করত, তারা কেবল বাকী থাকবে। তারা সাজদাহ করতে ইচ্ছে করলে তাদের পিঠ একখন্ড কাঠের ন্যায় শক্ত হয়ে যাবে। [২২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৫৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৫৫৪)
Narrated Abu Sa`id: I heard the Prophet (ﷺ) saying, "Allah will bring
forth the severest Hour, and then all the Believers, men and women, will
prostrate themselves before Him, but there will remain those who used to
prostrate in the world for showing off and for gaining good reputation. Such
people will try to prostrate (on the Day of Judgment) but their back swill be
as stiff as if it is one bone (a single vertebra). بَاب :{يَوْمَ يُكْشَفُ عَنْ
سَاقٍ}. . آدَمُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ خَالِدِ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ سَعِيْدِ
بْنِ أَبِيْ هِلَالٍ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ
أَبِيْ سَعِيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ يَكْشِفُ
رَبُّنَا عَنْ سَاقِهِ فَيَسْجُدُ لَهُ كُلُّ مُؤْمِنٍ وَمُؤْمِنَةٍ فَيَبْقَى كُلُّ
مَنْ كَانَ يَسْجُدُ فِي الدُّنْيَا رِيَاءً وَسُمْعَةً فَيَذْهَبُ لِيَسْجُدَ
فَيَعُوْدُ ظَهْرُهُ طَبَقًا وَاحِدًا.
গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ) অধ্যায়ঃ ৯৭/ তাওহীদ (كتاب التوحيد) হাদিস নম্বরঃ ৭৩৮৪ ৯৭/৭. আল্লাহর বাণীঃ তিনি পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়- (সূরাহ আল-হাশর ৫৯/২৪)। পবিত্র ও মহান তোমার প্রতিপালক, ইযযতের অধিকারী প্রতিপালক- (সূরা আস্ সাফফাত ৩৭/১৮০)। ইয্যত তা তো আল্লাহ্ এবং তাঁর রসূলেরই- (সূরাহ আল-মুনাফিকূন ৬৩/৮)। ৭৩৮৪. আনাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ লোকদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। খালীফা ও মুতামির (রহ.) আনাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জাহান্নামীদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হতে থাকবে। তখন জাহান্নাম বলতে থাকবে আরো বেশি আছে কি? আর শেষে আল্লাহ্ রাববুল আলামীন, তাঁর কদম জাহান্নামে রাখবেন। তখন এর এক অংশ অন্য অংশের সঙ্গে মিশে স্থির হতে থাকবে। আর বলবে আপনার ইয্যত ও করমের কসম! যথেষ্ট হয়েছে। জান্নাতের কিছু জায়গা শূন্য থাকবে। অবশেষে আল্লাহ্ সেই শূন্য জায়গার জন্য নতুন কিছু মাখলুক সৃষ্টি করবেন এবং জান্নাতের সেই খালি জায়গায় এদের বসতি করে দেবেন। [৪৮৪৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৮৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৮০)
Narrated Anas: The Prophet (ﷺ) said, "(The people will be thrown into Hell
( Fire) and it will keep on saying, 'Is there any more?' till the Lord of the
worlds puts His Foot over it, whereupon its different sides will come close to
each other, and it will say, 'Qad! Qad! (enough! enough!) By Your 'Izzat (Honor
and Power) and YOUR KARAM (Generosity)!' Paradise will remain spacious enough
to accommodate more people until Allah will create some more people and let
them dwell in the superfluous space of Paradise. " بَاب قَوْلِ اللهِ
تَعَالَى: {وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْحَكِيمُ} {سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ
عَمَّا يَصِفُونَ} { وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ} ابْنُ أَبِي الأَسْوَدِ
حَدَّثَنَا حَرَمِيٌّ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنْ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَزَالُ يُلْقَى فِي النَّارِ ح و قَالَ
لِي خَلِيفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ عَنْ
قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ وَعَنْ مُعْتَمِرٍ سَمِعْتُ أَبِي عَنْ قَتَادَةَ عَنْ
أَنَسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَزَالُ يُلْقَى فِيهَا
وَتَقُولُ هَلْ مِنْ مَزِيدٍ حَتَّى يَضَعَ فِيهَا رَبُّ الْعَالَمِينَ قَدَمَهُ
فَيَنْزَوِي بَعْضُهَا إِلَى بَعْضٍ ثُمَّ تَقُولُ قَدْ قَدْ بِعِزَّتِكَ
وَكَرَمِكَ وَلاَ تَزَالُ الْجَنَّةُ تَفْضُلُ حَتَّى يُنْشِئَ اللهُ لَهَا
خَلْقًا فَيُسْكِنَهُمْ فَضْلَ الْجَنَّةِ
وَّ
یَبۡقٰی وَجۡہُ رَبِّکَ ذُو الۡجَلٰلِ وَ الۡاِکۡرَامِ ﴿ۚ۲۷﴾ আর অবিনশ্বর শুধু আপনার রবের চেহারা [১], যিনি মহিমাময়, মহানুভব [২]; [১] এখানে (আরবি) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যা দ্বারা মহান আল্লাহ তায়ালার চেহারার সাথে সাথে তাঁর সত্তাকেও বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ তিনি অবিনশ্বর। তাঁর চেহারাও অবিনশ্বর। তিনি ব্যতীত আর যা কিছু রয়েছে সবই ধ্বংসশীল। এগুলোর মধ্যে চিরস্থায়ী হওয়ার যোগ্যতাই নেই। আরেক অর্থ এরূপ হতে পারে যে, কিয়ামতের দিন এগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে। কোন তফসীরবিদ (আরবি) এর তফসীর এরূপ করেছেন যে, সমগ্র সৃষ্ট জগতের মধ্যে একমাত্র সেই বস্তুই স্থায়ী; যা আল্লাহ তা'আলার দিকে আছে। এতে শামিল আছে আল্লাহ তা'আলার সত্তা এবং মানুষের সেইসব কর্ম ও অবস্থা; যা আল্লাহ তা'আলার সাথে সম্পর্কযুক্ত | [দেখুন, কুরতুবী] এর সারমর্ম এই যে, মানব, জিন ও ফেরেশতা যে কাজ আল্লাহর জন্যে করে, সেই কাজও চিরস্থায়ী, অক্ষয়। তা কোন সময় ধ্বংস হবে না। পবিত্র কুরআনের অন্য আয়াত থেকেও এর সমর্থন পাওয়া যায়, যেখানে বলা হয়েছে, (আরবি) [সূরা আন-নাহল:৯৬] অর্থাৎ তোমাদের কাছে যা কিছু অর্থ সম্পদ শক্তি-সামৰ্থ্য, সুখ-কষ্ট ভালবাসা ও শক্ৰতা আছে, সব নিঃশেষ হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে আল্লাহর কাছে যা কিছু আছে, তা অবশিষ্ট থাকবে। আল্লাহর সাথে সম্পর্কযুক্ত মানুষের যেসব কর্ম ও অবস্থা আছে, সেগুলো ধ্বংস হবে না। [২] অর্থাৎ সেই রব মহিমামণ্ডিত এবং মহানুভবও। মহানুভব হওয়ার এক অর্থ যে, প্রকৃতপক্ষে সম্মান বলতে যা কিছু আছে, এ সবেরই যোগ্য একমাত্র তিনিই। আরেক অর্থ এই যে, তিনি মহিমাময় হওয়া সত্ত্বেও দুনিয়ার রাজা-বাদশাহ ও সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের মত নন। দেখুন, ইবন কাসীর] পরবতী আয়াত এই দ্বিতীয় অর্থের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়। আয়াতে বর্ণিত (আরবি) বাক্যটি আল্লাহ তা'আলার বিশেষ গুণাবলীর অন্যতম। এই শব্দগুলো উল্লেখ করে দোআ করার জন্য রাসূলের হাদীসে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “তোমরা “ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম” বলে দো'আ করো।” [তিরমিযী:৩৫২৫]
اَنِ
اقۡذِفِیۡہِ فِی التَّابُوۡتِ فَاقۡذِفِیۡہِ فِی الۡیَمِّ فَلۡیُلۡقِہِ الۡیَمُّ
بِالسَّاحِلِ یَاۡخُذۡہُ عَدُوٌّ لِّیۡ وَ عَدُوٌّ لَّہٗ ؕ وَ اَلۡقَیۡتُ عَلَیۡکَ
مَحَبَّۃً مِّنِّیۡ ۬ۚ وَ لِتُصۡنَعَ عَلٰی عَیۡنِیۡ ﴿ۘ۳۹﴾ ‘ যে, তুমি তাকে সিন্দুকের মধ্যে রাখ, তারপর তা দরিয়ায় ভাসিয়ে দাও [১] যাতে দরিয়া তাকে তীরে ঠেলে দেয় [২] , ফলে তাকে আমার শত্রু ো তার শত্রু নিয়ে যাবে [৩]। আর আমি আমার কাছ থেকে আপনার উপর ভালোবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম [৪], আর যাতে আপনি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হন [৫]। [১] ফির’আউন তাঁর সিপাহীদেরকে ইসরাইলী নবজাতক শিশুদেরকে হত্যা করার আদেশ দিয়ে রেখেছিল। তাই সিপাহীদের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য তার মাতাকে ওহীর মাধ্যমে বলা হল যে, তাকে একটি সিন্দুকে রেখে দরিয়ায় ভাসিয়ে দাও এবং তার ধ্বংসের আশংকা করো না। আমি তাকে হেফাজতে রাখব। এবং শেষে তোমার কাছেই ফিরিয়ে দেব। [ইবন কাসীর] [২] আয়াতে এক আদেশ মূসা আলাইহিস সালাম-এর মাতাকে দেয়া হয়েছে যে, এই শিশুকে সিন্দুকে পুরে দরিয়ায় ভাসিয়ে দাও। দ্বিতীয় আদেশ নির্দেশসূচকভাবে দরিয়াকে দেয়া হয়েছে যে, সে যেন এই সিন্দুককে তীরে নিক্ষেপ করে দেয়। [ফাতহুল কাদীর] [৩] অর্থাৎ এই সিন্দুক ও তন্মধ্যস্থিত শিশুকে সমুদ্র তীর থেকে এমন ব্যক্তি কুড়িয়ে নেবে, যে আমার ও মূসার উভয়ের শত্রু; অর্থাৎ ফির’আউন। [ফাতহুল কাদীর] [৪] এখানে (আরবি) শব্দটি আদরণীয় হওয়ার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ আমি নিজ কৃপা ও অনুগ্রহে আপনার অস্তিত্বের মধ্যে আদরণীয় হওয়ার গুণ নিহিত রেখেছি। ফলে যে-ই আপনাকে দেখত, সে-ই আদর করতে বাধ্য হত। ইবনে আব্বাস ও ইকরাম থেকে এরূপ তাফসীরই বর্ণিত হয়েছে। অন্য অর্থ হচ্ছে, আপনার শত্রুর কাছে আপনাকে আদরণীয় বানিয়ে দিয়েছি। [ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর] [৫] অর্থাৎ আল্লাহ্ তা'আলার ইচ্ছা ছিল যে, মূসা'আলাইহিস সালাম-এর উত্তম লালন পালন সরাসরি। আল্লাহর তত্ত্বাবধানে হবে। তাই মিসরের সর্ববৃহৎ ব্যক্তিত্ব বাদশাহ ফিরআউনের গৃহে এই উদ্দেশ্য এমনভাবে সাধন হয়েছে যে, সে জানত না নিজের হাতে নিজেরই দুশমনকে লালন-পালন করছে। তার খাবার ছিল বাদশাহর খাবার। এটাই ছিল তৈরী করার অর্থ [ইবন কাসীর]। এখানে (আরবি) দ্বারা এও অর্থ হবে যে, আমার চোখের সামনে। এতে আল্লাহর জন্য চোখ থাকার গুণ সাব্যস্ত হবে। বিভিন্ন সহীহ হাদীসেও আল্লাহ তা’আলার এ গুণটি প্রমানিত।[তাফসীর ড.
আবু বকর মোহাম্মাদ যাকারিয়া]
সতর্ক বার্তাঃআল্লাহু তায়ালার গুন বা সিফাত সৃষ্টি জগতের কোনোটির সাথে
তুলনা করা যাবে না।করলে সে কুফরি করবে অর্থ্যাত সে কাফের হয়ে যাবে।আমাদের
মনে রাখতে হবে আল্লাহুর গুন আল্লাহু ভালো জানেন।এ নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করবো
না।
Written by
Zianur Rahman