সর্বশেষ

2/recent/ticker-posts

আধুনিক সালাফি/আধুনিক আহলে হাদিস।

 আধুনিক সালাফি/আধুনিক আহলে হাদিস।


অনেক দিন ধরে ভাবছি, 'আধুনিক সালাফি/আহলে হাদিস' এই টার্ম উদ্ভাবন করা যায় কিনা। কেননা বর্তমান সালাফিদের মধ্যে আকিদা, মাসয়ালাগত ব্যাপারে মুসলিমদের আসল সালাফিদের সাথে অধিকাংশ মিল আছে। তবে আধুনিক  সালাফিদের মধ্যে ঝামেলা যেটা সেটা হলো রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে। আসল সালাফরা কখন মুসলিমদের বিরুদ্ধে যেতেন না, বিশেষ করে কাফের/তাগুত এবং মুসলিমদের মধ্যে লড়াই হলে, কিন্তু আধুনিক সালাফিদের মধ্যে থেকে আপনি পাবেন হা*মা*স, তা*লে*বা*ন, ইখ*ওয়া*নিদের বিরুদ্ধে অগ্রসর, কাফেরদের সাথে অগ্রসর। 


কারণ এবং লক্ষণ: 

১) আমেরিকা-সৌদি সম্পর্ক। 

আমেরিকা যেটা বলে সেটাকে একটু হলেও সৌদিকে ভাবতে হয়, আর সৌদি শাসক যেটা বলবে সেটার প্রভাব ঐ দেশের আলেমদের মধ্যে প্রতিফলিত হয়, যেটার ফলাফল তাদের ছাত্রদের মাঝে দেখতে পাই, পরে সেটা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বে।

২) সৌদি আলেমদের কাছে আমাদের রাজনৈতিক মাঠ সম্পর্কে সচেতনার অভাব যার ফলে সৌদির রাজনৈতিক ভাবধারায় অন্য দেশকে বিবেচনা করতে যায়, যেটা তাদের ছাত্রদের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে প্রচার হয়, ফলে দেখা যায় মুসলিম ভাইদেরকে জালেম শাসক কিংবা কাফেররা মারলেও ফতোয়া মুসলিমদের বিরুদ্ধে যায়। একটা কথা বলে রাখা ভালো সৌদি আলেমদের ইসলামী জ্ঞানের ব্যাপারে সন্দেহ করা মূর্খামি, এখানে রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়ে কথা হচ্ছে।

৩) সালাফি নামে নতুন নতুন ফতোয়ার আমদানি যেমন এটা সালাফদের মানহজ নয়, ঐটা সালামদের মানহজ নয় এভাবে বলা, সেক্ষেত্রে কুরআন-হাদিস থেকে দলীল দেয় না । কেমন হলো? কুরআন-হাদিস ছাড়া মানেন না অথচ এ গুলো কী? আবার যাকে তাকে ট্যাগ দেওয়া যে, সে সালাফি নয়, কারণ সে আধুনিক সালাফি আলেমদের সমালোচনা করেছে। আপনি যতই সব কিছুই সালাফদের মতো মানুন না কেনো একটু রাজনৈতিক ব্যাপারে বিপরীতে গেলেন তখন বলবে মানহজ ঠিক নেয়।

৪) সমালোচনা সহ্য করতে না পারা, যদিও এটি অধিকাংশ মানুষের মধ্যে আছে তবে আসল সালাফরা সমালোচনা সহ্য করতেন।

৫) আধুনিক খারেজী বলে নতুন টার্ম তৈরি এবং প্রচার করা। অথচ আমাদের ভাইদের মধ্যে খারেজিদের আকিদা নেয়। যেমন জাকির নায়েককে নিয়ে বলেছিল।

৬) বাংলাদেশেই দেখুন না, তারা মুসলিম ভাইদের বিরুদ্ধে যাওয়া এবং ক্ষতি করা। কীভাবে অবস্থান নিয়েছিল? 

যেমন: হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামদের বিরুদ্ধে যেটা তাগুত অনুসারীরা করতে পারিনি যেমন ক্ষতি এরা করেছিল। 

৭) হালকা-পাতলা সুবিধাবাদী। বিপদের ভয়ে দলীল দেওয়ার চেষ্টা করে যে 'বিপদ ডেকে আনা সালাফদের মানহজ নয়' কথা সত্য তবে আসল সালাফরা বিপদের মধ্যেই ছিলেন কিন্তু আধুনিক সালাফরা বিপদের মধ্যে পড়েনই না, আবার বিপদ তাদের পাশেই যায় না।

৮) সৌদি আদলে অন্য দেশের রাজনৈতিক অবস্থার ফতোয়া প্রদান করা।

৯) ছোট খাটো বিষয় নিয়ে মুসলিম ভাইদের সাথে ডিবেট তবে শাসক, কুফরি ঝুলিয়ে দিলে তার সাথে ডিবেট না।

১০) মুনাফেক কিংবা কাফের শাসকের আনুগত্যর নামে আসল সালাফদের থেকে বিচ্যুত হয়েছে আধুনিক সালাফিরা।

১১) মানহাজের তারাই দাবিদার ভাবা, অথচ তাদের কর্মকান্ড আসল সালাফদের মতো না। যেমন: শায়খ আহমাদুল্লাহকে মুনাফেক বলা কারণ তিনি নাকি মানহজ গোপনকারী, প্রফেসর মুখতার আহমেদকে গোল আলু মার্কা মানহজ বলা, আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার, আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাককেও ছাড় দেননি।

১২) এরা বিদাতিদের এতো পরিমাণ ঘৃণা করে যে তাদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানোকেও জায়েজ মনে করেন না, আধুনিক সালাফিরা। এটা কেমন হইল? আরে কাফের রাষ্ট্রে কিংবা তাগুত রাষ্ট্রে এমন ফতোয়া দিলে হয়? এটা খেলাফত থাকলে কিছুটা। 

১৩) জালিমকে নিয়ে নাচানাচি করবে অথচ কোনো সাধারণ মুসলিম ভাইয়ের সামান্য ভুল নিয়ে, তার বিরুদ্ধে কলম আর মুখ এক হয়ে যায়।

১৪) মনে রাখবেন বর্তমানে সব সালাফি আধুনিক সালাফি নয়, আসল সালাফি ও আছে।


দ্রষ্টব্য: উপরিক্ত বিষয় গুলো অন্য দলের মধ্যেও আছে শুধু তারা টার্ম গুলো পরিবর্তন করে যেমন কেও বলে তারাই আহলে হক, হাক্কানি, সঠিক দল ইত্যাদি ইত্যাদি। আজ যেহেতু সালাফিদের নিয়ে লিখলাম সেজন্য অন্যদের টানলাম না।

বিশেষ দ্রষ্টব্য:

আমি সালাফি আকিদা এবং মাসলাককে বেশি শক্তিশালী মনে করি তবে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আধুনিক সালাফিদের থেকে দূরে থাকি। আধুনিক সালাফিদের রাজনৈতিক অজ্ঞতার কারণে উপরিক্ত কথা গুলো লেখা, বাকি তাদের কাজ গুলো অসাধারণ এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য কল্যাণকর। তবে রাজনৈতিক বিষয়ে আরেকটু ভেবে চিন্তে ফতোয়া দেওয়া উচিত।

✍️

#ZianurRahman0

Post a Comment

0 Comments