#Campúsian-11
#আল_ফারিস-৭
#Qn: "শুধু ধর্ষনের সময় নিরব কেন দয়ালু স্রষ্টা?
স্রষ্টা যদি পরম দয়ালু-ই হন, তাহলে শিশু ধর্ষিত হলেও তিনি কেন নীরব থাকেন? তিনি কেন সেটা প্রতিরোধ করেন না? তিনি কি তা প্রতিরোধ করতে অক্ষম? আর যদি সক্ষম হন, তাহলে বাঁধা দেন না কেন?"
#Ans:
যদি বলি কেন আপনি ইউনিভার্সিটি/কলেজে পরীক্ষা দিতে যান??
- কারণ পরীক্ষার মাধ্যমে ভাল ছাত্র এবং খারাপ ছাত্রের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা যায়।
- গুড। ভালো ছাত্রদের পরীক্ষা ভালো লাগাটাই স্বাভাবিক। আচ্ছা সব পরীক্ষার হলেই কিছু না কিছু রুলস থাকে। জানেন ?
-যেমন।
- পরীক্ষার হলে দেখাদেখি করা যাবে না। অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। নকল করা যাবে না। পরীক্ষককে হুমকী দেয়া যাবে না ইত্যাদি।
- এগুলো তো পরীক্ষার্থীর জন্য পালনীয় রুলস। পরীক্ষকের কিছু রুলস থাকে। সেগুলো জান?
- হুম। পরীক্ষক কাউকে প্রশ্নের উত্তর বলে দিতে পারবেন না। অযথা কারো খাতা নিতে পারবেন না। ধূমপান করতে পারবে না ইত্যাদি।
.
- আচ্ছা । পরীক্ষকের সামনে যদি কোন পরীক্ষার্থী ভুল আনসার দেয় তাহলে তিনি কি সে পরীক্ষার্থীকে বাঁধাপ্রদান করতে পারবেন? তিনি কি তাকে বলতে পারবেন যে, তুমি কেন ভুল উত্তর লিখছো?
- না। অবশ্যই না।
- যদি নীতিবিরুদ্ধ কোন কথা পরীক্ষার্থী খাতায় লিখতে থাকে আর পরীক্ষক সেটা দেখেন; তবুও না?
- না। তবুও না।
- নীতিবিরুদ্ধ কথা খাতায় লিখার পরেও পরীক্ষার্থীকে বাঁধা না দেয়াটা কি পরীক্ষকের অন্যায় নয়?
- কেন? অন্যায় হবে কেন? এটাই তো পরীক্ষার রুলস। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে একজন পরীক্ষার্থীকে কয়েকঘণ্টা সময়ের জন্য স্বাধীনতা প্রদান করা হবে। এ সময়ের মধ্যে পরীক্ষার্থী খাতায় তার ইচ্ছানুযায়ী উত্তর লিখতে পারবে। এমনকি সে খাতায় ভুল কিংবা নীতিবিরুদ্ধ কথাও লিখতে পারবে। এজন্য পরীক্ষক তাকে বাঁধাপ্রদান করতে পারবে না। এমনকি তাকে সঠিক উত্তরটাও বলে দিতে পারবে না।
- তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, পরীক্ষার্থী ভুল উত্তর খাতায় লিখা সত্ত্বেও পরীক্ষকের বাঁধাপ্রদান করা কিংবা তাকে সঠিক উত্তর জানিয়ে দেয়াটা অন্যায়?
- হ্যাঁ। অবশ্যই অন্যায়।
- আচ্ছা । কোন ন্যায়নিষ্ঠ পরীক্ষক কি সে অন্যায় করতে পারে?
- না। কক্ষনো পারে না।
.
- তাহলে আমাদের স্রষ্টা যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায়বিচারক। তিনি কীভাবে এ অন্যায়টা করতে পারেন?
- মানে?
- কোরআন কারীমের সূরা মুলকের ১ ও ২নং আয়াতে স্রষ্টা আমাদেরকে লক্ষ্য করে বলেছেন, “মহামহিমান্বিত তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন- কে তোমাদের মধ্যে কর্মের দিক থেকে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল”।
এই আয়াতের মাধ্যমে আমরা কি বুঝতে পারি?
- কি?
- দুনিয়াটা আমাদের জন্য পরীক্ষার হল।
- পরীক্ষার হল?
- হুম। পরীক্ষার হল। যার পরীক্ষক হলেন স্বয়ং স্রষ্টা। আর এ পরীক্ষা শুরুর পূর্বে মহান স্রষ্টা আমাদেরকে প্রত্যেকটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর শিক্ষা দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি সে পরীক্ষার নীতিবিরুদ্ধ কাজগুলো কি কি সেগুলোও হাতে-কলমে নবীদের মাধ্যমে শিখিয়েছেন। আর এই পরীক্ষার টাইম কাউন্ট শুরু হয় আমাদের বালেগ হওয়ার পর থেকে। শেষ হয় মৃত্যুর ঘণ্টা বাজার আগ পর্যন্ত। এই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দুনিয়ার প্রত্যেকটি মানুষকে কর্মের স্বাধীনতা প্রদান করা হয়। চাইলে একজন পরীক্ষার্থী হিসেবে একজন মানুষ চাইলে ভালোকাজ করতে পারবে। আর নীতিবিরুদ্ধ কাজও করতে পারবে। কিন্তু তাকে কোনরূপ বাঁধা প্রদান করা হবে না। আর যদি বাঁধা প্রদান করা হয় তাহলে সেটা তোমার বক্তব্য অনুসারেই অন্যায়। কি অন্যায় নয়?
.
- স্রষ্টাকে কেবল তখনি খারাপ কাজে বাঁধা না দেয়ার জন্য দোষারোপ করা যেত যখন তিনি বিবেক-বুদ্ধি প্রদান ব্যতীত মানুষ সৃষ্টি করতেন এবং নীতিবিরুদ্ধ কাজ গুলোর শিক্ষা না দিয়েই পরীক্ষা শুরু করতেন। তিনি কি তা করেছেন?
- দুনিয়ার মধ্যে একমাত্র মানুষই সে সৃষ্টি যাকে স্রষ্টা বিবেক-বুদ্ধি প্রদান করেছেন। ভাল-মন্দ বুঝার মত ক্ষমতা প্রদান করেছেন। সাথে সাথে মন্দ কাজগুলো কি কি? তাও তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন। অবৈধ যৌনাচার সে মন্দ কাজগুলোর একটি।
মহান আল্লাহ সূরা ইসরার ৩২ নাম্বার আয়াতে বলেছেন, “আর তোমরা ব্যভিচারের ধারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয়ই তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ”।
সূরা নিসার ২৪ নাম্বার আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ বিবাহ ব্যতীত অবৈধ পন্থায় যৌনাচারে লিপ্ত হওয়াকে হারাম ঘোষণা করেছেন।।
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “ব্যভিচারী ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত থাকা অবস্থায় মুমিন থাকে না, চুরি করার সময় চোরও ঈমানদার থাকে না, মদ্যপায়ীও মদ্যপান করার সময় মুমিন থাকে না”।
এছাড়া কোরআন কারীমের বিভিন্ন জায়গায় নীতিবিরুদ্ধ কাজের জন্য তিনি শাস্তির ভয় দেখিয়েছেন। যারা নীতিবিরুদ্ধ কাজ করবে তাদের দগ্ধ আগুনে জ্বলতে হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। নীতিবিরুদ্ধ কর্মকারীরা পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিন তার অণুগ্রহ পাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, কোথাও যদি কোন অন্যায় হয় আর শক্তি থাকা সত্ত্বেও যদি আপনি সেটা প্রতিরোধ না করেন, তাহলে ইসলাম সেটাকেও অন্যায় বলে ঘোষণা করেছে।
আমাদের নবীজী(ﷺ) বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ যদি কোন পাপ কাজ সংঘটিত হতে দেখে, সে যেন তা হাত দিয়ে (শক্তি দ্বারা) বন্ধ করে দেয়। যদি সে এতে সমর্থ না হয়, তবে সে যেন মুখের (কথার) সাহায্যে (জনমত গঠন করে) তা বন্ধ করে দেয়। যদি সে এই শক্তিটুকুও না রাখে, তবে যেন অন্তরের সাহায্যে (সুপরিকল্পিতভাবে) তা বন্ধ করার চেষ্টা করে। আর এটা হলো ঈমানের দুর্বলতম (বা নিম্নতম) স্তর; অর্থ্যাৎ এর নীচে ঈমানের আর কোন স্তর নেই”।
সৃষ্টি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হল অন্যায়কে প্রতিরোধ করা। এ দায়িত্ব স্রষ্টার নয়।
যেহেতু দুনিয়াটা পরীক্ষার হল, তাই পরীক্ষক হিসেবে মহান স্রষ্টার দায়িত্ব হল মানুষকে একটি নির্দিষ্ট সময় অবধি কর্মের স্বাধীনতা প্রদান করা। মানুষের পরীক্ষা নেয়া। আর সে সময় অতিবাহিত হলে মানুষকে তার কর্ম হিসেবে ফলাফল প্রদান করা। বুঝতে পারছ আমি কি বলছি?
.
- তাহলে এখন বলুন, কোন ধর্ষক যদি শিশুকে ধর্ষণ করতে থাকে হয়, আর স্রষ্টা যদি সে কাজে বাঁধা প্রদান না করেন তাহলে সেটা কি অন্যায়? সেটা কি তার ক্ষমতার দূর্বলতা নির্দেশ করে? নাকি পরীক্ষক হিসেবে এটা তার সঠিক দায়িত্ব পালনের ইঙ্গিত বহন করে?
.
.
(এক ভাই প্রশ্ন করেছিলেন, “শিশু ধর্ষিত হলেও আল্লাহ কেন বাঁধা দেন না”? তার প্রশ্নের জবাবে এই পোষ্টটি লেখা হয়েছে।লেখাটি Jakaria Masud ভাইয়ের লেখা।কেউ চাইলে মূল লেখাটি দেখতে পারেন।
____________________
তথ্যসূত্রঃ
১) সূরা মুলকঃ ১-২ আয়াত।
২) সূরা ইসরাঃ ৩২ আয়াত।
৩) সূরা নিসাঃ ২৪ আয়াত।
৩) মুসলিম, আবুল হোসাইন ইবনুল হাজ্জাজ , আস-সহীহ, অধ্যায়ঃ ঈমান অধ্যায়, অনুচ্ছেদঃ গুনাহের দরুন ঈমানের ক্ষতি হয় পরিপূর্ণ মুমিন থাকে না, ১/১১০, ১১৬, ১১৭ ; (বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা, ১ম প্রকাশ, জুন, ১৯৯৯)।
৪) নাবাবী, মুহিউদ্দীন ইয়াহহিয়া ইবনু আশরাফ, রিয়াদুস সালিহীন, অধায়ঃ ন্যায় কাজের নির্দেশ প্রদান ও অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করা, হাদিস নংঃ ১৮৯ ; (হোসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, ২য় সংস্করণ, মে ২০১১ ইং)।
#আল_ফারিস-৭
#Qn: "শুধু ধর্ষনের সময় নিরব কেন দয়ালু স্রষ্টা?
স্রষ্টা যদি পরম দয়ালু-ই হন, তাহলে শিশু ধর্ষিত হলেও তিনি কেন নীরব থাকেন? তিনি কেন সেটা প্রতিরোধ করেন না? তিনি কি তা প্রতিরোধ করতে অক্ষম? আর যদি সক্ষম হন, তাহলে বাঁধা দেন না কেন?"
#Ans:
যদি বলি কেন আপনি ইউনিভার্সিটি/কলেজে পরীক্ষা দিতে যান??
- কারণ পরীক্ষার মাধ্যমে ভাল ছাত্র এবং খারাপ ছাত্রের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা যায়।
- গুড। ভালো ছাত্রদের পরীক্ষা ভালো লাগাটাই স্বাভাবিক। আচ্ছা সব পরীক্ষার হলেই কিছু না কিছু রুলস থাকে। জানেন ?
-যেমন।
- পরীক্ষার হলে দেখাদেখি করা যাবে না। অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। নকল করা যাবে না। পরীক্ষককে হুমকী দেয়া যাবে না ইত্যাদি।
- এগুলো তো পরীক্ষার্থীর জন্য পালনীয় রুলস। পরীক্ষকের কিছু রুলস থাকে। সেগুলো জান?
- হুম। পরীক্ষক কাউকে প্রশ্নের উত্তর বলে দিতে পারবেন না। অযথা কারো খাতা নিতে পারবেন না। ধূমপান করতে পারবে না ইত্যাদি।
.
- আচ্ছা । পরীক্ষকের সামনে যদি কোন পরীক্ষার্থী ভুল আনসার দেয় তাহলে তিনি কি সে পরীক্ষার্থীকে বাঁধাপ্রদান করতে পারবেন? তিনি কি তাকে বলতে পারবেন যে, তুমি কেন ভুল উত্তর লিখছো?
- না। অবশ্যই না।
- যদি নীতিবিরুদ্ধ কোন কথা পরীক্ষার্থী খাতায় লিখতে থাকে আর পরীক্ষক সেটা দেখেন; তবুও না?
- না। তবুও না।
- নীতিবিরুদ্ধ কথা খাতায় লিখার পরেও পরীক্ষার্থীকে বাঁধা না দেয়াটা কি পরীক্ষকের অন্যায় নয়?
- কেন? অন্যায় হবে কেন? এটাই তো পরীক্ষার রুলস। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে একজন পরীক্ষার্থীকে কয়েকঘণ্টা সময়ের জন্য স্বাধীনতা প্রদান করা হবে। এ সময়ের মধ্যে পরীক্ষার্থী খাতায় তার ইচ্ছানুযায়ী উত্তর লিখতে পারবে। এমনকি সে খাতায় ভুল কিংবা নীতিবিরুদ্ধ কথাও লিখতে পারবে। এজন্য পরীক্ষক তাকে বাঁধাপ্রদান করতে পারবে না। এমনকি তাকে সঠিক উত্তরটাও বলে দিতে পারবে না।
- তার মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন, পরীক্ষার্থী ভুল উত্তর খাতায় লিখা সত্ত্বেও পরীক্ষকের বাঁধাপ্রদান করা কিংবা তাকে সঠিক উত্তর জানিয়ে দেয়াটা অন্যায়?
- হ্যাঁ। অবশ্যই অন্যায়।
- আচ্ছা । কোন ন্যায়নিষ্ঠ পরীক্ষক কি সে অন্যায় করতে পারে?
- না। কক্ষনো পারে না।
.
- তাহলে আমাদের স্রষ্টা যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ন্যায়বিচারক। তিনি কীভাবে এ অন্যায়টা করতে পারেন?
- মানে?
- কোরআন কারীমের সূরা মুলকের ১ ও ২নং আয়াতে স্রষ্টা আমাদেরকে লক্ষ্য করে বলেছেন, “মহামহিমান্বিত তিনি যার হাতে সর্বময় কর্তৃত্ব। তিনি সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন, যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন- কে তোমাদের মধ্যে কর্মের দিক থেকে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল”।
এই আয়াতের মাধ্যমে আমরা কি বুঝতে পারি?
- কি?
- দুনিয়াটা আমাদের জন্য পরীক্ষার হল।
- পরীক্ষার হল?
- হুম। পরীক্ষার হল। যার পরীক্ষক হলেন স্বয়ং স্রষ্টা। আর এ পরীক্ষা শুরুর পূর্বে মহান স্রষ্টা আমাদেরকে প্রত্যেকটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর শিক্ষা দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি সে পরীক্ষার নীতিবিরুদ্ধ কাজগুলো কি কি সেগুলোও হাতে-কলমে নবীদের মাধ্যমে শিখিয়েছেন। আর এই পরীক্ষার টাইম কাউন্ট শুরু হয় আমাদের বালেগ হওয়ার পর থেকে। শেষ হয় মৃত্যুর ঘণ্টা বাজার আগ পর্যন্ত। এই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দুনিয়ার প্রত্যেকটি মানুষকে কর্মের স্বাধীনতা প্রদান করা হয়। চাইলে একজন পরীক্ষার্থী হিসেবে একজন মানুষ চাইলে ভালোকাজ করতে পারবে। আর নীতিবিরুদ্ধ কাজও করতে পারবে। কিন্তু তাকে কোনরূপ বাঁধা প্রদান করা হবে না। আর যদি বাঁধা প্রদান করা হয় তাহলে সেটা তোমার বক্তব্য অনুসারেই অন্যায়। কি অন্যায় নয়?
.
- স্রষ্টাকে কেবল তখনি খারাপ কাজে বাঁধা না দেয়ার জন্য দোষারোপ করা যেত যখন তিনি বিবেক-বুদ্ধি প্রদান ব্যতীত মানুষ সৃষ্টি করতেন এবং নীতিবিরুদ্ধ কাজ গুলোর শিক্ষা না দিয়েই পরীক্ষা শুরু করতেন। তিনি কি তা করেছেন?
- দুনিয়ার মধ্যে একমাত্র মানুষই সে সৃষ্টি যাকে স্রষ্টা বিবেক-বুদ্ধি প্রদান করেছেন। ভাল-মন্দ বুঝার মত ক্ষমতা প্রদান করেছেন। সাথে সাথে মন্দ কাজগুলো কি কি? তাও তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন। অবৈধ যৌনাচার সে মন্দ কাজগুলোর একটি।
মহান আল্লাহ সূরা ইসরার ৩২ নাম্বার আয়াতে বলেছেন, “আর তোমরা ব্যভিচারের ধারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয়ই তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ”।
সূরা নিসার ২৪ নাম্বার আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ বিবাহ ব্যতীত অবৈধ পন্থায় যৌনাচারে লিপ্ত হওয়াকে হারাম ঘোষণা করেছেন।।
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “ব্যভিচারী ব্যক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত থাকা অবস্থায় মুমিন থাকে না, চুরি করার সময় চোরও ঈমানদার থাকে না, মদ্যপায়ীও মদ্যপান করার সময় মুমিন থাকে না”।
এছাড়া কোরআন কারীমের বিভিন্ন জায়গায় নীতিবিরুদ্ধ কাজের জন্য তিনি শাস্তির ভয় দেখিয়েছেন। যারা নীতিবিরুদ্ধ কাজ করবে তাদের দগ্ধ আগুনে জ্বলতে হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। নীতিবিরুদ্ধ কর্মকারীরা পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিন তার অণুগ্রহ পাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, কোথাও যদি কোন অন্যায় হয় আর শক্তি থাকা সত্ত্বেও যদি আপনি সেটা প্রতিরোধ না করেন, তাহলে ইসলাম সেটাকেও অন্যায় বলে ঘোষণা করেছে।
আমাদের নবীজী(ﷺ) বলেছেনঃ “তোমাদের কেউ যদি কোন পাপ কাজ সংঘটিত হতে দেখে, সে যেন তা হাত দিয়ে (শক্তি দ্বারা) বন্ধ করে দেয়। যদি সে এতে সমর্থ না হয়, তবে সে যেন মুখের (কথার) সাহায্যে (জনমত গঠন করে) তা বন্ধ করে দেয়। যদি সে এই শক্তিটুকুও না রাখে, তবে যেন অন্তরের সাহায্যে (সুপরিকল্পিতভাবে) তা বন্ধ করার চেষ্টা করে। আর এটা হলো ঈমানের দুর্বলতম (বা নিম্নতম) স্তর; অর্থ্যাৎ এর নীচে ঈমানের আর কোন স্তর নেই”।
সৃষ্টি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হল অন্যায়কে প্রতিরোধ করা। এ দায়িত্ব স্রষ্টার নয়।
যেহেতু দুনিয়াটা পরীক্ষার হল, তাই পরীক্ষক হিসেবে মহান স্রষ্টার দায়িত্ব হল মানুষকে একটি নির্দিষ্ট সময় অবধি কর্মের স্বাধীনতা প্রদান করা। মানুষের পরীক্ষা নেয়া। আর সে সময় অতিবাহিত হলে মানুষকে তার কর্ম হিসেবে ফলাফল প্রদান করা। বুঝতে পারছ আমি কি বলছি?
.
- তাহলে এখন বলুন, কোন ধর্ষক যদি শিশুকে ধর্ষণ করতে থাকে হয়, আর স্রষ্টা যদি সে কাজে বাঁধা প্রদান না করেন তাহলে সেটা কি অন্যায়? সেটা কি তার ক্ষমতার দূর্বলতা নির্দেশ করে? নাকি পরীক্ষক হিসেবে এটা তার সঠিক দায়িত্ব পালনের ইঙ্গিত বহন করে?
.
.
(এক ভাই প্রশ্ন করেছিলেন, “শিশু ধর্ষিত হলেও আল্লাহ কেন বাঁধা দেন না”? তার প্রশ্নের জবাবে এই পোষ্টটি লেখা হয়েছে।লেখাটি Jakaria Masud ভাইয়ের লেখা।কেউ চাইলে মূল লেখাটি দেখতে পারেন।
____________________
তথ্যসূত্রঃ
১) সূরা মুলকঃ ১-২ আয়াত।
২) সূরা ইসরাঃ ৩২ আয়াত।
৩) সূরা নিসাঃ ২৪ আয়াত।
৩) মুসলিম, আবুল হোসাইন ইবনুল হাজ্জাজ , আস-সহীহ, অধ্যায়ঃ ঈমান অধ্যায়, অনুচ্ছেদঃ গুনাহের দরুন ঈমানের ক্ষতি হয় পরিপূর্ণ মুমিন থাকে না, ১/১১০, ১১৬, ১১৭ ; (বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, ঢাকা, ১ম প্রকাশ, জুন, ১৯৯৯)।
৪) নাবাবী, মুহিউদ্দীন ইয়াহহিয়া ইবনু আশরাফ, রিয়াদুস সালিহীন, অধায়ঃ ন্যায় কাজের নির্দেশ প্রদান ও অন্যায় কাজের প্রতিরোধ করা, হাদিস নংঃ ১৮৯ ; (হোসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, ২য় সংস্করণ, মে ২০১১ ইং)।