- আজকে আশ্রিত পিতার জন্মদিন
- বই "In Search of Religion" (ধর্মের সন্ধানে)
লেখকঃ
নীল
সম্পাদনাঃ
জিয়ানুর রহমান
পার্ট-২০
আমি বারবার
বিবর্তন হই। এই কারণে বারবার আমার পোস্ট গুলি দিতে হয়।
আজকে আশ্রিত পিতার
জন্মদিন, সেই সুবাদে
বাসায় আজকে ভালো ভালো
রান্নাবান্নার আয়োজন করা
হয়েছে। অনেক দিন ধরেই এ মুখে মাছ মাংসের স্বাদ নেই বললেই চলে। পিতার
জন্মদিন উপলক্ষে আজ কপালে মাছ মাংস জুটবে, এমনটা ভাবলেই যেন জিবে জল এসে পড়ে, অবশেষে
অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে খাবারের টেবিলে ভাত মাংস নিয়ে পিতা হাজির। অনেক
দিন পর খাবারের টেবিলে মাংস দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারলাম না। দ্রত
গিয়ে দুটি পেলেট ধুয়ে নিয়ে আসলাম একটি আমার জন্য অপর টি পিতার জন্য। পিতা
পেলেটে ভাত এবং মাংস বেরে দিল, শেষ কবে মাংস খেয়েছিলাম সেটাও মনে নেই, কিন্তু
সেদিনের মাংসের স্বাদ আর আজকের মাংসের স্বাদ সম্পূর্ণই ভিন্ন। অবশেষে পিতাকে
জিজ্ঞাসা করলাম মাছ নেই? উনি বললেন
না। শুধু মাংস আনা হয়েছে।
আমি পিতাকে বললাম, আমরা মানুষ
তো মাত্র দুজন, তাহলে এতো
মাংস না এনে একটি
বড় মাছ তো আনতে পারতে। পিতা বললো, মাংস তো আমি ক্রয় করে নিয়ে আসেনি। আমি আঁতকে উঠে বললাম
তাহলে? পিতা তখন
বললো রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম, দেখি কয়েকজন
মুচি একটি গরু থেকে চামড়া ছিলিয়ে নিচ্ছে, আমি সেখান থেকে মাংস
সংগ্রহ করে বাসায় নিয়ে আসলাম। আমি এই কথা শুনা মাত্রই চেচিয়ে উঠলাম মানে
কি? তাই বলে মরা
গরুর মাংস! ওয়া। তখন আশ্রিত পিতা বললো, দেখ মরা মাছ যদি
খাওয়া যেতে পারে তাহলে মরা গরুর মাংস কেন খাওয়া যাবে না? আর তাছাড়া আমি
হালাল-হারাম, বৈধ-অবৈধ, স্বর্গ-নরক, জান্নাত -
জাহান্নামের ভয়ে খাবার খাই না, আমার রুচিতে
যেটা ধরে আমি সেটাই খাওয়ার চেষ্টা করি, তার বাহিরে না।
আমি কিছু না বলে ওয়া ওয়া করতে করতে খাবারের টেবিল থেকে উঠে এক দৌড়ে ওয়াস
রুমে চলে গেলাম। শালা যা খেয়েছিলাম কিছুই পেটে রাখতে পারিনি, সব বাহির হয়ে
গেছে, পিতাকে এর
উপযুক্ত জবাব না দিলে হবে না, হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে আবারও খাবারের টেবিলে যেয়ে উপস্থিত হলাম। পিতা আমাকে দেখা মাত্রই বললো, রুচিসম্মত মনে না হলে
খাবারের দরকার নেই। কারণ ধর্ম গুলির মতো কোন বাধ্যকতা নেয়
যে খেতেই হবে কিংবা করতেই হবে।
আমি তখন মুচকি
হেসে পিতাকে বললাম, আচ্ছা পিতা
ছোটবেলায় আমি যখন তোমার অবাধ্য হতাম তখন তুমি আমাকে কি করতে? পিতা বললো
মারধর করতাম। আমি বললাম মারধর করতে কেন? পিতা তখন
বললো আর যেন তুই আমার অবাধ্য না হস। আমি তখন পিতাকে বললাম, আচ্ছা পিতা
আমাদের দেশে প্রশাসন রাখা হয়েছে কেন? পিতা তখন
বললো আরে বাবা প্রশাসন না
থাকলে দেশে অপরাধের সংখ্যা বেড়ে যাবে, প্রসাশন আছে বলেই কোন ব্যাক্তি
অপরাধ করার আগে চিন্তা ভাবনা কর। আচ্ছা পিতা তুমি যদি কাউকে খুন করতে চাও
তাহলে সর্বপ্রথম কি ভাবব? পিতা বললো, কোন
ব্যাক্তিকে খুন করার আগে আমার ফাঁসি হতে পারে এটা ভাবব। আমি তখন পিতাকে বললাম আচ্ছা পিতা ফাঁসির ভয়ে খুন করা
থেকে বিরত থাকা প্রসাশনের ভয়ে অপরাধ কমে যাওয়া, মারধরের ভয়ে অবাধ্য না
হওয়া এসব নিয়ে যদি তোমাদের চুলকানি না উঠে থাকে তাহলে স্বর্গ, নরক, জান্নাত, জাহান্নামের
ভয়ে যদি একটা মানুষ খারাপ কাজ কিংবা কুরুচি খাবার থেকে বিরত
থাকে তাহলে এটা নিয়ে তোমাদের চুলকানি কেন উঠ? পিতা মাথা একদম নিচু
করে ফেললো। পিতাকে বললাম চীন কে দেখ তারা ধর্ম গুলিকে বিলুপ্ত করে দিতে চেয়েছিল, নিজেদের
ইচ্ছা মতো জীবন পরিচালনা করতে চেয়েছিল, তাদের খাবারের মেনু
গুলি দেখ, তারা এতোটাই
বেপরোয়া হয়ে গিয়েছিল যে মানুষ পর্যন্ত খেতে দ্বিধা বোধ করেনি, যার পরিণাম
আজ সারা পৃথিবীর মানুষ দেখছে, যার ভয়াবহতা আজ
সারা পৃথিবী জুড়ে দেখা দিয়েছে, আর হ্যা স্থলভাগের সব প্রাণীই বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে
এবং কার্বণ ডাই অক্সাইড ত্যাগ করে, যখন কোনো প্রাণীকে
জবাই করা হয়, তখন তার
বিষাক্ত কার্বণ ডাই অক্সাইড রক্তের সাথে বের হয়ে যায়, কিন্তু যখন
ওই প্রাণীকে শ্বাসরোধ করে মারা হয় বা তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয় তখন ওইসব
প্রাণীর বিষাক্ত কার্বন ডাই
অক্সাইড ও রক্ত দেহের ভেতরে
মাংসের সাথে মিশে যায়, যা মানুষের
স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অন্যদিকে মাছ পানি
থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে, যা কার্বণ
ডাই অক্সাইড
মুক্ত, সুতরাং
স্বাভাবিকভাবে মাছের মৃত্যু হলেও তার ভেতর ক্ষতিকর কোন উপাদান
থাকে না, তাই মৃত মাছ
খাওয়া স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর নয়।
পিতা আমাকে বললো, তোর বলা শেষ
হয়েছে আমি এখন উঠব। আমি বললাম আমার আর কিছুই বলার নেই তবে সবার
উদ্দেশ্য করে আমি একটা কথা বলতে চাই আপনাদের কারো যদি নাস্তিক
বাবা-মা, কিংবা আত্নীয়
স্বজন, বন্ধুবান্ধব
থেকে থাকে তাহলে তাদের বাসায় খাবার আগে অবশ্যই খাবার টি সম্পর্কে জেনে নিবেন, কারণ সেই
খাবার টি কুকুর কিংবা
শুকুর, শিয়াল কিংবা
বিড়ালও হতে পারে, তাই অবশ্যই
অবশ্যই খাবার খাওয়ার আগে
সর্তক থাকবেন।