#Campúsian-20
#MSRM-3
#Qn: রাসুলুল্লাহ(ﷺ) যদি আল্লাহর নবী হতেন তাহলে বিষপ্রয়োগে কিভাবে মারা গেলেন!!কেন জিব্রাইলের মাধ্যমে ওহি আসলোনা??
#Ans: কখনো ভেবে দেখেছেন, মহান আল্লাহ কোন ফেরেশতাকে নবী হিসেবে না পাঠিয়ে কেন মানুষদের পাঠিয়েছেন? উত্তরটা খুব সহজ। যাতে করে আমরা সহজেই তাঁদেরকে অনুসরণ করতে পারি। নিজের জীবনটাকে তাঁদের মতো করে সাজাতে পারি। তাঁরা আমাদের মতোই মায়ের গর্ভ থেকে জন্মেছেন, বড় হয়েছেন, বিয়ে করেছেন, সন্তানের পিতা হয়েছেন। তারপর, আল্লাহর ফয়সালা অনুযায়ী মৃত্যুবরণ করেছেন।
.
সহীহ বুখারীসহ বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থের বর্ণনা অনুযায়ী এক ইহুদি মহিলার দেয়া বিষের প্রতিক্রিয়ায় মুহাম্মাদ(ﷺ) এর মৃত্যু হয়েছিল। একজন নবীকে কী করে কোন মানুষ হত্যা করতে পারে?
.
প্রথমে আমরা দেখে নিই কিভাবে আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীজি মুহাম্মাদ(ﷺ) এর মৃত্যু হয়েছিল।
.
وَقَالَ يُونُسُ عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ عُرْوَة: قَالَتْ عَائِشَةُ رضى الله عنها : "كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ : " يَا عَائِشَةُ! مَا أَزَالُ أَجِدُ أَلَمَ الطَّعَامِ الَّذِي أَكَلْتُ بِخَيْبَرَ، فَهَذَا أَوَانُ وَجَدْتُ انْقِطَاعَ أَبْهَرِي مِنْ ذَلِكَ السَّمِّ ".
অর্থঃ ইউনুস(র.) যুহরী ও ‘উরওয়াহ(র.) সুত্রে বলেন, আয়িশা(রা.) বলেছেন, নবী(ﷺ) যে রোগে ইন্তিকাল করেন সে সময় তিনি বলতেন, “হে ‘আয়িশা! আমি খাইবারে (বিষযুক্ত) খাবার খেয়েছিলাম আমি সর্বদা তার যন্ত্রণা অনুভব করছি । আর এখন মনে হচ্ছে বিষক্রিয়ার ফলে আমার শিরাগুলোকেটে ফেলা হচ্ছে। [1]
নবী মুহাম্মাদ(ﷺ) এর মৃত্যুর ব্যাপারে ইসলামবিরোধীদের অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যাক এগুলোর আদৌ কোন সত্যতা আছে কিনা।
.
এখানে ইসলামবিরোধীরা “নবী কিভাবে হয়” –এ ব্যাপারে নিজস্ব একটা স্ট্যান্ডার্ড দাঁড় করিয়ে দিয়েছে যেটা অনেক সরলপ্রাণ মুসলিম ধরতে পারেন না। “কী করে আল্লাহর কোন নবীকে বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা যেতে পারে?” – এই প্রশ্ন দ্বারা ইসলাম বিরোধীরা একটা তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে যেঃ কোন নবীই আল্লাহর পথে শহীদ হতে পারে না। অথচ এটা এমন একটা স্ট্যান্ডার্ড যার সাথে কুরআন ও বাইবেল কোন গ্রন্থই একমত না।[17]
#️⃣#️⃣ বাইবেল#️⃣#️⃣
যেমনঃ
১)যাকারিয়া(আ.) কে পাথর ছুড়ে হত্যা করে সহীদ করা হয়েছে।[২]
২)ঈষেবল যখন প্রভুর ভাববাদী(নবী/prophet)দের হত্যা করছিলেন, [৩]
৩)ইস্রায়েলের লোকরা চুক্তিভঙ্গ করে বেদী ধ্বংস করে ভাববাদী (নবী/prophet)দের হত্যা করেছে। [4,5]
আরো জানতে দেখুন।
মথি(Matthew) ১৪:৮-১২,
মথি(Matthew) ২৩:২৯-৩৭
বাইবেলের অনেক জায়গাতেই ইহুদিদের দ্বারা নবী হত্যা করার ব্যাপারে উল্লেখ রয়েছে। কাউকে হত্যা করা হলে সে নবী হতে পারে না, এই কথাকে সত্য ধরা হলে বাইবেলের অনেক নবীই মিথ্যা হয়ে যান!
.
#️⃣আল কুরআন#️⃣#️⃣
আল কুরআনও এ ব্যাপারে একমত যে—অতীতেও বহু নবীকে হত্যা করা হয়েছে। আল কুরআনে ইহুদিদের নবী হত্যা করার জন্য ভৎর্সনা করা হয়েছে।
.
১)“...বলে দাওঃ যদি তোমরা [ইহুদিরা] বিশ্বাসীই ছিলে, তবে তোমরা ইতিপূর্বে কেন আল্লাহর নবীদের হত্যা করেছিলে?” [8]
.
২)“ ...এমন হলো এ জন্য যে, তারা [ইহুদিরা] আল্লাহর বিধি বিধান মানতো না এবং নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করত। তার কারণ, তারা ছিল নাফরমান সীমালঙ্ঘণকারী।” [9]
.
নবী হলেই যে তাঁকে কেউ হত্যা করতে পারবে না—এ কথা প্রকৃতপক্ষে কোন জায়গায় বলা নেই। আমরা মুসলিম হিসাবে বিশ্বাস করি যে আল্লাহর অনেক নবীকেই যুগে যুগে জালিমরা হত্যা করেছে। সেইসব নবীরা আল্লাহর পথে প্রাণ দিয়েছেন; তাঁরা শহীদ হয়েছেন।
.
#️⃣#️⃣ বিষপানে মৃত্যু: নববী মোজেজা#️⃣#️⃣
গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার ইসলামবিরোধীরা এড়িয়ে যায় আর তা হচ্ছেঃ বিষ প্রয়োগ করার সাথে সাথে কিন্তু নবী(ﷺ) মারা যাননি। বরং তিনি মারা গিয়েছিলেন বিষ প্রয়োগের ঘটনার প্রায় চার বছর পর। [10]
তিনি মারা গিয়েছিলেন মক্কা বিজয়ের পরে, বিদায় হজের পরে, আরবের গোত্রগুলো দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করার পরে তথা তাঁর মিশন শেষ হবার পরে। বিষ প্রয়োগের ফলে অন্য সাহাবীর মৃত্যু ঘটে কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় নবী(ﷺ) সে সময়ে মারা যান না বরং তাঁর মিশন শেষ করার পরে মারা যান। এর দ্বারা বরং তাঁর নবুয়তের সত্যতা আরো বেশি করে প্রমাণিত হয়, সুবহানাল্লাহ। এটাই সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা.) এর অভিমত। তাঁর মতে - বিষ প্রয়োগ করার এত পরে এর ক্রিয়া করা নবী(ﷺ) এর একটি মুজিজা এবং আল্লাহ তা’আলা তার নবী(ﷺ)কে তাঁর দায়িত্ব সমাপ্ত করা পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং তাঁকে সম্মানিত করার জন্য শহীদের মর্যাদা দান করেছেন। [11]
.
#️⃣#️⃣ বিষপান: নবুওতী মোজেজা#️⃣#️⃣
বিষ প্রয়োগের সেই ঘটনার বিবরণ লক্ষ্য করলে তাঁর নবুয়তের সত্যতা আরো বেশি করে ফুটে ওঠে।
.
“খায়বারের অধিবাসী এক ইহুদি মহিলা বিষ মিশিয়ে একটা বকরী ভুনা করে তা রাসুলুল্লাহ(ﷺ)কে হাদিয়া দেয়। রাসুলুল্লাহ(ﷺ) একটি রান নিয়ে খাওয়া শুরু করলেন এবং তাঁর কতিপয় সাহাবীও তাঁর সঙ্গে খেতে লাগলেন।
কিছুক্ষণ পর রাসুলুল্লাহ(ﷺ) তাদেরকে বললেনঃ তোমরা হাত গুটিয়ে নাও।
অতঃপর রাসুলুল্লাহ(ﷺ) ঐ ইহুদি মহিলাকে লোক মারফত ডেকে এনে বললেন, “তুমি কি এ বকরীর সঙ্গে বিষ মিশিয়েছ?”
সে বলল, “আপনাকে কে সংবাদ দিয়েছে?”
তিনি বললেন, “আমার হাতের এই রান আমাকে সংবাদ দিয়েছে।”
সে বলল, “হ্যাঁ”।
তিনি বললেন, “এরূপ করার উদ্যেশ্য কী?”
সে বলল, “আমি ভেবেছি যদি তিনি সত্যিই নবী হন তাহলে বিষ তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি নবী না হন তবে আমরা তার থেকে ঝামেলামুক্ত হব।”
অতঃপর রাসুলুল্লাহ(ﷺ) তাকে কোন প্রকার শাস্তি না দিয়ে ক্ষমা করে দিলেন।
যে সব সাহাবী তাঁর সঙ্গে বকরীর গোশত খেয়েছেন তাদের কেউ কেউ মারা গেলেন [12] এবং রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বকরীর গোশত খাবার প্রতিক্রিয়া প্রতিহত করার জন্য তাঁর বাহুদ্বয়ের মাঝখানে রক্তমোক্ষণ (শিঙ্গা লাগানো / cupping) করালেন। ... ” [13]
.
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বিষযুক্ত বকরীর রানটি রাসুলুল্লাহ(ﷺ)কে বিষের ব্যাপারে অবহিত করেছিল – যা তাঁর একটি মুজিজা, সুবহানাল্লাহ। যে সব খ্রিষ্টান মিশনারী মুহাম্মাদ(ﷺ) এর নবুয়ত মিথ্যা প্রমান করার জন্য এই বিবরণ উল্লেখ করেন, তাদের জন্য এটা এক চপেটাঘাত। তাদের কী দুর্ভাগ্য যে, মুহাম্মাদ(ﷺ) এর নবুয়ত মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য তারা যে বিবরণ উল্লেখ করেন তাতেই তাঁর একটি মুজিজা(miracle) দেখা যাচ্ছে!
#️⃣#️⃣ কম বিষপান ও মোজেজা#️⃣#️⃣
কেউ কেউ বলতে চান যে--মুহাম্মাদ(ﷺ) বিষ প্রয়োগের চার বছর পর মারা গিয়েছেন এতে কোন অলৌকিকতা নেই কেননা তিনি খুব কম বিষ গ্রহণ করেছেন ফলে তাঁর তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয়নি বরং তাঁর স্লো পয়জনিং হয়েছিল।
এর জবাবে আমরা তাদের প্রশ্ন করব—তিনি কেন খুব কম বিষ গ্রহণ করেছেন?
.
এর উত্তর হবে—বিষযুক্ত বকরীর রানটি রাসুলুল্লাহ(ﷺ)কে বিষের ব্যাপারে অবহিত করেছিল; যার ফলে তিনি দ্রুত গোশত খাওয়া বন্ধ করে দেন এবং অন্যদেরকেও খাওয়া বন্ধ করতে বলেন। রানটি বিষের ব্যাপারে অবহিত করার আগে খুব সামান্য গোশতই তিনি খেয়েছিলেন।
কাজেই আমরা যদি বিবেচনা করি যে - মুহাম্মাদ(ﷺ) খুব কম বিষ গ্রহণ করেছেন ফলে তাঁর তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয়নি --- তবুও এর মাঝে তাঁর নবুয়তের সত্যতা নিহিত আছে। মুজিজার দ্বারা তিনি বকরীর রানের কাছ থেকে বিষের সংবাদ পেয়েছিলেন বলেই তো তিনি দ্রুত খাওয়া বন্ধ করেছিলেন এবং অন্যদেরকেও খাওয়া বন্ধ করতে বলেছিলেন।
.
#️⃣#️⃣ বিষ কেনো গ্রহন করলেন?#️⃣#️⃣
#Qn: সামান্য বিষটুকু বা কেন তিনি গ্রহণ করলেন? বকরীর রানটি কেন খাওয়া শুরুর আগেই তাঁকে বিষের ব্যাপারে অবহিত করল না?
#Ans: "এটাই আল্লাহর ফায়সালা ছিল যে তিনি তাঁর শেষ নবীকে শহীদের মর্যাদায় ভূষিত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী। এর দ্বারা শেষ নবী মুহাম্মাদ(ﷺ) এর মর্যাদা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে—তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসুল, সর্বশেষ নবী এবং একজন শহীদ।
সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা.) বলেনঃ “আমাকে যদি ৯ বার আল্লাহর নামে শপথ করতে হয় যে - আল্লাহর রাসুল(ﷺ)কে হত্যা করা হয়েছে, তবে তা আমার নিকট ১ বার শপথ করার চেয়ে প্রিয় হবে। কারণ আল্লাহ তাঁকে [মুহাম্মাদ(ﷺ)] একজন নবী বানিয়েছেন এবং একজন শহীদ বানিয়েছেন।” [14]
.
এমনকি ঐ বিষের প্রভাবে রাসুলুল্লাহ(ﷺ) যদি চার বছর পর মারা না গিয়ে ঘটনাস্থলেই তাৎক্ষণিকভাবে মারা যেতেন, তাহলেও সেটা তাঁর নবুয়তকে প্রশ্নবিদ্ধ করত না। আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে, নবীদেরকেও হত্যা করা যেতে পারে, অতীতে বহু নবী আল্লাহর পথে শহীদ হয়েছেন এ ব্যাপারে কুরআন ও বাইবেল উভয় গ্রন্থই একমত। সেই ইহুদি মহিলা বলেছিল যেঃ “আমি ভেবেছি যদি তিনি সত্যিই নবী হন তাহলে বিষ তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না”, অথচ এটা ছিল ঐ মহিলার নিজের বানানো নবুয়তের স্ট্যান্ডার্ড। তাদের নিজ কিতাবই সাক্ষ্য দেয় যে অতীতেও নবীদেরকে হত্যা করা হয়েছে। বিষের অথবা অন্য যে কোন কিছুর ভৌত গুণাগুণ অন্য সকল মানুষের মত নবীদের দেহেও ক্রিয়া করতে পারে – যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রক্ষা করেন, যত দিন ইচ্ছা বাঁচিয়ে রাখেন, যাকে ইচ্ছা শহীদের মর্যাদা দেন। ওহুদের যুদ্ধের কঠিন মুহূর্তে এক সময় গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যেঃ মুহাম্মাদ(ﷺ) নিহত হয়েছেন। কিন্তু এটা শুনেও সাহাবায়ে কিরাম(রা.)গণ রাসুল(ﷺ) এর নবুয়ত নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেননি।
.
একজন মুহাজির সাহাবী একজন আনসারী সাহাবীকে উহুদের যুদ্ধে দেখেন যে, তিনি আহত হয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছেন এবং রক্ত ও মাটিতে গড়াগড়ি যাচ্ছেন। তিনি উক্ত আনসারীকে বললেনঃ রাসুলুল্লাহ(ﷺ) যে শহীদ হয়েছেন তা কি আপনি জানেন?
তিনি উত্তরে বলেনঃ “যদি এ সংবাদ সত্য হয়ে থাকে তাহলে তিনি তাঁর কাজ করে গেছেন। এখন আপনারা সবাই আপনাদের দ্বীনের(ইসলামের) উপরে নিজের জীবন কুরবান করুন।” [15]
.
আরো একটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে যে, রাসুলুল্লাহ(ﷺ) লক্ষ্য করেছিলেন যে ইহুদিরা তাঁর নবুয়তে সন্দেহ পোষণ করছে। যে দিন তারা তাঁর খাবারে বিষ মিশিয়েছিল, সেদিন ঘটনাস্থলেই তিনি তাদের নিকট তাঁর নবুয়তের সত্যতা প্রমাণ করে এসেছিলেন।
.
খাইবার যখন বিজয় হয়, তখন রাসুলুল্লাহ(ﷺ) -এর নিকট হাদীয়া স্বরূপ একটি (ভুনা) বকরী পাঠানো হয়। এর মধ্যে ছিল বিষ।
অতঃপর রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বলেনঃ এখানে যত ইহুদি আছে আমার কাছে তাদের একত্রিত কর। তাঁর কাছে সকলকে একত্র করা হল। রাসুলুল্লাহ(ﷺ) তাদের উদ্দেশে বললেনঃ আমি তোমাদের নিকট একটি ব্যাপারে জানতে চাই, তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে?
তারা বললঃ হ্যাঁ, হে আবুল কাসিম[মুহাম্মাদ(ﷺ) এর উপনাম]। রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বললেনঃ তোমাদের পিতা কে? তারা বললঃ আমাদের পিতা অমুক। রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বললেনঃ তোমরা মিথ্যে বলেছ বরং তোমাদের পিতা অমুক। তারা বললঃ আপনি সত্য বলেছেন ও সঠিক বলেছেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমি যদি তোমাদের নিকট আর একটি প্রশ্ন করি, তাহলে কি তোমরা সেক্ষেত্রে আমাকে সত্য বথা বলবে? তারা বললঃ হ্যাঁ, হে আবুল কাসিম যদি আমরা মিথ্যে বলি তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন, যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে। তখন রাসুলুল্লাহ(ﷺ) তাদের বললেনঃ জাহান্নামী কারা? তারা বললঃ আমরা সেখানে অল্প কয়দিনের জন্যে থাকব। তারপর আপনারা আমাদের স্থানে যাবেন। রাসুলুল্লাহ(ﷺ)বললেনঃ তোমরাই সেখানে অপমানিত হয়ে থাকবে। আল্লাহর কসম! আমরা কখনও সেখানে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত হবো না। এরপর তিনি তাদের বললেনঃ আমি যদি তোমাদের কাছে আর একটি বিষয়ে প্রশ্ন করি, তবে কি তোমরা সে বিষয়ে আমার কাছে সত্য কথা বলবে? তারা বললঃ হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা কি এ বকরীর মধ্যে বিষ মিশিয়েছ? তারা বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাদের এ কাজে প্রেরণা যুগিয়েছে? তারা বললঃ আমরা চেয়েছি, যদি আপনি মিথ্যাচারী হন, তবে আমরা আপনার থেকে রেহাই পেয়ে যাব। আর যদি আপনি নবী হন, তবে এ বিষয় আপনার কোন ক্ষতি করবে না।সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৫৭৭৭
[16]
.
আমরা দেখতে পেলাম যে, বকরীতে বিষ মেশানোর দিন মুহাম্মাদ(ﷺ) ঘটনাস্থলেই সকল ইহুদিকে ডেকে অলৌকিক উপায়ে তাঁদের পিতার নাম সঠিকভাবে বলে দিয়েছিলেন। এমনকি ইহুদিরাও স্বীকার করছিল যে তারা যদি মিথ্যা বলে তবে মুহাম্মাদ(ﷺ) তা আল্লাহর সাহায্যে বুঝে যাবেন। অর্থাৎ তাঁর নবুয়তের সত্যতা তাদের সামনেও ফুটে উঠেছিল [যদিও বংশগত হিংসা তাদের সকলকে ঈমান আনতে দেয়নি]। মুহাম্মাদ(ﷺ) এর নবুয়ত নিয়ে সন্দিহান ছিল বলে তারা বিষ প্রয়োগ করে এর ‘পরীক্ষা’ নিতে চাইছিল। আল্লাহর ইচ্ছায় নবী মুহাম্মাদ(ﷺ) তাদের এ সন্দেহও দূর করে দিয়ে এসেছিলেন। তাদের কোন ওজর-আপত্তির সুযোগ তিনি রাখেননি। যারা তাঁকে বিষ খাইয়ে মারতে চাইলো, তাঁদেরকেই ডেকে এভাবে সন্দেহ নিরসন করে দিলেন তিনি, কোন প্রকার শাস্তি দিলেন না। সুবহানাল্লাহ। অথচ এই মানুষটিকেই ইসলামবিদ্বেষীরা নির্দয়, নিষ্ঠুর হিসাবে চিত্রিত করতে চায়।
এত কিছু, এত প্রমাণের পরেও কোন বিবেকসম্পন্ন মানুষ কিভাবে মুহাম্মাদ(ﷺ) এর নবুয়তের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করতে পারে?
.
🎲 সিদ্ধান্ত: সুতরাং উপরের আলোচনার সারাংশ হিসাবে আমরা বলতে পারিঃ
.
■ নবী হলে তাঁকে হত্যা করা যাবে না – এই কথার সাথে বাইবেল ও কুরআন কোন গ্রন্থ একমত না। অতীতেও বহু নবীকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা শহীদ নবী। মুহাম্মাদ(ﷺ) একজন নবী যিনি শহীদ হয়েছিলেন। এতে তাঁর মর্যাদা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
■ নবী মুহাম্মাদ(ﷺ)কে বিষ প্রয়োগের সাথে সাথেই তিনি মারা যাননি। আল্লাহ তাঁকে তাঁর মিশন শেষ করা পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। এরপরেই বিষ ক্রিয়া করেছে। এটি একটি মুজিজা বা অলৌকিক ঘটনা।
■ এমনকি তিনি যদি ঘটনাস্থলেও মারা যেতেন, তবুও তাঁর নবুয়ত প্রশ্নবিদ্ধ হত না।
■ বিষ প্রয়োগ করা সেই বকরীর রানটি নবী(ﷺ)কে বিষের ব্যাপারে অবহিত করেছিল। যার ফলে তিনি অন্যদেরকে বিষের ব্যাপারে সতর্ক করতে পেরেছিলেন। ঘটনাস্থলেই তিনি সকল ইহুদিকে ডেকে তাঁদের সকলের বাবার নাম সঠিকভাবে বলে দেন। যা কোন সাধারণ মানূষের পক্ষে সম্ভব ছিল না। এ সকল মু’জিজার দ্বারা তাঁর নবুয়তের সত্যতাই বরং প্রমাণ হয়।
এখানে সুস্পষ্টভাবে বলা হচ্ছে যে আল কুরআন আল্লাহর সম্মানিত রাসুল মুহাম্মাদ(ﷺ) এর তিলাওয়াতকৃত কিতাব। এটা কোন কবি কিংবা গণকের কথা নয় বরং এটা স্বয়ং আল্লাহর কাছ থেকে আগত। ইসলামবিরোধীরা মাঝখানের কিছু আয়াতের উপর ‘ঈমান’(?) এনে রাসুল(ﷺ) এর মৃত্যুকে আল্লাহর গজব প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সে চেষ্টা ব্যর্থ। আমি তাদেরকে আহ্বান জানাব যে—আপনারা অন্য আয়াতগুলোর উপরেও ঈমান আনুন, মেনে নিন যে কুরআন স্বয়ং আল্লাহ তা’আলার বাণী।
এরপরেও যদি না মানেন, তাহলে পরের আয়াতগুলো দেখুন। আল্লাহ বলে দিচ্ছেন যে এই কুরআনকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারী আছে।
সুবহানাল্লাহ, এখানে ইসলামবিরোধী মিথ্যাচারকারীদের ব্যাপারে কী স্পষ্টভাবে বলে দেয়া হচ্ছে! আর মিথ্যা প্রতিপন্ন করলে পরকালে যে কী পরিনতি হবে তাও বলে দেয়া আছে। কাজেই সিদ্ধান্ত আপনাদের। আল্লাহ আপনাদের হেদায়েত দিন।
With @mohammad Thakur
তথ্যসূত্রঃ
[1] সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৪৪২৮
আরো দেখুনঃ ‘আর রাহিকুল মাখতুম’, শফিউর রহমান মুবারকপুরী; পৃষ্ঠা ৫৩৪ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) অথবা পৃষ্ঠা ৪৮৯(আল কোরআন একাডেমী লন্ডন)
[2] ২ বংশাবলী(2 Chronicles) ২৪:১৯-২১
রাজা তাদের সখরিয় [Zechariah/যাকারিয়া(আ.) কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন, তারা পাথর ছুঁড়ে মন্দির চত্বরেই তাঁকে হত্যা করলো।”
[3] ১ রাজাবলী( 1 Kings) ১৮:১৩
"আপনি নিশ্চয়ই জানেন, আমি কী করেছিলাম। ঈষেবল যখন প্রভুর ভাববাদী(নবী/prophet)দের হত্যা করছিলেন, আমি তখন তাদের ৫০ জন করে দুভাগে মোট ১০০ জন ভাববাদীকে দু’টো গুহায় লুকিয়ে রেখে নিয়মিত খাবার ও জল দিয়েছিলাম। ”
[4] ১ রাজাবলী( 1 Kings) ১৯:৯-১০
“সেখানে একটি গুহার ভেতরে এলিয় [ইলইয়াস(আ.)/Elijah] রাত্রি বাস করলেন। সে সময় প্রভু এলিয়র সঙ্গে কথা বললেন, “এলিয় তুমি এখানে কেন?” এলিয় উত্তর দিলেন, “প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, আমি সব সময় সাধ্য মতো তোমার সেবা করেছি। কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তোমার সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ করে তোমার বেদী ধ্বংস করে ভাববাদী (নবী/prophet)দের হত্যা করেছে। এখন আমিই একমাত্র জীবিত ভাববাদী আর তাই ওরা আমাকেও হত্যার চেষ্টা করছে।”
[5] নহিমিয়(Nehemiah) ৯:২৬
“তারা তোমার বিরুদ্ধে গেল এবং তোমার শিক্ষামালা ছুঁড়ে ফেলে দিল। তারা তোমার ভাববাদী(নবী/prophet)দেরও হত্যা করল, যারা তাদের সতর্ক করে তোমার কাছে ফেরাতে চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার বিরুদ্ধে বীভত্স সব কাজ করলো। "
[6] মথি(Matthew) ১৪:৮-১২
[7] মথি(Matthew) ২৩:২৯-৩৭
[8] আল কুরআন, বাকারাহ ২:৯১
[9] আল কুরআন, বাকারাহ ২:৬১, আলি ইমরান ৩:১১২
[10] “The Jews’ attempts to kill the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) - islamqa.info” [islamQA (Shaykh Muhammad Salih al Munajjid)]
https://islamqa.info/en/32762
[11] “Did the Prophet Muhammad Die As a Martyr” [islamQA Hanafi]
https://islamqa.org/hanafi/seekersguidance-hanafi/31931
[12] এ জন্য কিসাস হিসেবে পরবর্তীতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়; সহীহ মুসলিম ৩৫০ দ্রষ্টব্য
[13] সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৫১০; এ অনুচ্ছেদে অনুরূপ ঘটনার বেশ কয়েকটি আছে
[14] মুসনাদ আহমাদ, হাদিস নং : ৩৬১৭, সনদঃ সহীহ
[15] দালায়িলুল নাবুওয়াহ ৩/২৪৮; তাফসির ইবন কাসির, সুরা আলি ইমরানের ১৪৪ নং আয়াতের তাফসির
[16] সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৫৭৭৭
#MSRM-3
#Qn: রাসুলুল্লাহ(ﷺ) যদি আল্লাহর নবী হতেন তাহলে বিষপ্রয়োগে কিভাবে মারা গেলেন!!কেন জিব্রাইলের মাধ্যমে ওহি আসলোনা??
#Ans: কখনো ভেবে দেখেছেন, মহান আল্লাহ কোন ফেরেশতাকে নবী হিসেবে না পাঠিয়ে কেন মানুষদের পাঠিয়েছেন? উত্তরটা খুব সহজ। যাতে করে আমরা সহজেই তাঁদেরকে অনুসরণ করতে পারি। নিজের জীবনটাকে তাঁদের মতো করে সাজাতে পারি। তাঁরা আমাদের মতোই মায়ের গর্ভ থেকে জন্মেছেন, বড় হয়েছেন, বিয়ে করেছেন, সন্তানের পিতা হয়েছেন। তারপর, আল্লাহর ফয়সালা অনুযায়ী মৃত্যুবরণ করেছেন।
.
সহীহ বুখারীসহ বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থের বর্ণনা অনুযায়ী এক ইহুদি মহিলার দেয়া বিষের প্রতিক্রিয়ায় মুহাম্মাদ(ﷺ) এর মৃত্যু হয়েছিল। একজন নবীকে কী করে কোন মানুষ হত্যা করতে পারে?
.
প্রথমে আমরা দেখে নিই কিভাবে আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীজি মুহাম্মাদ(ﷺ) এর মৃত্যু হয়েছিল।
.
وَقَالَ يُونُسُ عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ عُرْوَة: قَالَتْ عَائِشَةُ رضى الله عنها : "كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ : " يَا عَائِشَةُ! مَا أَزَالُ أَجِدُ أَلَمَ الطَّعَامِ الَّذِي أَكَلْتُ بِخَيْبَرَ، فَهَذَا أَوَانُ وَجَدْتُ انْقِطَاعَ أَبْهَرِي مِنْ ذَلِكَ السَّمِّ ".
অর্থঃ ইউনুস(র.) যুহরী ও ‘উরওয়াহ(র.) সুত্রে বলেন, আয়িশা(রা.) বলেছেন, নবী(ﷺ) যে রোগে ইন্তিকাল করেন সে সময় তিনি বলতেন, “হে ‘আয়িশা! আমি খাইবারে (বিষযুক্ত) খাবার খেয়েছিলাম আমি সর্বদা তার যন্ত্রণা অনুভব করছি । আর এখন মনে হচ্ছে বিষক্রিয়ার ফলে আমার শিরাগুলোকেটে ফেলা হচ্ছে। [1]
নবী মুহাম্মাদ(ﷺ) এর মৃত্যুর ব্যাপারে ইসলামবিরোধীদের অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যাক এগুলোর আদৌ কোন সত্যতা আছে কিনা।
.
এখানে ইসলামবিরোধীরা “নবী কিভাবে হয়” –এ ব্যাপারে নিজস্ব একটা স্ট্যান্ডার্ড দাঁড় করিয়ে দিয়েছে যেটা অনেক সরলপ্রাণ মুসলিম ধরতে পারেন না। “কী করে আল্লাহর কোন নবীকে বিষ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা যেতে পারে?” – এই প্রশ্ন দ্বারা ইসলাম বিরোধীরা একটা তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে যেঃ কোন নবীই আল্লাহর পথে শহীদ হতে পারে না। অথচ এটা এমন একটা স্ট্যান্ডার্ড যার সাথে কুরআন ও বাইবেল কোন গ্রন্থই একমত না।[17]
#️⃣#️⃣ বাইবেল#️⃣#️⃣
যেমনঃ
১)যাকারিয়া(আ.) কে পাথর ছুড়ে হত্যা করে সহীদ করা হয়েছে।[২]
২)ঈষেবল যখন প্রভুর ভাববাদী(নবী/prophet)দের হত্যা করছিলেন, [৩]
৩)ইস্রায়েলের লোকরা চুক্তিভঙ্গ করে বেদী ধ্বংস করে ভাববাদী (নবী/prophet)দের হত্যা করেছে। [4,5]
আরো জানতে দেখুন।
মথি(Matthew) ১৪:৮-১২,
মথি(Matthew) ২৩:২৯-৩৭
বাইবেলের অনেক জায়গাতেই ইহুদিদের দ্বারা নবী হত্যা করার ব্যাপারে উল্লেখ রয়েছে। কাউকে হত্যা করা হলে সে নবী হতে পারে না, এই কথাকে সত্য ধরা হলে বাইবেলের অনেক নবীই মিথ্যা হয়ে যান!
.
#️⃣আল কুরআন#️⃣#️⃣
আল কুরআনও এ ব্যাপারে একমত যে—অতীতেও বহু নবীকে হত্যা করা হয়েছে। আল কুরআনে ইহুদিদের নবী হত্যা করার জন্য ভৎর্সনা করা হয়েছে।
.
১)“...বলে দাওঃ যদি তোমরা [ইহুদিরা] বিশ্বাসীই ছিলে, তবে তোমরা ইতিপূর্বে কেন আল্লাহর নবীদের হত্যা করেছিলে?” [8]
.
২)“ ...এমন হলো এ জন্য যে, তারা [ইহুদিরা] আল্লাহর বিধি বিধান মানতো না এবং নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করত। তার কারণ, তারা ছিল নাফরমান সীমালঙ্ঘণকারী।” [9]
.
নবী হলেই যে তাঁকে কেউ হত্যা করতে পারবে না—এ কথা প্রকৃতপক্ষে কোন জায়গায় বলা নেই। আমরা মুসলিম হিসাবে বিশ্বাস করি যে আল্লাহর অনেক নবীকেই যুগে যুগে জালিমরা হত্যা করেছে। সেইসব নবীরা আল্লাহর পথে প্রাণ দিয়েছেন; তাঁরা শহীদ হয়েছেন।
.
#️⃣#️⃣ বিষপানে মৃত্যু: নববী মোজেজা#️⃣#️⃣
গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার ইসলামবিরোধীরা এড়িয়ে যায় আর তা হচ্ছেঃ বিষ প্রয়োগ করার সাথে সাথে কিন্তু নবী(ﷺ) মারা যাননি। বরং তিনি মারা গিয়েছিলেন বিষ প্রয়োগের ঘটনার প্রায় চার বছর পর। [10]
তিনি মারা গিয়েছিলেন মক্কা বিজয়ের পরে, বিদায় হজের পরে, আরবের গোত্রগুলো দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করার পরে তথা তাঁর মিশন শেষ হবার পরে। বিষ প্রয়োগের ফলে অন্য সাহাবীর মৃত্যু ঘটে কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় নবী(ﷺ) সে সময়ে মারা যান না বরং তাঁর মিশন শেষ করার পরে মারা যান। এর দ্বারা বরং তাঁর নবুয়তের সত্যতা আরো বেশি করে প্রমাণিত হয়, সুবহানাল্লাহ। এটাই সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা.) এর অভিমত। তাঁর মতে - বিষ প্রয়োগ করার এত পরে এর ক্রিয়া করা নবী(ﷺ) এর একটি মুজিজা এবং আল্লাহ তা’আলা তার নবী(ﷺ)কে তাঁর দায়িত্ব সমাপ্ত করা পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং তাঁকে সম্মানিত করার জন্য শহীদের মর্যাদা দান করেছেন। [11]
.
#️⃣#️⃣ বিষপান: নবুওতী মোজেজা#️⃣#️⃣
বিষ প্রয়োগের সেই ঘটনার বিবরণ লক্ষ্য করলে তাঁর নবুয়তের সত্যতা আরো বেশি করে ফুটে ওঠে।
.
“খায়বারের অধিবাসী এক ইহুদি মহিলা বিষ মিশিয়ে একটা বকরী ভুনা করে তা রাসুলুল্লাহ(ﷺ)কে হাদিয়া দেয়। রাসুলুল্লাহ(ﷺ) একটি রান নিয়ে খাওয়া শুরু করলেন এবং তাঁর কতিপয় সাহাবীও তাঁর সঙ্গে খেতে লাগলেন।
কিছুক্ষণ পর রাসুলুল্লাহ(ﷺ) তাদেরকে বললেনঃ তোমরা হাত গুটিয়ে নাও।
অতঃপর রাসুলুল্লাহ(ﷺ) ঐ ইহুদি মহিলাকে লোক মারফত ডেকে এনে বললেন, “তুমি কি এ বকরীর সঙ্গে বিষ মিশিয়েছ?”
সে বলল, “আপনাকে কে সংবাদ দিয়েছে?”
তিনি বললেন, “আমার হাতের এই রান আমাকে সংবাদ দিয়েছে।”
সে বলল, “হ্যাঁ”।
তিনি বললেন, “এরূপ করার উদ্যেশ্য কী?”
সে বলল, “আমি ভেবেছি যদি তিনি সত্যিই নবী হন তাহলে বিষ তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি নবী না হন তবে আমরা তার থেকে ঝামেলামুক্ত হব।”
অতঃপর রাসুলুল্লাহ(ﷺ) তাকে কোন প্রকার শাস্তি না দিয়ে ক্ষমা করে দিলেন।
যে সব সাহাবী তাঁর সঙ্গে বকরীর গোশত খেয়েছেন তাদের কেউ কেউ মারা গেলেন [12] এবং রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বকরীর গোশত খাবার প্রতিক্রিয়া প্রতিহত করার জন্য তাঁর বাহুদ্বয়ের মাঝখানে রক্তমোক্ষণ (শিঙ্গা লাগানো / cupping) করালেন। ... ” [13]
.
এখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বিষযুক্ত বকরীর রানটি রাসুলুল্লাহ(ﷺ)কে বিষের ব্যাপারে অবহিত করেছিল – যা তাঁর একটি মুজিজা, সুবহানাল্লাহ। যে সব খ্রিষ্টান মিশনারী মুহাম্মাদ(ﷺ) এর নবুয়ত মিথ্যা প্রমান করার জন্য এই বিবরণ উল্লেখ করেন, তাদের জন্য এটা এক চপেটাঘাত। তাদের কী দুর্ভাগ্য যে, মুহাম্মাদ(ﷺ) এর নবুয়ত মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য তারা যে বিবরণ উল্লেখ করেন তাতেই তাঁর একটি মুজিজা(miracle) দেখা যাচ্ছে!
#️⃣#️⃣ কম বিষপান ও মোজেজা#️⃣#️⃣
কেউ কেউ বলতে চান যে--মুহাম্মাদ(ﷺ) বিষ প্রয়োগের চার বছর পর মারা গিয়েছেন এতে কোন অলৌকিকতা নেই কেননা তিনি খুব কম বিষ গ্রহণ করেছেন ফলে তাঁর তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয়নি বরং তাঁর স্লো পয়জনিং হয়েছিল।
এর জবাবে আমরা তাদের প্রশ্ন করব—তিনি কেন খুব কম বিষ গ্রহণ করেছেন?
.
এর উত্তর হবে—বিষযুক্ত বকরীর রানটি রাসুলুল্লাহ(ﷺ)কে বিষের ব্যাপারে অবহিত করেছিল; যার ফলে তিনি দ্রুত গোশত খাওয়া বন্ধ করে দেন এবং অন্যদেরকেও খাওয়া বন্ধ করতে বলেন। রানটি বিষের ব্যাপারে অবহিত করার আগে খুব সামান্য গোশতই তিনি খেয়েছিলেন।
কাজেই আমরা যদি বিবেচনা করি যে - মুহাম্মাদ(ﷺ) খুব কম বিষ গ্রহণ করেছেন ফলে তাঁর তাৎক্ষণিক মৃত্যু হয়নি --- তবুও এর মাঝে তাঁর নবুয়তের সত্যতা নিহিত আছে। মুজিজার দ্বারা তিনি বকরীর রানের কাছ থেকে বিষের সংবাদ পেয়েছিলেন বলেই তো তিনি দ্রুত খাওয়া বন্ধ করেছিলেন এবং অন্যদেরকেও খাওয়া বন্ধ করতে বলেছিলেন।
.
#️⃣#️⃣ বিষ কেনো গ্রহন করলেন?#️⃣#️⃣
#Qn: সামান্য বিষটুকু বা কেন তিনি গ্রহণ করলেন? বকরীর রানটি কেন খাওয়া শুরুর আগেই তাঁকে বিষের ব্যাপারে অবহিত করল না?
#Ans: "এটাই আল্লাহর ফায়সালা ছিল যে তিনি তাঁর শেষ নবীকে শহীদের মর্যাদায় ভূষিত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী। এর দ্বারা শেষ নবী মুহাম্মাদ(ﷺ) এর মর্যাদা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে—তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসুল, সর্বশেষ নবী এবং একজন শহীদ।
সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ(রা.) বলেনঃ “আমাকে যদি ৯ বার আল্লাহর নামে শপথ করতে হয় যে - আল্লাহর রাসুল(ﷺ)কে হত্যা করা হয়েছে, তবে তা আমার নিকট ১ বার শপথ করার চেয়ে প্রিয় হবে। কারণ আল্লাহ তাঁকে [মুহাম্মাদ(ﷺ)] একজন নবী বানিয়েছেন এবং একজন শহীদ বানিয়েছেন।” [14]
.
এমনকি ঐ বিষের প্রভাবে রাসুলুল্লাহ(ﷺ) যদি চার বছর পর মারা না গিয়ে ঘটনাস্থলেই তাৎক্ষণিকভাবে মারা যেতেন, তাহলেও সেটা তাঁর নবুয়তকে প্রশ্নবিদ্ধ করত না। আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে, নবীদেরকেও হত্যা করা যেতে পারে, অতীতে বহু নবী আল্লাহর পথে শহীদ হয়েছেন এ ব্যাপারে কুরআন ও বাইবেল উভয় গ্রন্থই একমত। সেই ইহুদি মহিলা বলেছিল যেঃ “আমি ভেবেছি যদি তিনি সত্যিই নবী হন তাহলে বিষ তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না”, অথচ এটা ছিল ঐ মহিলার নিজের বানানো নবুয়তের স্ট্যান্ডার্ড। তাদের নিজ কিতাবই সাক্ষ্য দেয় যে অতীতেও নবীদেরকে হত্যা করা হয়েছে। বিষের অথবা অন্য যে কোন কিছুর ভৌত গুণাগুণ অন্য সকল মানুষের মত নবীদের দেহেও ক্রিয়া করতে পারে – যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা রক্ষা করেন, যত দিন ইচ্ছা বাঁচিয়ে রাখেন, যাকে ইচ্ছা শহীদের মর্যাদা দেন। ওহুদের যুদ্ধের কঠিন মুহূর্তে এক সময় গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল যেঃ মুহাম্মাদ(ﷺ) নিহত হয়েছেন। কিন্তু এটা শুনেও সাহাবায়ে কিরাম(রা.)গণ রাসুল(ﷺ) এর নবুয়ত নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেননি।
.
একজন মুহাজির সাহাবী একজন আনসারী সাহাবীকে উহুদের যুদ্ধে দেখেন যে, তিনি আহত হয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছেন এবং রক্ত ও মাটিতে গড়াগড়ি যাচ্ছেন। তিনি উক্ত আনসারীকে বললেনঃ রাসুলুল্লাহ(ﷺ) যে শহীদ হয়েছেন তা কি আপনি জানেন?
তিনি উত্তরে বলেনঃ “যদি এ সংবাদ সত্য হয়ে থাকে তাহলে তিনি তাঁর কাজ করে গেছেন। এখন আপনারা সবাই আপনাদের দ্বীনের(ইসলামের) উপরে নিজের জীবন কুরবান করুন।” [15]
.
আরো একটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে যে, রাসুলুল্লাহ(ﷺ) লক্ষ্য করেছিলেন যে ইহুদিরা তাঁর নবুয়তে সন্দেহ পোষণ করছে। যে দিন তারা তাঁর খাবারে বিষ মিশিয়েছিল, সেদিন ঘটনাস্থলেই তিনি তাদের নিকট তাঁর নবুয়তের সত্যতা প্রমাণ করে এসেছিলেন।
.
খাইবার যখন বিজয় হয়, তখন রাসুলুল্লাহ(ﷺ) -এর নিকট হাদীয়া স্বরূপ একটি (ভুনা) বকরী পাঠানো হয়। এর মধ্যে ছিল বিষ।
অতঃপর রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বলেনঃ এখানে যত ইহুদি আছে আমার কাছে তাদের একত্রিত কর। তাঁর কাছে সকলকে একত্র করা হল। রাসুলুল্লাহ(ﷺ) তাদের উদ্দেশে বললেনঃ আমি তোমাদের নিকট একটি ব্যাপারে জানতে চাই, তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে?
তারা বললঃ হ্যাঁ, হে আবুল কাসিম[মুহাম্মাদ(ﷺ) এর উপনাম]। রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বললেনঃ তোমাদের পিতা কে? তারা বললঃ আমাদের পিতা অমুক। রাসুলুল্লাহ(ﷺ) বললেনঃ তোমরা মিথ্যে বলেছ বরং তোমাদের পিতা অমুক। তারা বললঃ আপনি সত্য বলেছেন ও সঠিক বলেছেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমি যদি তোমাদের নিকট আর একটি প্রশ্ন করি, তাহলে কি তোমরা সেক্ষেত্রে আমাকে সত্য বথা বলবে? তারা বললঃ হ্যাঁ, হে আবুল কাসিম যদি আমরা মিথ্যে বলি তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন, যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে। তখন রাসুলুল্লাহ(ﷺ) তাদের বললেনঃ জাহান্নামী কারা? তারা বললঃ আমরা সেখানে অল্প কয়দিনের জন্যে থাকব। তারপর আপনারা আমাদের স্থানে যাবেন। রাসুলুল্লাহ(ﷺ)বললেনঃ তোমরাই সেখানে অপমানিত হয়ে থাকবে। আল্লাহর কসম! আমরা কখনও সেখানে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত হবো না। এরপর তিনি তাদের বললেনঃ আমি যদি তোমাদের কাছে আর একটি বিষয়ে প্রশ্ন করি, তবে কি তোমরা সে বিষয়ে আমার কাছে সত্য কথা বলবে? তারা বললঃ হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা কি এ বকরীর মধ্যে বিষ মিশিয়েছ? তারা বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাদের এ কাজে প্রেরণা যুগিয়েছে? তারা বললঃ আমরা চেয়েছি, যদি আপনি মিথ্যাচারী হন, তবে আমরা আপনার থেকে রেহাই পেয়ে যাব। আর যদি আপনি নবী হন, তবে এ বিষয় আপনার কোন ক্ষতি করবে না।সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৫৭৭৭
[16]
.
আমরা দেখতে পেলাম যে, বকরীতে বিষ মেশানোর দিন মুহাম্মাদ(ﷺ) ঘটনাস্থলেই সকল ইহুদিকে ডেকে অলৌকিক উপায়ে তাঁদের পিতার নাম সঠিকভাবে বলে দিয়েছিলেন। এমনকি ইহুদিরাও স্বীকার করছিল যে তারা যদি মিথ্যা বলে তবে মুহাম্মাদ(ﷺ) তা আল্লাহর সাহায্যে বুঝে যাবেন। অর্থাৎ তাঁর নবুয়তের সত্যতা তাদের সামনেও ফুটে উঠেছিল [যদিও বংশগত হিংসা তাদের সকলকে ঈমান আনতে দেয়নি]। মুহাম্মাদ(ﷺ) এর নবুয়ত নিয়ে সন্দিহান ছিল বলে তারা বিষ প্রয়োগ করে এর ‘পরীক্ষা’ নিতে চাইছিল। আল্লাহর ইচ্ছায় নবী মুহাম্মাদ(ﷺ) তাদের এ সন্দেহও দূর করে দিয়ে এসেছিলেন। তাদের কোন ওজর-আপত্তির সুযোগ তিনি রাখেননি। যারা তাঁকে বিষ খাইয়ে মারতে চাইলো, তাঁদেরকেই ডেকে এভাবে সন্দেহ নিরসন করে দিলেন তিনি, কোন প্রকার শাস্তি দিলেন না। সুবহানাল্লাহ। অথচ এই মানুষটিকেই ইসলামবিদ্বেষীরা নির্দয়, নিষ্ঠুর হিসাবে চিত্রিত করতে চায়।
এত কিছু, এত প্রমাণের পরেও কোন বিবেকসম্পন্ন মানুষ কিভাবে মুহাম্মাদ(ﷺ) এর নবুয়তের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করতে পারে?
.
🎲 সিদ্ধান্ত: সুতরাং উপরের আলোচনার সারাংশ হিসাবে আমরা বলতে পারিঃ
.
■ নবী হলে তাঁকে হত্যা করা যাবে না – এই কথার সাথে বাইবেল ও কুরআন কোন গ্রন্থ একমত না। অতীতেও বহু নবীকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা শহীদ নবী। মুহাম্মাদ(ﷺ) একজন নবী যিনি শহীদ হয়েছিলেন। এতে তাঁর মর্যাদা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
■ নবী মুহাম্মাদ(ﷺ)কে বিষ প্রয়োগের সাথে সাথেই তিনি মারা যাননি। আল্লাহ তাঁকে তাঁর মিশন শেষ করা পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। এরপরেই বিষ ক্রিয়া করেছে। এটি একটি মুজিজা বা অলৌকিক ঘটনা।
■ এমনকি তিনি যদি ঘটনাস্থলেও মারা যেতেন, তবুও তাঁর নবুয়ত প্রশ্নবিদ্ধ হত না।
■ বিষ প্রয়োগ করা সেই বকরীর রানটি নবী(ﷺ)কে বিষের ব্যাপারে অবহিত করেছিল। যার ফলে তিনি অন্যদেরকে বিষের ব্যাপারে সতর্ক করতে পেরেছিলেন। ঘটনাস্থলেই তিনি সকল ইহুদিকে ডেকে তাঁদের সকলের বাবার নাম সঠিকভাবে বলে দেন। যা কোন সাধারণ মানূষের পক্ষে সম্ভব ছিল না। এ সকল মু’জিজার দ্বারা তাঁর নবুয়তের সত্যতাই বরং প্রমাণ হয়।
এখানে সুস্পষ্টভাবে বলা হচ্ছে যে আল কুরআন আল্লাহর সম্মানিত রাসুল মুহাম্মাদ(ﷺ) এর তিলাওয়াতকৃত কিতাব। এটা কোন কবি কিংবা গণকের কথা নয় বরং এটা স্বয়ং আল্লাহর কাছ থেকে আগত। ইসলামবিরোধীরা মাঝখানের কিছু আয়াতের উপর ‘ঈমান’(?) এনে রাসুল(ﷺ) এর মৃত্যুকে আল্লাহর গজব প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সে চেষ্টা ব্যর্থ। আমি তাদেরকে আহ্বান জানাব যে—আপনারা অন্য আয়াতগুলোর উপরেও ঈমান আনুন, মেনে নিন যে কুরআন স্বয়ং আল্লাহ তা’আলার বাণী।
এরপরেও যদি না মানেন, তাহলে পরের আয়াতগুলো দেখুন। আল্লাহ বলে দিচ্ছেন যে এই কুরআনকে মিথ্যা প্রতিপন্নকারী আছে।
সুবহানাল্লাহ, এখানে ইসলামবিরোধী মিথ্যাচারকারীদের ব্যাপারে কী স্পষ্টভাবে বলে দেয়া হচ্ছে! আর মিথ্যা প্রতিপন্ন করলে পরকালে যে কী পরিনতি হবে তাও বলে দেয়া আছে। কাজেই সিদ্ধান্ত আপনাদের। আল্লাহ আপনাদের হেদায়েত দিন।
With @mohammad Thakur
তথ্যসূত্রঃ
[1] সহীহ বুখারী, হাদিস নং ৪৪২৮
আরো দেখুনঃ ‘আর রাহিকুল মাখতুম’, শফিউর রহমান মুবারকপুরী; পৃষ্ঠা ৫৩৪ (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) অথবা পৃষ্ঠা ৪৮৯(আল কোরআন একাডেমী লন্ডন)
[2] ২ বংশাবলী(2 Chronicles) ২৪:১৯-২১
রাজা তাদের সখরিয় [Zechariah/যাকারিয়া(আ.) কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন, তারা পাথর ছুঁড়ে মন্দির চত্বরেই তাঁকে হত্যা করলো।”
[3] ১ রাজাবলী( 1 Kings) ১৮:১৩
"আপনি নিশ্চয়ই জানেন, আমি কী করেছিলাম। ঈষেবল যখন প্রভুর ভাববাদী(নবী/prophet)দের হত্যা করছিলেন, আমি তখন তাদের ৫০ জন করে দুভাগে মোট ১০০ জন ভাববাদীকে দু’টো গুহায় লুকিয়ে রেখে নিয়মিত খাবার ও জল দিয়েছিলাম। ”
[4] ১ রাজাবলী( 1 Kings) ১৯:৯-১০
“সেখানে একটি গুহার ভেতরে এলিয় [ইলইয়াস(আ.)/Elijah] রাত্রি বাস করলেন। সে সময় প্রভু এলিয়র সঙ্গে কথা বললেন, “এলিয় তুমি এখানে কেন?” এলিয় উত্তর দিলেন, “প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, আমি সব সময় সাধ্য মতো তোমার সেবা করেছি। কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা তোমার সঙ্গে চুক্তিভঙ্গ করে তোমার বেদী ধ্বংস করে ভাববাদী (নবী/prophet)দের হত্যা করেছে। এখন আমিই একমাত্র জীবিত ভাববাদী আর তাই ওরা আমাকেও হত্যার চেষ্টা করছে।”
[5] নহিমিয়(Nehemiah) ৯:২৬
“তারা তোমার বিরুদ্ধে গেল এবং তোমার শিক্ষামালা ছুঁড়ে ফেলে দিল। তারা তোমার ভাববাদী(নবী/prophet)দেরও হত্যা করল, যারা তাদের সতর্ক করে তোমার কাছে ফেরাতে চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার বিরুদ্ধে বীভত্স সব কাজ করলো। "
[6] মথি(Matthew) ১৪:৮-১২
[7] মথি(Matthew) ২৩:২৯-৩৭
[8] আল কুরআন, বাকারাহ ২:৯১
[9] আল কুরআন, বাকারাহ ২:৬১, আলি ইমরান ৩:১১২
[10] “The Jews’ attempts to kill the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) - islamqa.info” [islamQA (Shaykh Muhammad Salih al Munajjid)]
https://islamqa.info/en/32762
[11] “Did the Prophet Muhammad Die As a Martyr” [islamQA Hanafi]
https://islamqa.org/hanafi/seekersguidance-hanafi/31931
[12] এ জন্য কিসাস হিসেবে পরবর্তীতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়; সহীহ মুসলিম ৩৫০ দ্রষ্টব্য
[13] সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৫১০; এ অনুচ্ছেদে অনুরূপ ঘটনার বেশ কয়েকটি আছে
[14] মুসনাদ আহমাদ, হাদিস নং : ৩৬১৭, সনদঃ সহীহ
[15] দালায়িলুল নাবুওয়াহ ৩/২৪৮; তাফসির ইবন কাসির, সুরা আলি ইমরানের ১৪৪ নং আয়াতের তাফসির
[16] সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৫৭৭৭