সংস্কৃতির বিপর্যয়
আবদুল্লাহ রাফি
কিছু কথা,
আমাকে হয়তো ভিন্ন মনা কিংবা চেতনায় রাজাকার অথবা পাকিদের দোসর বলা হবে ৷ বলা হতে পারে রাষ্ট্রদ্রোহী ও ৷ তবু বলছি,
আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি৷ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ৷ রফিক, সালাম, বরকত আর জব্বার রা বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন ৷ তাই বাংলা ভাষা-ভাষিদের জন্য দিনটি অবিস্মরণীয় একটি দিন ৷ কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্যি যে, অদ্যকার সূচনাটা ভাল হলেও পুরো দিনটা কেটেছে মর্মন্তুদ যন্ত্রণায় ৷
মিছিলের আওয়াজ শুনেই ভোর বেলার ঘুম ভাঙ্গে ৷ ভাবলাম কোন নির্বাচনী প্রচারণা কিন্তু শুনতে পেলাম ভাষা সৈনিকদের নিয়ে কিছু স্লোগান ৷ অত্যন্ত আনন্দিত হলাম এই ভেবে যে, এখনো বাংলার যুবকরা ভাষা শহীদদের চেতনাকে ধারণ করছে ৷ কেবল কিছু অর্ঘ্য বিসর্জনের মধ্য দিয়েই শহীদানের স্মৃতি মন্থন করেনি বরং বীর সন্তানদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভোর বেলাতেই সিংহের ন্যায় গর্জন দিয়ে উঠেছে ৷
কিন্তু মনটা আঁধারে ছেয়ে গেল ৷ যখন দেখলাম শহীদানের স্মরণ সভায় তাঁদের শ্রদ্ধার্থে ডানা কাটা পরীদের নৃত্য চলে,তখনি কষ্ট পেলাম ৷
যখন ফেইজবুকের পাতায় দেখলাম, জাতীয় শহীদ মিনারে তরুণরা ফুল দিতে গিয়ে মুখ বাঁকা করে, চোখ উল্টিয়ে বিকৃত ভঙ্গিমায় ছবি উঠাচ্ছে তখনি বিবেকটা নাড়া দিল ৷
যখন দেখলাম আজকের দিনে ঢাকা সিটি নির্বীচনকে কেন্দ্র করে বিশাল বিশাল মিছিল বের হচ্ছে, বিভিন্ন রোমান্টিক গান সংবলিত প্রচারণা বেদম চলছে , তখনি প্রশ্নবিদ্ধ হলাম ৷
অপরদিকে চক বাজারে ঘটে যাওয়া রাক্ষুসে আগুনের কবলে পড়া অসংখ্য জনতার শোকে, আকাশ বাতাস ভারি করা আর্তনাদের কথা তো আর বলার অপেক্ষা রাখেনা ৷
এতকিছু সত্ত্বেও কি কোন রাজনৈতিক নেতা কিংবা সুশীলদের টনক নড়েছে? নাকি ভেবেছেন কী হতে যাচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে?
আজকের দিনটি কি উল্লাসের দিন? নাকি সন্তানের রক্তমাখা পোশাক নিয়ে মায়ের গগন বিদারী আর্তনাদের দিন?
এভাবে যদি চলতে থাকে, রাজনৈতিক নেতাগণ, সুশীল সমাজ আর তরুণ প্রজন্ম এতটুকু বোধ সম্পন্ন না হয়! বিকৃত সংস্কৃতি চর্চা করেই চলি, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি আর ২১ ফেব্রুয়ারির মাঝে পার্থক্য করতে না পারি তাহলে কী আছে আমাদের ভাগ্যে,
আজকে শাহরিয়ার কবির, রাশেদ, মেনন , ইনু ভাই আর তথা কথিত দেশ প্রেমিরা কোথায়? কিছু বলছেন না কেন?
এই কাজ গুলি যদি কোন দাঁড়ি-টুপি ওয়ালা করতেন কিংবা কোন ইসলাম চেতনাধারি করতেন তাহলে কী হতো? টকশো ওয়ালাদের কারিশমায় কতো গবেষণা চালাতেন, নিন্দায় মোখর হয়ে উঠতেন৷ খোদার রহম, কোন হুজুর আজকের দিনে এই ভুলটুকু করেননি ৷ ভবিষ্যতেও করবে না ইন-শা-আল্লাহ ৷
পরিশেষে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে সবিনয়ে বলতে চাই,, আপনি এদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে ৷ এদেশের উন্নতির লক্ষ্যে অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন ৷
আপনার প্রতি অনুরোধ, দেশব্যাপী সঠিক সংস্কৃতি চর্চার নির্দেশ জারি করুন ৷ তানাহলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক বিপর্যয় দেখা দিবে ৷ ২৫ শে মার্চ আর, ১৫ই আগস্টের মত দিন গুলোতেও নির্বাচনী প্রচারণা আর নৃত্য দিয়ে মাতম দিবস পালন করবে ৷ যা হবে বাংলাদেশীদের জন্য খুবই কলঙ্কজনক ও হৃদয় বিদারক।

আবদুল্লাহ রাফি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আবদুল্লাহ রাফি
কিছু কথা,
আমাকে হয়তো ভিন্ন মনা কিংবা চেতনায় রাজাকার অথবা পাকিদের দোসর বলা হবে ৷ বলা হতে পারে রাষ্ট্রদ্রোহী ও ৷ তবু বলছি,
আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি৷ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ৷ রফিক, সালাম, বরকত আর জব্বার রা বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন ৷ তাই বাংলা ভাষা-ভাষিদের জন্য দিনটি অবিস্মরণীয় একটি দিন ৷ কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্যি যে, অদ্যকার সূচনাটা ভাল হলেও পুরো দিনটা কেটেছে মর্মন্তুদ যন্ত্রণায় ৷
মিছিলের আওয়াজ শুনেই ভোর বেলার ঘুম ভাঙ্গে ৷ ভাবলাম কোন নির্বাচনী প্রচারণা কিন্তু শুনতে পেলাম ভাষা সৈনিকদের নিয়ে কিছু স্লোগান ৷ অত্যন্ত আনন্দিত হলাম এই ভেবে যে, এখনো বাংলার যুবকরা ভাষা শহীদদের চেতনাকে ধারণ করছে ৷ কেবল কিছু অর্ঘ্য বিসর্জনের মধ্য দিয়েই শহীদানের স্মৃতি মন্থন করেনি বরং বীর সন্তানদের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভোর বেলাতেই সিংহের ন্যায় গর্জন দিয়ে উঠেছে ৷
কিন্তু মনটা আঁধারে ছেয়ে গেল ৷ যখন দেখলাম শহীদানের স্মরণ সভায় তাঁদের শ্রদ্ধার্থে ডানা কাটা পরীদের নৃত্য চলে,তখনি কষ্ট পেলাম ৷
যখন ফেইজবুকের পাতায় দেখলাম, জাতীয় শহীদ মিনারে তরুণরা ফুল দিতে গিয়ে মুখ বাঁকা করে, চোখ উল্টিয়ে বিকৃত ভঙ্গিমায় ছবি উঠাচ্ছে তখনি বিবেকটা নাড়া দিল ৷
যখন দেখলাম আজকের দিনে ঢাকা সিটি নির্বীচনকে কেন্দ্র করে বিশাল বিশাল মিছিল বের হচ্ছে, বিভিন্ন রোমান্টিক গান সংবলিত প্রচারণা বেদম চলছে , তখনি প্রশ্নবিদ্ধ হলাম ৷
অপরদিকে চক বাজারে ঘটে যাওয়া রাক্ষুসে আগুনের কবলে পড়া অসংখ্য জনতার শোকে, আকাশ বাতাস ভারি করা আর্তনাদের কথা তো আর বলার অপেক্ষা রাখেনা ৷
এতকিছু সত্ত্বেও কি কোন রাজনৈতিক নেতা কিংবা সুশীলদের টনক নড়েছে? নাকি ভেবেছেন কী হতে যাচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে?
আজকের দিনটি কি উল্লাসের দিন? নাকি সন্তানের রক্তমাখা পোশাক নিয়ে মায়ের গগন বিদারী আর্তনাদের দিন?
এভাবে যদি চলতে থাকে, রাজনৈতিক নেতাগণ, সুশীল সমাজ আর তরুণ প্রজন্ম এতটুকু বোধ সম্পন্ন না হয়! বিকৃত সংস্কৃতি চর্চা করেই চলি, ১৪ ই ফেব্রুয়ারি আর ২১ ফেব্রুয়ারির মাঝে পার্থক্য করতে না পারি তাহলে কী আছে আমাদের ভাগ্যে,
আজকে শাহরিয়ার কবির, রাশেদ, মেনন , ইনু ভাই আর তথা কথিত দেশ প্রেমিরা কোথায়? কিছু বলছেন না কেন?
পরিশেষে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে সবিনয়ে বলতে চাই,, আপনি এদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে ৷ এদেশের উন্নতির লক্ষ্যে অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন ৷
আপনার প্রতি অনুরোধ, দেশব্যাপী সঠিক সংস্কৃতি চর্চার নির্দেশ জারি করুন ৷ তানাহলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক বিপর্যয় দেখা দিবে ৷ ২৫ শে মার্চ আর, ১৫ই আগস্টের মত দিন গুলোতেও নির্বাচনী প্রচারণা আর নৃত্য দিয়ে মাতম দিবস পালন করবে ৷ যা হবে বাংলাদেশীদের জন্য খুবই কলঙ্কজনক ও হৃদয় বিদারক।

আবদুল্লাহ রাফি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
0 Comments
Thanks for your comment