রাত্রি দশটার আযান প্রসঙ্গে দশটি হাদীসের তাহক্বীক :
-ব্রাদার রাহুল হোসেন রুহুল আমিন
পশ্চিমবঙ্গ বাংলা ভারত
আযান প্রসঙ্গে প্রথম হাদীসের তাহাকীক:
কলেরা, কোনাে দুর্যোগ, আপদ - বিপদ বা ঝড় তুফান চলাকালীন আযান :
حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ رُشَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ عَنْبَسَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زَاذَانَ، عَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا وَقَعَتْ كَبِيرَةٌ، أَوْ هَاجَتْ رِيحٌ مُظْلِمَةٌ، فَعَلَيْكُمْ بِالتَّكْبِيرِ، فَإِنَّهُ يُجَلِّي الْعَجَاجَ الْأَسْوَدَ»
[حكم حسين سليم أسد] : إسناده ضعيف
জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু)হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম) বলেছেন : যখন কোনাে দুর্যোগ নেমে আসবে , কিংবা প্রবল ঝড় উঠবে , তখন তােমাদের তাকবীর বলা দরকার , কেননা এটা গর্জনকারী কালাে ঝড়কে দূর করে দেয়
( মুসনাদ আবী ইয়ালা হাঃ ১৯৪৭ , ইবনুসুন্নির আমালুল ইয়াউমি অললাইলাহ ২৮৪ , আল কামেলী ফী যুয়াফায়ির রিজাল ৭ /৪২৫ ) ।
তাহকীক : হুসেন সালীম আসাদ আদ দারানী যয়ীফ বলেছেন তাহকীক মুসনাদ আবী ইয়ালা হা/১৯৪৭)
এর সূত্র তিনটি কারণে যয়ীফ ।
( ক )
সূত্রে আছে আনবাস ইবনু আব্দুর রহমান আল কুরাশী । যার ব্যাপারে ইমাম বুখারী বলেন , উলামাগণ এর হাদীস গ্রহণ করা ছেড়ে দিয়েছিলেন ( তারীখুল কাবীর ১৬৯ ) ।
ইমাম তিরমিজী এবং ইমাম বুখারী আনবাস ইবনু আব্দুর রহমান কে যঈফ বলেছেন (সুনান তিরমিজী হা/২৬৯৯)
এ আম্বাসা সম্পর্কে আবু হাতিম বলেনঃ كان يضع الحديث "তিনি হাদীস জাল করতেন" যেমনভাবে যাহাবীর "আল-মীযান" গ্রন্থে এসেছে। অতঃপর তিনি তার কতিপয় হাদীস উল্লেখ করেছেন, এটি সেগুলোর একটি। ইবনু হিব্বান (২/১৬৮)
( খ )ইমাম তিরমিজী মুহাম্মদ ইবনু জাজান কে বলেছেন মাতরূক রাবী (সুনান তিরমিজী হা/২৬৯৯)
আম্বাসা ইবনু আব্দুর রহমান কুরাশী এবং তার শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু যাযান। আর তারা উভয়েই মাতরূক এবং মিথ্যা বর্ণনা করার দোষে দোষী। [এ সম্পর্কে শাইখ আলবানী আরো বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। দেখুন মূল গ্রন্থ।] (সিলসিলাতু যায়ীফাহ হাঃ/১৫০৭)
( গ ) অলীদ ইবনু মুসলিম প্রসিদ্ধ মুদাল্লিস রাবী তিনি আন ’ শব্দ দ্বারা হাদীস বর্ণনা করেছেন । কাজেইমুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী হাদীসটিকে জাল বলেছেন ( সিলসিলাতু যায়ীফাহ হাঃ ২২৫৬ )
ওয়ালীদ আন আন শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেছেন। কারণ তিনি 'তাদলীসুত তাসবিয়া' করতেন। যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি যখন আন আন্ শব্দ দ্বারা ইবনু জুরায়েজ ও আওযাঈ হতে বর্ণনা করেন তখন তার বর্ণনা নির্ভরযোগ্য নয়। কারণ তিনি মিথ্যুকদের থেকে তাদলীস করতেন। তবে যখন ثنا 'আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন' এ শব্দ ব্যবহার করেছেন তখন তার হাদীস গ্রহণযোগ্য।
আর একজন মুদাল্লিসের হাদীছ তখনই গ্রহণ করা যাবে যখন উক্ত রাবী ‘হাদ্দাছানা’ বা ‘সামি’তু’ বা ‘আখবারানা’ বা ‘ছানা’ বলবে অথবা উক্ত রাবীর বর্ণিত হাদীছের শাওয়াহিদ ছহীহ হাদীছ থাকবে। কিন্তু উক্ত হাদীছের কোন শাওয়াহিদ ছহীহ হাদীছ নেই। যেগুলো রয়েছে তা সবই দুর্বল।
প্রকাশ থাকে যে , এলাকায় কলেরা ইত্যাদি অসুখ দেখা দিলে কিছু দেশি হজুর গ্রাম বেঁধে দেওয়ার কাজ করেন । কয়েকজন যুবককে সাথে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় রাস্তায় তাকবীর ধ্বনিত করেন , হাত তুলে সমবেতভাবে দুআ করেন এবং গ্রামের প্রতিটি প্রবেশ পথে আযান দেওয়া করান । এভাবে বেশ কয়েক দিন চলতে থাকে । তাদের বিশ্বাস এভাবে গ্রাম থেকে বালা মুসীবত দূর হয়ে যায় এবং সে মুসীবত দীর্ঘদিন আর গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না ।
শরীয়তে এসবের কোনাে দলীল নেই রসূলুল্লাহ ( সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম ) এবং সাহাবা ( রাযিয়াল্লাহু আনহু ) হতে এসবের কোনাে দলীল বর্ণিত হয়নি ।
আযান প্রসঙ্গে:- ২ নং হাদীছ গ্রামের আজাব মুক্ত করে)
حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ شُعَيْبٍ الْبَصْرِيُّ، قَالَ: نا بَكْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْقُرَشِيُّ، قَالَ: نا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَعْدِ بْنِ عُمَارَةَ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ K: " إِذَا أُذِّنَ فِي قَرْيَةٍ أَمَّنَهَا اللَّهُ مِنْ عَذَابِهِ ذَلِكَ الْيَوْمَ
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেনঃ যখন কোন গ্রামে আযান দেওয়া হয় সে দিন গ্রামে আযাব থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
তাখরীজঃ মু’জামুল কাবির হা/ ৭৪৫; তাবরানী মুজামুল আওসাত হাদিস নং ৩৬৭১)
তাহকীকঃ হাদীসটি যঈফ
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেনঃ হাদীসটি যঈফ। (সিলসিলাহ যঈফা হা/২২০৭)
ইমাম হাজার আসকালানী রহ বলেছেন
সনদে আব্দুর রহমান বিন সা’দ বিন আম্মারা আছেন তিনি যঈফ রাবি (তাকরীবুত তাহজীব ২০২)
ইমাম হায়সামী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন, فِيهِ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَعْدِ بْنِ عَمَّارٍ ضَعَّفَهُ ابْنُ مَعِينٍ " ‘এতে আব্দুর রহমান বিন সাদ বিন আম্মার নামক রাবী আছেন যাকে ইবনু মাঈন যঈফ বলেছেন’ (মাজমাউয যাওয়ায়েদ হাদীস নং ১৮৪৭)।
ইমাম বুখারী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন:
ফিহি নাজরুন (তারিখুল কবীর ১/৩/২৮৭; জারাহ ওয়াত তাদীল ২/২/২৩৭)
ইমাম বুখারী (রহ) যখন ফিহি নজর এই শব্দ ব্যবহার করেন তখন এর দ্বারা কি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে সে বিষয়ে মুহাদ্দিছগণের মন্তব্য নীচে পেশ করা হল ।
ইমাম যাহাবী ( রহঃ ) বলেন :
আর ইমাম বুখারীর (রহ :) অভ্যাস হচ্ছে তিনি যখন কোন রাবীর ক্ষেত্রে ‘ফিহি নজর শব্দ ব্যবহার করেন। তখন তার উদ্দেশ্য হয় ‘ মুত্তাহাম 'অথবা‘ মযবুত নয়'। এই রাবী তার নিকটে যঈফের চেয়েও দুর্বলতর।
ইমাম যাহাবী মুকিজা ১/৮৩)
একই মন্তব্য করেছেন ইমাম ইবনু কাছীর ও হাফিয ইরাকৃী (রহ:) উলূমুল হাদীস ১০৬ পৃষ্ঠা)
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেনঃ যঈফুল হাদীস। (তাকরীবুত তাহজীব, সিলসিলাহ যঈফা হা/৯৬৪)।
ইমাম বাইহাকী (৩/২০৬) একটি হাদীস আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন তাতে আদুর রহমান ইবনু সা’আদ ইবনে আম্মারা রয়েছেন, তিনি যঈফ।
অতএব হাদীসটি কোনভাবেই সহি নাই
জ্বিন শয়তানের দেখে আযানঃ তৃতীয় হাদীস :
সুহাইল ইবনু আবী স্বালেহ ( রাহেমাহুল্লাহ ) কর্তৃক বর্ণিত তিনি বলেন , রসূলুল্লাহ ( সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম ) বলেছেন
«إِذَا تَغَوَّلَتْ لَكُمُ الْغُولُ فَنَادَوْا بِالْأَذَانِ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ إِذَا سَمِعَ النِّدَاءَ أَدْبَرَ وَلَهُ حُصَاصٌ»
যখন জ্বিন , শয়তান তােমাদেরকে পথভুলাবার চেষ্টা করবে কিংবা তােমাদের সামনে বিভিন্ন রুপে আবর্তন করবে , তখন আযান দিতে আরম্ভ করাে , নিশ্চয় শয়তান যখন আযান শুনে হাওয়া নির্গত করতে করতে পলায়ন করে
( তাবারানীর মুজামুল আউসাত হাঃ ৭৪৩৬ সূত্র )
তাহকীক :- নিতান্তই যঈফ কারণ সূত্রে রয়েছে আদী ইবনুল ফাযল নামক রাবী, উলামাগণ যার হাদীস গ্রহণ করা ছেড়ে দিয়েছিলেন । সে আবু স্বালেহ বিশ্বস্ত তাবেয়ীর কথাকে হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছে ( সিলসিলাতুল আহাদীসস যঈফ ২ /২৯৫ )
( খ ) জাবের ইবনু আব্দিল্লাহ কর্তৃক একই অর্থে হাদীস বর্ণিত হয়েছে
যদি পিশাচ (ভূত) সমস্যা সৃষ্টি করে তাহলে তোমরা আযান দেয়া শুরু কর।
(মুস্বান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ হাঃ ২৯৭৪১ সূত্র যয়ীফ ) ।
তাহকীকঃ যঈফ
আল্লামাহ নাসিরুদ্দিন আলবানী (রহ) তাহকীকী সম্পূর্ণ দিলাম।
হাদীসটি ইবনু আবী শাইবাহ "আল-মুসান্নাফ" গ্রন্থে হাঃ ২৯৭৪১) ইয়াযীদ ইবনু হারূন হতে, তিনি হিশাম ইবনু হাসসান হতে, তিনি আল-হাসান হতে, তিনি জাবের ইবনু আদিল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসটি বিভিন্ন সনদে এসেছে
এ সনদেই ইমাম আহমাদ (১৪৬৭২) ও আবু ইয়ালা (৫৯৩-৫৯৪) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। অনুরূপভাবে ভিন্ন দুটি সনদে ইমাম আহমাদ (১৩৮৬৫) ও ইবনুস সুন্নী "আমালুল ইয়াওম অল-লাইলাহ" গ্রন্থে (৫১৭) হিশাম ইবনু হাসসান হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসটি ইবনু খুযাইমাহ তার “সহীহ” গ্রন্থে (১/২৫৬;১) ও আবু দাউদ (২৫৭০) ভিন্ন ভাষায় বর্ণনা করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য হলেও এর সনদটি দুর্বল। কারণ এর সমস্যা হচ্ছে সনদে বিচ্ছিন্নতা। কারণ হাসান বাসরী আর জাবের (রাঃ) এর মধ্যে সাক্ষাৎ ঘটেনি। তিনি তার থেকে শুনেননি যেমনটি আবু হাতিম ও বায্যার বলেছেন। বাযযার অন্য দুটি সূত্রে হাসান বাসরী কর্তৃক সা'দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করে বলেছেনঃ হাসান বাসরী সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে কিছু শ্রবণ করেছেন বলে আমরা জানিনা।
হায়সামী বলেনঃ বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য কিন্তু হাসান বাসরী সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে আমার ধারণা মতে শ্রবণ করেননি।
এর আরেকটি খুবই দুর্বল শাহেদ উমার ইবনু সুব্হ সূত্রে মুকাতিল ইবনু হিব্বান হতে ... বর্ণিত হয়েছে। এ ইবনু সুব্হ মুনকারুল হাদীস। হাফিয যাহাবী তার সম্পর্কে বলেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্য নন, নিরাপদও নন। ইবনু হিব্বান তার সম্পর্কে বলেনঃ তিনি হাদীস জালকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
তবে এই মর্মে একটি সহীহ হাদীস আছে
حَدَّثَنِي أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ - حَدَّثَنَا رَوْحٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، قَالَ أَرْسَلَنِي أَبِي إِلَى بَنِي حَارِثَةَ - قَالَ - وَمَعِي غُلاَمٌ لَنَا - أَوْ صَاحِبٌ لَنَا - فَنَادَاهُ مُنَادٍ مِنْ حَائِطٍ بِاسْمِهِ - قَالَ - وَأَشْرَفَ الَّذِي مَعِي عَلَى الْحَائِطِ فَلَمْ يَرَ شَيْئًا فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لأَبِي فَقَالَ لَوْ شَعَرْتُ أَنَّكَ تَلْقَى هَذَا لَمْ أُرْسِلْكَ وَلَكِنْ إِذَا سَمِعْتَ صَوْتًا فَنَادِ بِالصَّلاَةِ فَإِنِّي سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " إِنَّ الشَّيْطَانَ إِذَا نُودِيَ بِالصَّلاَةِ وَلَّى وَلَهُ حُصَاصٌ " .
সুহায়ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে বানু হারিসাহ্ গোত্রের কাছে পাঠালেন। রাবী বলেন, আমার সাথে একটি বালক অথবা আমার এক সাথী ছিল। একটি বাগানের ভিতর থেকে তার নাম ধরে কে যেন তাকে ডাকল। আমার সাথী বাগানের মধ্যে দৃষ্টি নিক্ষেপ করল, কিন্তু কিছুই দেখতে পেল না। আমি এ ঘটনা আমার পিতার কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, আমি যদি জানতে পারতাম যে তুমি এমন অবস্থার মুখোমুখি হবে তবে তোমাকে পাঠাতাম না, কিন্তু যখন তুমি সেরূপ কোন শব্দ শুনতে পাও তখন সলাতের অনুরূপ আযান দিবে। কেননা আমি আবূ হুরায়রা্(রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ যখন সলাতের আযান দেয়া হয় শাইতান বায়ু ছাড়তে ছাড়তে তাড়াতাড়ি পালিয়ে যায়। (ই. ফা. ৭৪২, ই. সে. ৭৫৫) সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭৪৪
মৃত ব্যক্তির কানে আযান : চতুর্থ
এর সমর্থনে হাদীস গ্রন্থে সহীহ হাসান হাদীস তাে দুরে থাক কোনাে যয়ীফ অথবা জাল হাদীসও বর্ণিত হয়নি ।
এ ব্যাপারে আল্লামাহ ইবনুল উসাইমীন (রাহেমাহুল্লাহ) এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন –
الأذان في أذن الميت بدعة
মৃত ব্যক্তির কানে আযান দেওয়া বিদআত ( ইবনি উসাইমীনের মাজমূ ' ফাতাওয়া আঁরাসাইল ১৭ / ৭৩ )
অতএব যারা এটা আমল করেন তাদের উচিত দলিল উপস্থাপন করা যতক্ষণ দলিল পেশ করতে না পাচ্ছেন ততক্ষণ এটা বিদআত হিসেবে বিবেচিত হয়
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের এ দীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছে যা এতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত।
সহীহ: বুখারী ২৬৯৭, মুসলিম ১৭১৮, আবূ দাঊদ ৪৬০৬, ইবনু মাজাহ্ ১৪, আহমাদ ২৬০৩৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ২৬, ইরওয়া ৮৮, সহীহ আল জামি‘ ৫৯৭০, সহীহাহ্ ২৩০২, সহীহ আত্ তারগীব ৪৯; গয়াতুল মারাম ৫, ইরওয়াউল গালীল ৮৮।
নবজাতকের কানে আজান : ৬)
উবাইদুল্লাহ ইবনু আবূ রাফি (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত তিনি বলেন,
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَذَّنَ فِي أُذُنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ حِينَ وَلَدَتْهُ فَاطِمَةُ بِالصَّلَاةِ
ফাতিমাহ (রাঃ) যখন আলী (রাঃ)-এর পুত্র হাসান (রাঃ)-কে প্রসব করলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কানে সালাতের আযান ন্যায় আযান দিয়েছিলেন।
সুনান আবু দাউদ হা/৫১০৫, সুনান তিরমিযী হা/১৫১৪, মুসনাদে আহমদ হা/২৩৮৬৯, মুসনাদ আবু দাউদ তাইলেসি হা/১০১৩)
তাহকীকঃ -
ইমাম নাছিরুদ্দীন আলবানী, হাদীছটি প্রথমে হাসান বলেছিলেন। (নাছিরুদ্দীন আলবানী, তাহক্বীক্ব আবু দাউদ হা/৫১০৫)
পরবর্তী সময়ে রুজু করে যঈফ বলেছেন তারাজুয়াত ১/৭)
হাদীছটি শায়খ আলবানী (রহঃ) ইতিপূর্বে ‘হাসান’ (আবুদাঊদ হা/৫১০৫, ইরওয়া হা/১১৭৩) হিসাবে গণ্য করলেও পরবর্তীতে তিনি এটিকে ‘যঈফ’ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন,
আমি ইতিপূর্বে আবু রাফে‘ বর্ণিত এ হাদীছটি ‘হাসান’ বললেও এখন আমার নিকটে বর্ণনাটি যঈফ হিসাবে স্পষ্ট হয়েছে (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১২১)।
তিনি বলেন, ...অতএব আমি সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানের কানে আযান দেওয়ার বিধান সম্পর্কে আমার পূর্ববর্তী বক্তব্য থেকে ফিরে আসলাম (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৬২৩)।
এ ব্যাপারে অপর মুহাক্কিক শু‘আইব আরনাউত্বও ঐক্যমত পোষণ করেছেন (তাহকীক মুসনাদে আহমাদ হা/২৭২৩০)। অতএব ‘যঈফ’ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ার পর আযান দেওয়ার বিষয়টি আর আমলযোগ্য থাকে না।
শু’আইব আরনাউত্ব বলেন, এর সানাদ যঈফ কারণ অসীম ইবনু উবাইদুল্লাহ যঈফ (শু’আইব আরনাউত্ব, তাহক্বীক্ব আবু দাউদ হা/৫১০৫)
হাফিয যুবাইর আলী যাঈ বলেন, যঈফ কারণ অসীম ইবনু উবাইদুল্লাহ যঈফ । (যুবাইর আলী যাঈ, তাহক্বীক্ব সুনান তিরমিযী হা/১৫১৪)
খারাপ স্বভাবের ব্যক্তি এবং পশুর কানে আযান -7)
( ক ) হুসাইন ইবনু আলী ( রাযিয়াল্লাহু আনহু ) বর্ণনা করা হয়েছে
من ساء خلقه من انسان أو دابة فأذنوا في أذنيه
মানুষ অথবা পশুর মধ্যে যার স্বভাব চরিত্র খারাপ হবে। তার উভয় কানে আযান দাও (আবু মানসূর দায়লামীর মুসনাদুল ফিরদাউস ৩/৫৫৮ হাঃ ৫৭৫২)
আমি উক্ত হাদীসের কোনাে সূত্র খুঁজে পেলাম না । মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী যয়ীফ বলেছেন । সিলসিলাহযায়ীফাহ ১/১৩০ হাঃ ৫২র ব্যাখ্যায় )।
(খ) রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম) হতে বর্ণনা করা হয়েছে (বর্ণনাকারীর নাম পাওয়া যায়নি ) তিনি বলেছেন –
إذا اتممت على أخدم داثه أو ساء ځل زوجته أو أحد من أهل بيته فليؤيرن في أذنه .
যদি তােমাদের কেউ নিজের পশুকে নিজের জন্য কঠিন পায় কিংবা তার স্ত্রী অথবা তার বাড়ির কোনাে লােকের চরিত্র নােংরা হয় , তবে তার কানে আযান দেওয়া দরকার (এহয়ায়ুউলুমিদ দ্বীন ২ /২১৯ , ত্বাবাকাতুশ শাফেয়ীয়্যাহ আল কুবরা ৬ / ৩১৯ , পাটনির তাযকিরাতুল মাউযুয়াত ১ /১২৮ ।
কেউ এর কোনাে সূত্র বর্ণনা করেনি এবং সিলসিলাতুযায়ীফাতে আলবানী হাদীসটি বর্ণনা করে একে জাল বলেছেন হাঃ ৫২) । তার মানে এ মর্মে বর্ণিত সমস্ত হাদীস জাল ।
9 নম্বর হাদীসঃ
৪০৩। আদম (আঃ) হিন্দুস্থানে অবতরণ করার সময় স্থানটিকে ভয়াবহ মনে করলেন, তখন জিবরীল অবতরণ করে আযানের মাধ্যমে ডাকলেনঃ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (দু’বার) আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ (দু’বার)। আদম বললেনঃ মুহাম্মাদ কে? তিনি (জিবরীল) বললেনঃ তিনি নাবীকূলের মধ্য হতে আপনার শেষ সন্তান।
হাদীসটি দুর্বল।
এটি ইবনু আসাকির (২/৩২৩/২) মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল্লাহ ইবনে সুলায়মান হতে, তিনি আলী ইবনু বাহরাম কুফী হতে ... বর্ণনা করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ হাদীসটির সনদ দুর্বল। আলী ইবনু বাহরামকে আমি চিনি না। মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল্লাহ ইবনে সুলায়মান নামে দু’জন বর্ণনাকারী আছেন। একজন কুফী, ইবনু মান্দা তার সম্পর্কে বলেনঃ তিনি মাজহুল। আর দ্বিতীয়জন হচ্ছেন খুরাসানী; যাহাবী তাকে হাদীস জাল করার দোষে দোষী করেছেন। বাহ্যিকভাবে বুঝা যায় যে, এখানে আছেন প্রথমজন।
এ হাদীসটি দুর্বল তা সত্ত্বেও ২৫ নাম্বারে বর্ণিত জাল হাদীসের চেয়ে শক্তিশালী। কারণ সে হাদীসটি প্রমাণ করে যে আদম (আঃ) দুনিয়াতে অবতরণ করার পূর্বে জান্নাতেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে চিনেছেন। অথচ এটি প্রমাণ করছে যে, তিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দুনিয়াতে অবতরণের পরেও চিনেননি। এ দুর্বল হাদীস পূর্বের জাল হাদীসটি বাতিল তার প্রমাণও বহন করছে।
যে সমস্ত জায়গায় আযান দেওয়া শরীয়ত সম্মত:
1) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য
2) জুম্মার ওসমানি আজান শর্তসাপেক্ষে
(3) সাহারী খাওয়ার সময় হলে আযান ।
(4) জিন - শয়তানকে বিভিন্ন রূপে আবতীর্ত হতে দেখেতাকে দুর করার উদ্দেশ্যে আযান ।
তাছাড়া ১৮টি আযানই এমন যার ভিত্তি কোনাে যয়ীফ অথবা । জাল হাদীসের উপর আছে কিংবা ভিত্তিহীন । তবে একটি আযান । ব্যাপারে উলামাগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে এবং তার উপর কিছু আলেমের আমলও আছে । তা হল নবজাতকে কানে আযান । কিন্তু এ ব্যাপারেও সঠিক কথা হল , এ আযান দেওয়া যাবে না ।
-ব্রাদার রাহুল হোসেন রুহুল আমিন
পশ্চিমবঙ্গ বাংলা ভারত
আযান প্রসঙ্গে প্রথম হাদীসের তাহাকীক:
কলেরা, কোনাে দুর্যোগ, আপদ - বিপদ বা ঝড় তুফান চলাকালীন আযান :
حَدَّثَنَا دَاوُدُ بْنُ رُشَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ عَنْبَسَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زَاذَانَ، عَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا وَقَعَتْ كَبِيرَةٌ، أَوْ هَاجَتْ رِيحٌ مُظْلِمَةٌ، فَعَلَيْكُمْ بِالتَّكْبِيرِ، فَإِنَّهُ يُجَلِّي الْعَجَاجَ الْأَسْوَدَ»
[حكم حسين سليم أسد] : إسناده ضعيف
জাবের (রাযিয়াল্লাহু আনহু)হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম) বলেছেন : যখন কোনাে দুর্যোগ নেমে আসবে , কিংবা প্রবল ঝড় উঠবে , তখন তােমাদের তাকবীর বলা দরকার , কেননা এটা গর্জনকারী কালাে ঝড়কে দূর করে দেয়
( মুসনাদ আবী ইয়ালা হাঃ ১৯৪৭ , ইবনুসুন্নির আমালুল ইয়াউমি অললাইলাহ ২৮৪ , আল কামেলী ফী যুয়াফায়ির রিজাল ৭ /৪২৫ ) ।
তাহকীক : হুসেন সালীম আসাদ আদ দারানী যয়ীফ বলেছেন তাহকীক মুসনাদ আবী ইয়ালা হা/১৯৪৭)
এর সূত্র তিনটি কারণে যয়ীফ ।
( ক )
সূত্রে আছে আনবাস ইবনু আব্দুর রহমান আল কুরাশী । যার ব্যাপারে ইমাম বুখারী বলেন , উলামাগণ এর হাদীস গ্রহণ করা ছেড়ে দিয়েছিলেন ( তারীখুল কাবীর ১৬৯ ) ।
ইমাম তিরমিজী এবং ইমাম বুখারী আনবাস ইবনু আব্দুর রহমান কে যঈফ বলেছেন (সুনান তিরমিজী হা/২৬৯৯)
এ আম্বাসা সম্পর্কে আবু হাতিম বলেনঃ كان يضع الحديث "তিনি হাদীস জাল করতেন" যেমনভাবে যাহাবীর "আল-মীযান" গ্রন্থে এসেছে। অতঃপর তিনি তার কতিপয় হাদীস উল্লেখ করেছেন, এটি সেগুলোর একটি। ইবনু হিব্বান (২/১৬৮)
( খ )ইমাম তিরমিজী মুহাম্মদ ইবনু জাজান কে বলেছেন মাতরূক রাবী (সুনান তিরমিজী হা/২৬৯৯)
আম্বাসা ইবনু আব্দুর রহমান কুরাশী এবং তার শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু যাযান। আর তারা উভয়েই মাতরূক এবং মিথ্যা বর্ণনা করার দোষে দোষী। [এ সম্পর্কে শাইখ আলবানী আরো বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। দেখুন মূল গ্রন্থ।] (সিলসিলাতু যায়ীফাহ হাঃ/১৫০৭)
( গ ) অলীদ ইবনু মুসলিম প্রসিদ্ধ মুদাল্লিস রাবী তিনি আন ’ শব্দ দ্বারা হাদীস বর্ণনা করেছেন । কাজেইমুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী হাদীসটিকে জাল বলেছেন ( সিলসিলাতু যায়ীফাহ হাঃ ২২৫৬ )
ওয়ালীদ আন আন শব্দ দ্বারা বর্ণনা করেছেন। কারণ তিনি 'তাদলীসুত তাসবিয়া' করতেন। যাহাবী “আল-মীযান” গ্রন্থে বলেনঃ তিনি যখন আন আন্ শব্দ দ্বারা ইবনু জুরায়েজ ও আওযাঈ হতে বর্ণনা করেন তখন তার বর্ণনা নির্ভরযোগ্য নয়। কারণ তিনি মিথ্যুকদের থেকে তাদলীস করতেন। তবে যখন ثنا 'আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন' এ শব্দ ব্যবহার করেছেন তখন তার হাদীস গ্রহণযোগ্য।
আর একজন মুদাল্লিসের হাদীছ তখনই গ্রহণ করা যাবে যখন উক্ত রাবী ‘হাদ্দাছানা’ বা ‘সামি’তু’ বা ‘আখবারানা’ বা ‘ছানা’ বলবে অথবা উক্ত রাবীর বর্ণিত হাদীছের শাওয়াহিদ ছহীহ হাদীছ থাকবে। কিন্তু উক্ত হাদীছের কোন শাওয়াহিদ ছহীহ হাদীছ নেই। যেগুলো রয়েছে তা সবই দুর্বল।
প্রকাশ থাকে যে , এলাকায় কলেরা ইত্যাদি অসুখ দেখা দিলে কিছু দেশি হজুর গ্রাম বেঁধে দেওয়ার কাজ করেন । কয়েকজন যুবককে সাথে নিয়ে গ্রামের রাস্তায় রাস্তায় তাকবীর ধ্বনিত করেন , হাত তুলে সমবেতভাবে দুআ করেন এবং গ্রামের প্রতিটি প্রবেশ পথে আযান দেওয়া করান । এভাবে বেশ কয়েক দিন চলতে থাকে । তাদের বিশ্বাস এভাবে গ্রাম থেকে বালা মুসীবত দূর হয়ে যায় এবং সে মুসীবত দীর্ঘদিন আর গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না ।
শরীয়তে এসবের কোনাে দলীল নেই রসূলুল্লাহ ( সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম ) এবং সাহাবা ( রাযিয়াল্লাহু আনহু ) হতে এসবের কোনাে দলীল বর্ণিত হয়নি ।
আযান প্রসঙ্গে:- ২ নং হাদীছ গ্রামের আজাব মুক্ত করে)
حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ شُعَيْبٍ الْبَصْرِيُّ، قَالَ: نا بَكْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْقُرَشِيُّ، قَالَ: نا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَعْدِ بْنِ عُمَارَةَ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ K: " إِذَا أُذِّنَ فِي قَرْيَةٍ أَمَّنَهَا اللَّهُ مِنْ عَذَابِهِ ذَلِكَ الْيَوْمَ
আনাস বিন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেনঃ যখন কোন গ্রামে আযান দেওয়া হয় সে দিন গ্রামে আযাব থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
তাখরীজঃ মু’জামুল কাবির হা/ ৭৪৫; তাবরানী মুজামুল আওসাত হাদিস নং ৩৬৭১)
তাহকীকঃ হাদীসটি যঈফ
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেনঃ হাদীসটি যঈফ। (সিলসিলাহ যঈফা হা/২২০৭)
ইমাম হাজার আসকালানী রহ বলেছেন
সনদে আব্দুর রহমান বিন সা’দ বিন আম্মারা আছেন তিনি যঈফ রাবি (তাকরীবুত তাহজীব ২০২)
ইমাম হায়সামী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন, فِيهِ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ سَعْدِ بْنِ عَمَّارٍ ضَعَّفَهُ ابْنُ مَعِينٍ " ‘এতে আব্দুর রহমান বিন সাদ বিন আম্মার নামক রাবী আছেন যাকে ইবনু মাঈন যঈফ বলেছেন’ (মাজমাউয যাওয়ায়েদ হাদীস নং ১৮৪৭)।
ইমাম বুখারী রহিমাহুল্লাহ বলেছেন:
ফিহি নাজরুন (তারিখুল কবীর ১/৩/২৮৭; জারাহ ওয়াত তাদীল ২/২/২৩৭)
ইমাম বুখারী (রহ) যখন ফিহি নজর এই শব্দ ব্যবহার করেন তখন এর দ্বারা কি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে সে বিষয়ে মুহাদ্দিছগণের মন্তব্য নীচে পেশ করা হল ।
ইমাম যাহাবী ( রহঃ ) বলেন :
আর ইমাম বুখারীর (রহ :) অভ্যাস হচ্ছে তিনি যখন কোন রাবীর ক্ষেত্রে ‘ফিহি নজর শব্দ ব্যবহার করেন। তখন তার উদ্দেশ্য হয় ‘ মুত্তাহাম 'অথবা‘ মযবুত নয়'। এই রাবী তার নিকটে যঈফের চেয়েও দুর্বলতর।
ইমাম যাহাবী মুকিজা ১/৮৩)
একই মন্তব্য করেছেন ইমাম ইবনু কাছীর ও হাফিয ইরাকৃী (রহ:) উলূমুল হাদীস ১০৬ পৃষ্ঠা)
শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেনঃ যঈফুল হাদীস। (তাকরীবুত তাহজীব, সিলসিলাহ যঈফা হা/৯৬৪)।
ইমাম বাইহাকী (৩/২০৬) একটি হাদীস আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন তাতে আদুর রহমান ইবনু সা’আদ ইবনে আম্মারা রয়েছেন, তিনি যঈফ।
অতএব হাদীসটি কোনভাবেই সহি নাই
জ্বিন শয়তানের দেখে আযানঃ তৃতীয় হাদীস :
সুহাইল ইবনু আবী স্বালেহ ( রাহেমাহুল্লাহ ) কর্তৃক বর্ণিত তিনি বলেন , রসূলুল্লাহ ( সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম ) বলেছেন
«إِذَا تَغَوَّلَتْ لَكُمُ الْغُولُ فَنَادَوْا بِالْأَذَانِ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ إِذَا سَمِعَ النِّدَاءَ أَدْبَرَ وَلَهُ حُصَاصٌ»
যখন জ্বিন , শয়তান তােমাদেরকে পথভুলাবার চেষ্টা করবে কিংবা তােমাদের সামনে বিভিন্ন রুপে আবর্তন করবে , তখন আযান দিতে আরম্ভ করাে , নিশ্চয় শয়তান যখন আযান শুনে হাওয়া নির্গত করতে করতে পলায়ন করে
( তাবারানীর মুজামুল আউসাত হাঃ ৭৪৩৬ সূত্র )
তাহকীক :- নিতান্তই যঈফ কারণ সূত্রে রয়েছে আদী ইবনুল ফাযল নামক রাবী, উলামাগণ যার হাদীস গ্রহণ করা ছেড়ে দিয়েছিলেন । সে আবু স্বালেহ বিশ্বস্ত তাবেয়ীর কথাকে হাদীসের অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছে ( সিলসিলাতুল আহাদীসস যঈফ ২ /২৯৫ )
( খ ) জাবের ইবনু আব্দিল্লাহ কর্তৃক একই অর্থে হাদীস বর্ণিত হয়েছে
যদি পিশাচ (ভূত) সমস্যা সৃষ্টি করে তাহলে তোমরা আযান দেয়া শুরু কর।
(মুস্বান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ হাঃ ২৯৭৪১ সূত্র যয়ীফ ) ।
তাহকীকঃ যঈফ
আল্লামাহ নাসিরুদ্দিন আলবানী (রহ) তাহকীকী সম্পূর্ণ দিলাম।
হাদীসটি ইবনু আবী শাইবাহ "আল-মুসান্নাফ" গ্রন্থে হাঃ ২৯৭৪১) ইয়াযীদ ইবনু হারূন হতে, তিনি হিশাম ইবনু হাসসান হতে, তিনি আল-হাসান হতে, তিনি জাবের ইবনু আদিল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসটি বিভিন্ন সনদে এসেছে
এ সনদেই ইমাম আহমাদ (১৪৬৭২) ও আবু ইয়ালা (৫৯৩-৫৯৪) হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। অনুরূপভাবে ভিন্ন দুটি সনদে ইমাম আহমাদ (১৩৮৬৫) ও ইবনুস সুন্নী "আমালুল ইয়াওম অল-লাইলাহ" গ্রন্থে (৫১৭) হিশাম ইবনু হাসসান হতে বর্ণনা করেছেন।
হাদীসটি ইবনু খুযাইমাহ তার “সহীহ” গ্রন্থে (১/২৫৬;১) ও আবু দাউদ (২৫৭০) ভিন্ন ভাষায় বর্ণনা করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য হলেও এর সনদটি দুর্বল। কারণ এর সমস্যা হচ্ছে সনদে বিচ্ছিন্নতা। কারণ হাসান বাসরী আর জাবের (রাঃ) এর মধ্যে সাক্ষাৎ ঘটেনি। তিনি তার থেকে শুনেননি যেমনটি আবু হাতিম ও বায্যার বলেছেন। বাযযার অন্য দুটি সূত্রে হাসান বাসরী কর্তৃক সা'দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করে বলেছেনঃ হাসান বাসরী সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে কিছু শ্রবণ করেছেন বলে আমরা জানিনা।
হায়সামী বলেনঃ বর্ণনাকারীগণ নির্ভরযোগ্য কিন্তু হাসান বাসরী সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃ) হতে আমার ধারণা মতে শ্রবণ করেননি।
এর আরেকটি খুবই দুর্বল শাহেদ উমার ইবনু সুব্হ সূত্রে মুকাতিল ইবনু হিব্বান হতে ... বর্ণিত হয়েছে। এ ইবনু সুব্হ মুনকারুল হাদীস। হাফিয যাহাবী তার সম্পর্কে বলেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্য নন, নিরাপদও নন। ইবনু হিব্বান তার সম্পর্কে বলেনঃ তিনি হাদীস জালকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
তবে এই মর্মে একটি সহীহ হাদীস আছে
حَدَّثَنِي أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، - يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ - حَدَّثَنَا رَوْحٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، قَالَ أَرْسَلَنِي أَبِي إِلَى بَنِي حَارِثَةَ - قَالَ - وَمَعِي غُلاَمٌ لَنَا - أَوْ صَاحِبٌ لَنَا - فَنَادَاهُ مُنَادٍ مِنْ حَائِطٍ بِاسْمِهِ - قَالَ - وَأَشْرَفَ الَّذِي مَعِي عَلَى الْحَائِطِ فَلَمْ يَرَ شَيْئًا فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لأَبِي فَقَالَ لَوْ شَعَرْتُ أَنَّكَ تَلْقَى هَذَا لَمْ أُرْسِلْكَ وَلَكِنْ إِذَا سَمِعْتَ صَوْتًا فَنَادِ بِالصَّلاَةِ فَإِنِّي سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " إِنَّ الشَّيْطَانَ إِذَا نُودِيَ بِالصَّلاَةِ وَلَّى وَلَهُ حُصَاصٌ " .
সুহায়ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমার পিতা আমাকে বানু হারিসাহ্ গোত্রের কাছে পাঠালেন। রাবী বলেন, আমার সাথে একটি বালক অথবা আমার এক সাথী ছিল। একটি বাগানের ভিতর থেকে তার নাম ধরে কে যেন তাকে ডাকল। আমার সাথী বাগানের মধ্যে দৃষ্টি নিক্ষেপ করল, কিন্তু কিছুই দেখতে পেল না। আমি এ ঘটনা আমার পিতার কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বললেন, আমি যদি জানতে পারতাম যে তুমি এমন অবস্থার মুখোমুখি হবে তবে তোমাকে পাঠাতাম না, কিন্তু যখন তুমি সেরূপ কোন শব্দ শুনতে পাও তখন সলাতের অনুরূপ আযান দিবে। কেননা আমি আবূ হুরায়রা্(রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ যখন সলাতের আযান দেয়া হয় শাইতান বায়ু ছাড়তে ছাড়তে তাড়াতাড়ি পালিয়ে যায়। (ই. ফা. ৭৪২, ই. সে. ৭৫৫) সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৭৪৪
মৃত ব্যক্তির কানে আযান : চতুর্থ
এর সমর্থনে হাদীস গ্রন্থে সহীহ হাসান হাদীস তাে দুরে থাক কোনাে যয়ীফ অথবা জাল হাদীসও বর্ণিত হয়নি ।
এ ব্যাপারে আল্লামাহ ইবনুল উসাইমীন (রাহেমাহুল্লাহ) এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন –
الأذان في أذن الميت بدعة
মৃত ব্যক্তির কানে আযান দেওয়া বিদআত ( ইবনি উসাইমীনের মাজমূ ' ফাতাওয়া আঁরাসাইল ১৭ / ৭৩ )
অতএব যারা এটা আমল করেন তাদের উচিত দলিল উপস্থাপন করা যতক্ষণ দলিল পেশ করতে না পাচ্ছেন ততক্ষণ এটা বিদআত হিসেবে বিবেচিত হয়
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের এ দীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছে যা এতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত।
সহীহ: বুখারী ২৬৯৭, মুসলিম ১৭১৮, আবূ দাঊদ ৪৬০৬, ইবনু মাজাহ্ ১৪, আহমাদ ২৬০৩৩, সহীহ ইবনু হিব্বান ২৬, ইরওয়া ৮৮, সহীহ আল জামি‘ ৫৯৭০, সহীহাহ্ ২৩০২, সহীহ আত্ তারগীব ৪৯; গয়াতুল মারাম ৫, ইরওয়াউল গালীল ৮৮।
নবজাতকের কানে আজান : ৬)
উবাইদুল্লাহ ইবনু আবূ রাফি (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত তিনি বলেন,
عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَذَّنَ فِي أُذُنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ حِينَ وَلَدَتْهُ فَاطِمَةُ بِالصَّلَاةِ
ফাতিমাহ (রাঃ) যখন আলী (রাঃ)-এর পুত্র হাসান (রাঃ)-কে প্রসব করলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কানে সালাতের আযান ন্যায় আযান দিয়েছিলেন।
সুনান আবু দাউদ হা/৫১০৫, সুনান তিরমিযী হা/১৫১৪, মুসনাদে আহমদ হা/২৩৮৬৯, মুসনাদ আবু দাউদ তাইলেসি হা/১০১৩)
তাহকীকঃ -
ইমাম নাছিরুদ্দীন আলবানী, হাদীছটি প্রথমে হাসান বলেছিলেন। (নাছিরুদ্দীন আলবানী, তাহক্বীক্ব আবু দাউদ হা/৫১০৫)
পরবর্তী সময়ে রুজু করে যঈফ বলেছেন তারাজুয়াত ১/৭)
হাদীছটি শায়খ আলবানী (রহঃ) ইতিপূর্বে ‘হাসান’ (আবুদাঊদ হা/৫১০৫, ইরওয়া হা/১১৭৩) হিসাবে গণ্য করলেও পরবর্তীতে তিনি এটিকে ‘যঈফ’ হিসাবে উল্লেখ করে বলেন,
আমি ইতিপূর্বে আবু রাফে‘ বর্ণিত এ হাদীছটি ‘হাসান’ বললেও এখন আমার নিকটে বর্ণনাটি যঈফ হিসাবে স্পষ্ট হয়েছে (সিলসিলা যঈফাহ হা/৬১২১)।
তিনি বলেন, ...অতএব আমি সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানের কানে আযান দেওয়ার বিধান সম্পর্কে আমার পূর্ববর্তী বক্তব্য থেকে ফিরে আসলাম (আলবানী, সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, অডিও ক্লিপ নং ৬২৩)।
এ ব্যাপারে অপর মুহাক্কিক শু‘আইব আরনাউত্বও ঐক্যমত পোষণ করেছেন (তাহকীক মুসনাদে আহমাদ হা/২৭২৩০)। অতএব ‘যঈফ’ হিসাবে প্রমাণিত হওয়ার পর আযান দেওয়ার বিষয়টি আর আমলযোগ্য থাকে না।
শু’আইব আরনাউত্ব বলেন, এর সানাদ যঈফ কারণ অসীম ইবনু উবাইদুল্লাহ যঈফ (শু’আইব আরনাউত্ব, তাহক্বীক্ব আবু দাউদ হা/৫১০৫)
হাফিয যুবাইর আলী যাঈ বলেন, যঈফ কারণ অসীম ইবনু উবাইদুল্লাহ যঈফ । (যুবাইর আলী যাঈ, তাহক্বীক্ব সুনান তিরমিযী হা/১৫১৪)
খারাপ স্বভাবের ব্যক্তি এবং পশুর কানে আযান -7)
( ক ) হুসাইন ইবনু আলী ( রাযিয়াল্লাহু আনহু ) বর্ণনা করা হয়েছে
من ساء خلقه من انسان أو دابة فأذنوا في أذنيه
মানুষ অথবা পশুর মধ্যে যার স্বভাব চরিত্র খারাপ হবে। তার উভয় কানে আযান দাও (আবু মানসূর দায়লামীর মুসনাদুল ফিরদাউস ৩/৫৫৮ হাঃ ৫৭৫২)
আমি উক্ত হাদীসের কোনাে সূত্র খুঁজে পেলাম না । মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী যয়ীফ বলেছেন । সিলসিলাহযায়ীফাহ ১/১৩০ হাঃ ৫২র ব্যাখ্যায় )।
(খ) রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি অ সাল্লাম) হতে বর্ণনা করা হয়েছে (বর্ণনাকারীর নাম পাওয়া যায়নি ) তিনি বলেছেন –
إذا اتممت على أخدم داثه أو ساء ځل زوجته أو أحد من أهل بيته فليؤيرن في أذنه .
যদি তােমাদের কেউ নিজের পশুকে নিজের জন্য কঠিন পায় কিংবা তার স্ত্রী অথবা তার বাড়ির কোনাে লােকের চরিত্র নােংরা হয় , তবে তার কানে আযান দেওয়া দরকার (এহয়ায়ুউলুমিদ দ্বীন ২ /২১৯ , ত্বাবাকাতুশ শাফেয়ীয়্যাহ আল কুবরা ৬ / ৩১৯ , পাটনির তাযকিরাতুল মাউযুয়াত ১ /১২৮ ।
কেউ এর কোনাে সূত্র বর্ণনা করেনি এবং সিলসিলাতুযায়ীফাতে আলবানী হাদীসটি বর্ণনা করে একে জাল বলেছেন হাঃ ৫২) । তার মানে এ মর্মে বর্ণিত সমস্ত হাদীস জাল ।
9 নম্বর হাদীসঃ
৪০৩। আদম (আঃ) হিন্দুস্থানে অবতরণ করার সময় স্থানটিকে ভয়াবহ মনে করলেন, তখন জিবরীল অবতরণ করে আযানের মাধ্যমে ডাকলেনঃ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (দু’বার) আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ (দু’বার)। আদম বললেনঃ মুহাম্মাদ কে? তিনি (জিবরীল) বললেনঃ তিনি নাবীকূলের মধ্য হতে আপনার শেষ সন্তান।
হাদীসটি দুর্বল।
এটি ইবনু আসাকির (২/৩২৩/২) মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল্লাহ ইবনে সুলায়মান হতে, তিনি আলী ইবনু বাহরাম কুফী হতে ... বর্ণনা করেছেন।
আমি (আলবানী) বলছিঃ হাদীসটির সনদ দুর্বল। আলী ইবনু বাহরামকে আমি চিনি না। মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল্লাহ ইবনে সুলায়মান নামে দু’জন বর্ণনাকারী আছেন। একজন কুফী, ইবনু মান্দা তার সম্পর্কে বলেনঃ তিনি মাজহুল। আর দ্বিতীয়জন হচ্ছেন খুরাসানী; যাহাবী তাকে হাদীস জাল করার দোষে দোষী করেছেন। বাহ্যিকভাবে বুঝা যায় যে, এখানে আছেন প্রথমজন।
এ হাদীসটি দুর্বল তা সত্ত্বেও ২৫ নাম্বারে বর্ণিত জাল হাদীসের চেয়ে শক্তিশালী। কারণ সে হাদীসটি প্রমাণ করে যে আদম (আঃ) দুনিয়াতে অবতরণ করার পূর্বে জান্নাতেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে চিনেছেন। অথচ এটি প্রমাণ করছে যে, তিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দুনিয়াতে অবতরণের পরেও চিনেননি। এ দুর্বল হাদীস পূর্বের জাল হাদীসটি বাতিল তার প্রমাণও বহন করছে।
যে সমস্ত জায়গায় আযান দেওয়া শরীয়ত সম্মত:
1) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য
2) জুম্মার ওসমানি আজান শর্তসাপেক্ষে
(3) সাহারী খাওয়ার সময় হলে আযান ।
(4) জিন - শয়তানকে বিভিন্ন রূপে আবতীর্ত হতে দেখেতাকে দুর করার উদ্দেশ্যে আযান ।
তাছাড়া ১৮টি আযানই এমন যার ভিত্তি কোনাে যয়ীফ অথবা । জাল হাদীসের উপর আছে কিংবা ভিত্তিহীন । তবে একটি আযান । ব্যাপারে উলামাগণের মধ্যে মতভেদ রয়েছে এবং তার উপর কিছু আলেমের আমলও আছে । তা হল নবজাতকে কানে আযান । কিন্তু এ ব্যাপারেও সঠিক কথা হল , এ আযান দেওয়া যাবে না ।
0 Comments
Thanks for your comment