#Campúsian-19
#MSRM-2
#Qn: তাকদির আগে থেকে নির্ধারিত।মানুষ জান্নাতে যাবে নাকি জাহান্নামে যাবে।কেউ যদি হিন্দু বা নাস্তিক হওয়ার জন্য জাহান্নামে যায়, এটা তো সেই ব্যক্তির দোষ না। এটা সৃষ্টিকর্তারই দোষ।
তাহলে মানুষের বিচার হবে কেন? যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াহ পৌঁছেনি তাদের কী হবে?
#Ans: আরবি ‘তাকদির’(تقدير) শব্দটি ‘কদর’(قدر) শব্দের সাথে সম্পর্কিত। শাব্দিকভাবে ‘কদর’ এর অর্থ – পরিমাপ, পরিমাণ, মর্যাদা, শক্তি। আর ‘তাকদির’ এর অর্থ – পরিমাপ করা, নির্ধারণ করা, সীমা নির্ণয় করা ইত্যাদি। [1]
তাকদির হচ্ছে, সর্বজ্ঞানী হিসাবে আল্লাহ তা’আলার পূর্ব জ্ঞান ও হিকমতের দাবি অনুযায়ী সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য সব কিছু নির্ধারণ।[2]
আল-কুরআন আমাদেরকে জানাচ্ছে যে, মহান আল্লাহ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত সব কিছুর ব্যাপারে জানেন। বলা হয়েছে –
“নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের গোপন রহস্য আল্লাহর কাছেই রয়েছে।...” [3]
“তুমি কি জানো না যে, আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা সম্পর্কে আল্লাহ জানেন? এসব বিষয় একটি কিতাবে সংরক্ষিত আছে। নিশ্চয়ই এটা আল্লাহর পক্ষে অতি সহজ।” [4]
“অদৃশ্য জগতের চাবিকাঠি তাঁরই নিকট রয়েছে; তিনি ছাড়া আর কেউঁই তা জ্ঞাত নয়। পৃথিবীতে ও সমুদ্রের সব কিছুই তিনি অবগত আছেন, তাঁর অবগতি ব্যতীত বৃক্ষ হতে একটি পাতাও ঝরে পড়ে না এবং ভূ-পৃষ্ঠের অন্ধকারের মধ্যে একটি দানাও পতিত হয় না, এমনিভাবে কোনো সরস ও নিরস বস্তুও পতিত হয় না; সমস্ত কিছুই সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। ” [5]
“এগুলো অদৃশ্যের খবর, যা ওহীর মাধ্যমে আমি তোমার [মুহাম্মাদ(ﷺ)] কাছে প্রেরণ করি। তুমি তাদের কাছে ছিলে না, যখন তারা ষড়যন্ত্র করে নিজেদের সিদ্ধান্ত স্থির করে ফেলেছিলো।” [6]
“তিনিই সেই সত্তা, যিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন যথোচিত। যেদিন তিনি বলবেন, ‘হয়ে যাও!’ তখন হয়ে যাবে। তাঁর কথা সত্য। যেদিন শিঙ্গায় ফুঁৎকার করা হবে, সেদিন আধিপত্য হবে তাঁরই। তিনি অদৃশ্য বিষয়ে এবং প্রত্যক্ষ বিষয়ে জ্ঞাত। তিনিই প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। ” [7]
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছেই কিয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং গর্ভাশয়ে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না, আগামীকাল সে কী উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না, কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।” [8]
“তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।” [9]
#️⃣#️⃣তাকদিরের সাথে সম্পর্কিত জটিল একটা প্রশ্ন#️⃣#️⃣
#Qn: মুসলিমরা মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। আবার হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানরা নিজ নিজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। আবার অনেকের কাছে হয়তো আদৌ ইসলামের দাওয়াতই পৌঁছেনি। এদের কী হবে?
মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণকারীরা মুসলিম আর অমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণকারীরা অমুসলিম; মানুষের পরিণতি কি তবে জন্মের ভিত্তিতে?
#Ans: ইসলাম এসব ব্যাপারে খুব পরিষ্কারভাবে আমাদেরকে অবহিত করেছে।
যারা মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছে, তারা জন্মের জন্য জান্নাতে যাবে না; বরং তাদের বিশ্বাস ও কর্মের জন্য জান্নাতে যাবে। অনেক মানুষ আছে, যারা মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়েও সলাত(নামায) আদায় করে না, অথচ সলাত ঈমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী। [11] আবার অনেকেই মুসলিম পরিবারে জন্মেও ইসলাম ত্যাগ করে। মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া অবশ্যই জান্নাতের গ্যারান্টি নয়। আর যে অমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছে, তার জন্য সেটি একটি পরীক্ষা। সে যদি সঠিক ও অবিকৃতভাবে ইসলামের দাওয়াত পায়, তাহলে ইসলাম গ্রহণ করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য হবে।
#️⃣#️⃣ কুরআন থেকে প্রমাণ:#️⃣#️⃣
১)তিনি (আল্লাহ) সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন—কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ। তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়।” [12]
২)“...অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোনো হেদায়েত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোনো ভয় আসবে, না (কোনো কারণে) তারা চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে। আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী; তারা অনন্তকাল সেখানে থাকবে ।” [13]
(মূল পয়েন্ট)
এ প্রসঙ্গে ইবন আবিল ইজ্জ হানাফী(র) {১৩৩১-১৩৯০ খ্রি./৭৩১-৭৯২ হি.} বলেছেন, “...কেউ যদি সত্যের প্রমাণ সন্ধান ছাড়াই অন্ধভাবে বাবা-মা’কে অনুসরণ করে এবং তার সামনে প্রকাশ হয়ে যাওয়া সত্যকে অগ্রাহ্য করে, তাহলে সে প্রকৃতপক্ষে নিজ খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করছে। এ থেকে সতর্ক করে আল্লাহ বলেছেন, “এবং যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা অনুসরণ কর, তখন তারা বলেঃ বরং আমরা ওরই অনুসরণ করব যা আমাদের পিতৃ-পুরুষগণ হতে প্রাপ্ত হয়েছি; যদিও তাদের পিতৃ-পুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিলনা এবং তারা সুপথগামীও ছিলনা।” (সুরা বাকারাহ ২:১৭০) এই একই ব্যাপার মুসলিম পরিবারে জন্মানো অনেকের জন্যও সত্য। তারা বিশ্বাস ও কর্মের ক্ষেত্রে তাদের বাপ-দাদাদেরকেই অনুসরণ করে যায়। এগুলো যদি ভুলও হয় তবুও তারা সে ব্যাপারে সচেতন হয় না। এরা পরিবেশের দ্বারা মুসলিম, পছন্দের দ্বারা নয়। যখন এমন কাউকে কবরে জিজ্ঞেস করা হবেঃ “কে তোমার প্রভু?” সে বলবেঃ “হায়, আমি জানি না। আমি জানি না। আমি লোকজনকে কিছু জিনিস বলতে শুনতাম এবং আমিও তাই বলতাম।” [14]
#️⃣#️⃣অনেকের কাছে তো ইসলামের দাওয়াতই পৌঁছায় না।#️⃣#️⃣
#Qn: পৃথিবীতে অনেক দুর্গম জায়গা আছে যেখানে হয়তো ইসলামের দাওয়াত যায়নি। আবার অনেকে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার জন্য (যেমন বার্ধক্য, জ্ঞান লোপ হওয়া) ইসলামের দাওয়াত থেকে বঞ্চিত হয়।
#Ans: এসব ব্যাপারেও ইসলাম আমাদেরকে সুস্পষ্টভাবে অভিহিত করে। আল্লাহ কারো প্রতি সামান্যতম অন্যায় করবেন না। এটি আল্লাহর সিফাত বা গুণ নয় যে তিনি বান্দার প্রতি বিন্দুমাত্রও জুলুম করেন।
কুরআন হাদীস থেকে প্রমাণ:
১)নিশ্চয়ই আল্লাহ কারো প্রতি বিন্দুমাত্রও জুলুম করেন না; আর যদি তা (মানুষের কর্ম) সৎকর্ম হয়, তবে তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং নিজের পক্ষ থেকে বিপুল সওয়াব দান করেন।” [15]
২)“...বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের ওপর কোনো অন্যায় করেননি, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর অত্যাচার করছিলো।” [16]
৩)“তারপর এদের প্রত্যেককে নিজ নিজ পাপের কারণে আমি পাকড়াও করেছিলাম; তাদের কারো ওপর আমি পাথরকুচির ঝড় পাঠিয়েছি, কাউকে পাকড়াও করেছে বিকট আওয়াজ, কাউকে আবার মাটিতে দাবিয়ে দিয়েছি আর কাউকে পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছি। আল্লাহ এমন নন যে, তাদের উপর জুলুম করবেন বরং তারা নিজেরা নিজেদের ওপর জুলুম করতো।” [17]
৪)“আর যখন তোমার পালনকর্তা বনী আদমের পৃষ্ঠদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে এবং নিজের উপর তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করালেন, ‘আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই?’ তারা বললো, ‘অবশ্যই, আমরা অঙ্গীকার করছি।’ আবার না কিয়ামতের দিন বলতে শুরু করো যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।” [18]
৫)“কোনো রাসুল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।” [19]
৬)“চার প্রকারের লোক কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার সাথে কথোপকথন করবে। প্রথম হলো বধির লোক, যে কিছুই শুনতে পায় না। দ্বিতীয় হলো সম্পূর্ণ নির্বোধ ও পাগল লোক, যে কিছুই জানে না। তৃতীয় হলো অত্যন্ত বৃদ্ধ, যার জ্ঞান লোপ পেয়েছে। চতুর্থ হলো ঐ ব্যক্তি, যে এমন যুগে জীবন যাপন করেছে যে যুগে কোনো নবী আগমন করেননি বা কোনো ধর্মীয় শিক্ষাও বিদ্যমান ছিলো না। বধির লোকটি বলবে, “ইসলাম এসেছিলো, কিন্তু আমার কানে কোনো শব্দ পৌঁছেনি”। পাগল বলবে, “ইসলাম এসেছিলো বটে, কিন্তু আমার অবস্থা তো এই ছিলো যে শিশুরা আমার ওপর গোবর নিক্ষেপ করতো।” বৃদ্ধ বলবে, “ইসলাম এসেছিলো, কিন্তু আমার জ্ঞান সম্পূর্ণ লোপ পেয়েছিলো, আমি কিছুই বুঝতাম না।” আর যে লোকটির কাছে কোনো রাসুল আসেনি এবং সে তাঁর কোনো শিক্ষাও পায়নি সে বলবে, “আমার কাছে কোনো রাসুল আসেননি এবং আমি কোনো সত্যও পাইনি। সুতরাং আমি আমল করতাম কীভাবে?” তাদের এসব কথা শুনে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে নির্দেশ দেবেন—“আচ্ছা যাও, জাহান্নামে লাফিয়ে পড়ো।” রাসুল (ﷺ) বলেন, “যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! যদি তারা আল্লাহর আদেশ মেনে নেয় এবং জাহান্নামে লাফিয়ে পড়ে, তবে জাহান্নামের আগুন তাদের জন্য ঠাণ্ডা আরামদায়ক হয়ে যাবে।” অন্য বিবরণে আছে যে, যারা জাহান্নামে লাফিয়ে পড়বে তা তাদের জন্য হয়ে যাবে ঠাণ্ডা ও শান্তিদায়ক। আর যারা বিরত থাকবে, তাদের হুকুম অমান্যের কারণে টেনে হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।”
ইমাম ইবন জারির (রহ.) এই হাদিসটি বর্ণনা করার পরে আবু হুরাইরা (রা.) এর নিম্নের ঘোষণাটি উল্লেখ করেছেন, “এর সত্যতা প্রমাণ হিসেবে তোমরা ইচ্ছা করলে আল্লাহ তা‘আলার وَ مَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولًا (কোনো রাসুল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।) বাক্যও পাঠ করতে পারো।” [20],[21]
#️⃣#️⃣কেয়ামতে মেধাহীন, অজ্ঞদের বিচার#️⃣#️⃣
“কিয়ামতের দিন অজ্ঞ ও বোধহীন লোকেরা নিজেদের বোঝা কোমরে বহন করে নিয়ে আসবে এবং আল্লাহ্ তা’আলার সামনে ওজর পেশ করে বলবে, “আমাদের কাছে কোনো রাসুল আসেননি এবং আপনার কোনো হুকুমও পৌঁছেনি। এরূপ হলে আমরা মন খুলে আপনার কথা মেনে চলতাম।”
তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, “আচ্ছা, এখন যা হুকুম করবো তা মানবে তো?” উত্তরে তারা বলবে, “হাঁ, অবশ্যই বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেবো।” তখন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলবেন, “আচ্ছা যাও, জাহান্নামের পার্শ্বে গিয়ে তাতে প্রবেশ করো।” তারা তখন অগ্রসর হয়ে জাহান্নামের পার্শ্বে পৌঁছে যাবে। সেখানে গিয়ে যখন ওর উত্তেজনা, শব্দ এবং শাস্তি দেখবে তখন ফিরে আসবে এবং বলবে, “হে আল্লাহ! আমাদেরকে এর থেকে রক্ষা করুন।” আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, “দেখো, তোমরা অঙ্গীকার করেছো যে, আমার হুকুম মানবে। আবার এই নাফরমানী কেন?” তারা উত্তরে বলবে, “আচ্ছা, এবার মানবো।” অতঃপর তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নেয়া হবে। তারপর এরা ফিরে এসে বলবে, “হে আল্লাহ, আমরা তো ভয় পেয়ে গেছি। আমাদের দ্বারা তো আপনার এই আদেশ মান্য করা সম্ভব নয়।” তখন প্রবল প্রতাপান্বিত আল্লাহ বলবেন, “তোমরা নাফরমানি করেছো। সুতরাং এখন লাঞ্ছনার সাথে জাহান্নামি হয়ে যাও।” রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন যে, “প্রথমবার তারা যদি আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী জাহান্নামে লাফিয়ে পড়তো, তবে তার অগ্নি তাদের জন্য ঠাণ্ডা হয়ে যেতো এবং তাদের দেহের একটি লোমও পুড়তো না।” [22]
🎲🎲 সিদ্ধান্ত:
আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে কুরআন ও হাদিস থেকে আমরা যা জানতে পারি তা থেকে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে—যারা আদৌ ইসলামের দাওয়াত পাবে না, তাদের প্রতি পরকালে যে পরীক্ষা হবে তা মোটেও তাদের সাধ্যাতীত কিছু হবে না। অনেক লোকই আগুনের সেই পরীক্ষাতেও নিজ যোগ্যতায় পাশ করে যাবে এবং অনেকে নিজ অযোগ্যতায় ব্যর্থ হবে।
“আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না; সে তা-ই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তা-ই তার ওপর বর্তায় যা সে করে।…” [23]
ইসলাম বলে যে—মানবজাতির কাছ থেকে তাদের জন্মের পূর্বেই আল্লাহ তাঁর একত্ববাদের সাক্ষ্য নিয়েছিলেন। আল্লাহ আদি যুগ থেকে নবী-রাসুল প্রেরণ করে মানুষকে একত্ববাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করেছেন। শেষ নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) এর মাধ্যমে এই ধর্মের প্রচার আজও আছে। যুগে যুগে প্রত্যেকের কাছেই আল্লাহর পক্ষ থেকে দূত এসেছে। যারা তাদের নিজ যুগের নবীকে মেনেছে বা মানবে, তারা মুক্তি পাবে। আর যাদের কাছে আদৌ এই আহ্বান পৌঁছেনি, তাদের ফয়সালার কথা ইতিমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।
“(শুরুতে) সকল মানুষ একই জাতির অন্তর্ভুক্ত ছিলো। তারপর (যখন তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলো, তখন) আল্লাহ তা‘আলা নবীদের পাঠালেন সুসংবাদদাতা ও ভীতিপ্রদর্শনকারী হিসাবে। আর তাঁদের সাথে অবর্তীণ করলেন সত্যসম্বলিত কিতাব, যাতে তারা মানুষের মধ্যে সেসব বিষয়ে মীমাংসা করে দেন, যা নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ ছিলো। আর (পরিতাপের বিষয় হলো,) অন্য কেউ নয়; বরং যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিলো, তারাই সমুজ্জ্বল নিদর্শনাবলি আসার পরও কেবল পারস্পরিক রেষারেষির কারণে তাতেই (সেই কিতাবেই) মতভেদ সৃষ্টি করলো। তারপর যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদেরকে তারা যে বিষয়ে মতভেদ করতো, সে বিষয়ে নিজ ইচ্ছায় সঠিক পথে পৌঁছে দেন। আর আল্লাহ যাকে চান, তাকে সরল-সঠিক পথে পৌছে দেন।” [24]
“আমি তোমার [মুহাম্মাদ (ﷺ)] পূর্বে পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের মধ্যে রাসুল প্রেরণ করেছি।” [25]
“আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসুল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুত(আল্লাহ ব্যতিত যার উপাসনা করা হয়) থেকে নিরাপদ থাকো। এরপর তাদের মধ্যে কিছুসংখ্যককে আল্লাহ হিদায়াত করেছেন এবং কিছু সংখ্যকের জন্যে বিপথগামিতা অবধারিত হয়ে গেলো। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো মিথ্যারোপকারীদের কীরূপ পরিণতি হয়েছে।” [26]
“যে-কেউ সৎপথে চলে, তারা নিজের মঙ্গলের জন্যেই সৎপথে চলে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তারা নিজের অমঙ্গলের জন্যেই পথভ্রষ্ট হয়। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কোনো রাসুল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।” [27]
“তোমরা কুফর অবলম্বন করলে নিশ্চিত জেনে রেখো, আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন; তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য কুফর পছন্দ করেন না। আর যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, তাহলে তিনি তা তোমাদের জন্য পছন্দ করবেন। আর কোনো ভারবাহী অন্যের বোঝা বহন করবে না। তারপর তোমাদের প্রভুর নিকটেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন, তখন তিনি তোমাদের জানিয়ে দেবেন যা তোমরা করে যাচ্ছিলে। নিঃসন্দেহে অন্তরের ভেতরে যা আছে, সে সন্বন্ধে তিনি সম্যক অবগত।” [28]
এ ব্যাপারে প্রসিদ্ধ ফতোয়ার ওয়েবসাইট islamqa থেকে শায়খ সালিহ আল মুনাজ্জিদ (হাফিজাহুল্লাহ) এর এই ফতোয়াটি দেখা যেতে পারে:--
“The fate of kuffaar who did not hear the message of Islam” [29]
#️⃣#️⃣অমুসলিমদের মারা যাওয়া শিশু সন্তানদের পরিণতি কী হবে?#️⃣#️⃣
প্রত্যেক মানুষকেই স্রষ্টা আল্লাহ সঠিক ফিতরাত বা স্বভাবধর্মের ওপর সৃষ্টি করেন। আর সেটি হচ্ছে একত্ববাদ, স্রষ্টার প্রতি পূর্ণাঙ্গ আত্মসমর্পণ বা ইসলাম। পরবর্তীতে মানুষ পিতামাতা ও পারিপার্শ্বিক প্রভাবে বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাস লাভ করে। বিভিন্ন অমুসলিম সম্প্রদায় (হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, ইহুদি) এর শিশু সন্তানের ব্যাপারে ইসলাম যা বলে—
#দলীল-১: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, “প্রতিটি নবজাতকই জন্মলাভ করে ফিতরাতের ওপর। এরপর তার মা-বাপ তাকে ইহুদি বা খ্রিষ্টান বা অগ্নিপূজারীরূপে গড়ে তোলে। যেমন, চতুষ্পদ পশু একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাদের মধ্যে কোনো (জন্মগত) কানকাটা দেখতে পাও?” পরে আবু হুরায়রা (রা.) তিলাওয়াত করলেন—
فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لاَ تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ
“আল্লাহর দেয়া ফিতরাতের (অর্থাৎ, ইসলাম) অনুসরণ করো, যে ফিতরাতের ওপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। এটাই সরল সুদৃঢ় দ্বীন।” (সুরা রূম: ৩০:৩০) [30]
#দলীল-২: সামুরা ইবন জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) প্রায়ই তাঁর সাহাবীদেরকে (রা.) বলতেন, তোমাদের কেউ কোনো স্বপ্ন দেখেছো কি? রাবি বলেন, যাদের বেলায় আল্লাহর ইচ্ছা, তারা রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে স্বপ্ন বর্ণনা করতো।
তিনি [রাসুলুল্লাহ (ﷺ)] একদিন সকালে আমাদের বললেন, গত রাতে আমার কাছে দু’জন আগন্তুক আসলেন। তাঁরা আমাকে ওঠালেন। আর আমাকে বললো, চলুন। ......তাঁরা আমাকে বললেন, চলুন, চলুন। তিনি বলেন, আমরা চললাম এবং একটা সজীব শ্যামল বাগানে উপনীত হলাম, যেখানে বসন্তের হরেক রকম ফুলের কলি রয়েছে। আর বাগানের মাঝে আসমানের থেকে অধিক উঁচু দীর্ঘকায় একজন পুরুষ রয়েছে, যার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছি না। এমনিভাবে তার চতুষ্পার্শে এতো বিপুল সংখ্যক বালক-বালিকা দেখলাম যে, এতো বেশি আর কখনো আমি দেখিনি। আমি [মুহাম্মাদ (ﷺ)] তাদেরকে বললাম, উনি কে? এরা কারা? তাঁরা আমাকে বললেন, চলুন, চলুন। ...... আর ঐ দীর্ঘকায় ব্যক্তি যিনি বাগানে ছিলেন, তিনি হলেন, ইবরাহিম (আ.)। আর তাঁর আশেপাশের বালক-বালিকারা হলো ঐসব শিশু, যারা ফিতরাত (স্বভাবধর্মের) ওপর মৃত্যুবরণ করেছে। তিনি বলেন, তখন কিছু সংখ্যক মুসলিম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (ﷺ)! মুশরিকদের(বহু ঈশ্বরবাদী/পৌত্তলিক) শিশু সন্তানরাও কি? তখন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও। ...” [31]
#দলীল-৩: রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “প্রত্যেক শিশু ফিতরাতের ওপর জন্মগ্রহণ করে থাকে।” জনগণ তখন উচ্চস্বরে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, “মুশরিকদের শিশুরাও কি?” উত্তরে তিনি বলেন, “মুশরিকদের শিশুরাও।” [32]
#দলীল-৪: রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন যে, “মুশরিকদের শিশুদেরকে জান্নাতবাসীদের খাদেম বানানো হবে। “ [33]
#দলীল-৫: হাসনা বিন্ত মুআবিয়া (র.) বানী সুরাইম (র.) হতে বলেন যে, তাঁর চাচা তাঁকে বলেছেনঃ আমি জিজ্ঞেস করলাম, “হে আল্লাহর রাসুল (ﷺ), জান্নাতে কারা কারা যাবে? জবাবে তিনি বলেনঃ ‘শহীদ, শিশু এবং জীবন্ত প্রোথিত মেয়ে শিশুরা।'[34]
#দলীল-৬: এ সংক্রান্ত বিভিন্ন হাদিস পর্যালোচনা করে সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইবন হাজার আসকালানী(র.) এর অভিমত হচ্ছেঃ প্রাপ্তবয়স্ক হবার আগে অমুসলিমদের যে শিশুসন্তানরা মারা যায়, তারা জান্নাতী হবে। [35]
#সিদ্ধান্ত: শিশু অবস্থায় মারা গেলে সেটি তাদের জন্য ওজর হিসাবে গণ্য হতে পারে। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় যে কোনো মানুষের বুদ্ধি ও বিবেক থাকে। এই সময়ে যদি তার কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছায় এবং সে যদি তা গ্রহণ না করে, তাহলে হিন্দু, খ্রিষ্টান বা নাস্তিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করা তার জন্য অজুহাত হতে পারে না। নিজ কর্মের জন্যই সে জাহান্নামের উপযুক্ত হয়। তার জন্য নির্ধারিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হবার দ্বারা। পৃথিবীতে বহু মানুষ এই পরীক্ষায় কৃতকার্য হচ্ছে, অমুসলিম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছে।
🎯🎯 ডিসিশন: উপরের আলোচনা থেকে আমরা নিম্নোক্ত ডিসিশন পেলাম:
❏ দুনিয়াতে যার নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেছে এবং সে তা অস্বীকার করেছে, পরকালে তার আর কোনো ওজর পেশ করার সুযোগ নেই। যাদের নিকট দুনিয়াতে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেনি, পরকালে তাদের এক প্রকারের পরীক্ষা হবে এবং তাতে উত্তীর্ণ ব্যক্তিরা মুক্তিলাভ করবে। সকলের প্রতি ন্যায়বিচার করা হবে, কারো প্রতি সামান্যতম জুলুমও করা হবে না।
❏ মানুষকে চেতনা, বিবেক ও বিচারবুদ্ধি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ মানুষকে বিবেক-বুদ্ধি এইজন্য দিয়েছেন যেন মানুষ তা ব্যবহার করে। সুনির্দিষ্টভাবে সাহাবীদের—“ তাহলে আমরা কাজ-কর্ম ছেড়ে কি ভরসা করে বসে থাকব না??”—প্রশ্নের উত্তরে রাসুল (ﷺ) এটি করতে নিষেধ করেছেন এবং সাধ্যানুযায়ী সৎকর্মের উপদেশ দিয়েছেন।
❏ মানুষ যদি এরপরেও তাকদিরের ওপর দোষ দিয়ে বসে থাকে ও সৎকর্ম না করে, তবে এজন্য আল্লাহ মোটেও দায়ী নন। কারণ তাকে তো তার তাকদির জানিয়ে দেয়া হয়নি। কে তাকে বলে দিয়েছে যে সে জাহান্নামেই যাবে? বরং এই বসে থাকাটাই তার জন্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
এবং আল্লাহই ভালো জানেন।
তথ্যসূত্রঃ
1️⃣ইবনু ফারিস, মু’জামু মাকায়িসিল লুগাহ ৫/৫৬;
‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা’ – খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর(র); পৃষ্ঠা ৩৩৯
2️⃣‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের আকীদা’ – শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল উসাইমিন(র), পৃষ্ঠা ৮২ (islamhouse); ডাউনলোড লিঙ্কঃ http://bit.ly/2jsTGEP অথবা https://goo.gl/aBwSFN
3️⃣আল-কুরআন, সুরা আন-নাহল ১৬:৭৭
4️⃣আল-কুরআন, সুরা হাজ ২২:৭০
5️⃣আল-কুরআন, সুরা আন‘আম ৬:৫৯
6️⃣আল-কুরআন, সুরা ইউসুফ ১২:১০২
7️⃣আল-কুরআন, সুরা আন‘আম ৬:৭৩
8️⃣আল-কুরআন, সুরা লুকমান ৩১:৩৪
9️⃣আল-কুরআন, সুরা তাগাবুন ৬৪:১৮
1️⃣0️⃣সুনান তিরমিজি, হাদিস: ২৬১৯-২৬২৩
1️⃣1️⃣আল-কুরআন, সুরা মুলক ৬৭:২
1️⃣2️⃣আল-কুরআন, সুরা বাকারাহ ২:৩৮-৩৯
1️⃣3️⃣‘শারহ আকিদা আত ত্বহাওয়ী’ – ইবন আবিল ইজ্জ হানাফী(র); পৃষ্ঠা ১৯০(ইংরেজি অনুবাদ)
1️⃣4️⃣আল-কুরআন, সুরা নিসা ৪:৪০
1️⃣5️⃣আল-কুরআন, সুরা আলি ইমরান ৩:১১৭
1️⃣6️⃣আল-কুরআন, সূরা আনকাবুত ২৯:৪০
1️⃣7️⃣আল-কুরআন, সুরা আ‘রাফ ৭:১৭২
1️⃣8️⃣আল-কুরআন, সুরা বনী ইসরাইল (ইসরা) ১৭:১৫
1️⃣9️⃣মুসনাদ আহমাদ, তাফসির ইবন কাসির {তাফসির পাবলিকেশন কমিটি (ড. মুজিবুর রহমান)}, সুরা বনী ইসরাইল ১৫ নং আয়াতের তাফসির
2️⃣0️⃣ইমাম মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহইয়া যাহলী (র) কর্তৃক বর্ণিত একটি রেওয়াতে নবীশূন্য যুগের লোক, পাগল ও শিশুর কথাও এসেছে
2️⃣1️⃣মুসনাদ বাযযার, ইমাম ইবন কাসির (রহ.) এর মতে ইমাম ইবন হিব্বান (রহ.) নির্ভরযোগ্যরূপে বর্ণনা করেছেন; তাফসির ইবন কাসির {তাফসির পাবলিকেশন কমিটি (ড. মুজিবুর রহমান)}, সুরা বনী ইসরাইল ১৫ নং আয়াতের তাফসির, ইয়াহইয়া ইবন মুঈন (রহ.) ও নাসাঈ (রহ.) এর মতে এতে (সনদের ব্যাপারে) ভয়ের কোনো কারণ নেই।
2️⃣2️⃣আল-কুরআন, সুরা বাকারাহ ২:২৮৬
2️⃣3️⃣আল-কুরআন, সুরা বাকারাহ ২:২১৩
2️⃣4️⃣আল-কুরআন, সুরা হিজর ১৫:১০
2️⃣5️⃣আল-কুরআন, সুরা নাহল ১৬:৩৬
2️⃣6️⃣আল-কুরআন, সুরা ইসরা ১৭:১৫
2️⃣7️⃣আল-কুরআন, সুরা যুমার ৩৯:৭
2️⃣8️⃣https://islamqa.info/en/1244
2️⃣9️⃣সহীহ বুখারি, হাদিস: ৯৫৩১
3️⃣0️⃣সহীহ বুখারি; খণ্ড ৯, অধ্যায় ৮৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়), হাদিস নং ১৭১
3️⃣1️⃣সহীহ বুখারি, হাদিস নং : ৭০৪৭
3️⃣2️⃣তাবারানি, মুজাম আল কাবির ৭/২৪৪, আল মাজমা ৭/২১৯, তাফসির ইবন কাসির, সুরা বনী ইসরাইলের ১৫ নং আয়াতের তাফসির
3️⃣3️⃣আহমাদ ৫/৫৮, আল মাজমা ৭/২১৯, তাফসির ইবন কাসির, সুরা বনী ইসরাইলের ১৫ নং আয়াতের তাফসির
3️⃣4️⃣"They will be from amongst the dwellers of Jannah (paradise) according to the nature of Islam that every child is created upon. In the famous Hadith, Rasoolullah Sallahu alaihi wasallam has said: ‘ Every born child is created upon the fitrah (natural religion of Islam in which there is inclination to Tawhid, the oneness of Allah). Thereafter, his/her parents make him Jew, Chistian or a Fire-Worshipper.’
From this Hadith we learn that every child is born Muslim, so according to it, if a child dies before reaching the age of understanding, then he should be granted entry into Paradise. Hafiz Ibn Hajar, one of the leading Hadith Scholars of all tme is inclined towards this view. He states: ‘ The Hadith mentioned above was narrated by the Prophet before anything concrete was revealed to him about the dying children of the non-believers. This is why the Prophet left it to Allah’s knowledge and didn’t make a judgement."
From: "Do All Kids Go To Heaven - IslamQA Hanafi"
http://islamqa.org/hanafi/muftisays/9358
#MSRM-2
#Qn: তাকদির আগে থেকে নির্ধারিত।মানুষ জান্নাতে যাবে নাকি জাহান্নামে যাবে।কেউ যদি হিন্দু বা নাস্তিক হওয়ার জন্য জাহান্নামে যায়, এটা তো সেই ব্যক্তির দোষ না। এটা সৃষ্টিকর্তারই দোষ।
তাহলে মানুষের বিচার হবে কেন? যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াহ পৌঁছেনি তাদের কী হবে?
#Ans: আরবি ‘তাকদির’(تقدير) শব্দটি ‘কদর’(قدر) শব্দের সাথে সম্পর্কিত। শাব্দিকভাবে ‘কদর’ এর অর্থ – পরিমাপ, পরিমাণ, মর্যাদা, শক্তি। আর ‘তাকদির’ এর অর্থ – পরিমাপ করা, নির্ধারণ করা, সীমা নির্ণয় করা ইত্যাদি। [1]
তাকদির হচ্ছে, সর্বজ্ঞানী হিসাবে আল্লাহ তা’আলার পূর্ব জ্ঞান ও হিকমতের দাবি অনুযায়ী সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য সব কিছু নির্ধারণ।[2]
আল-কুরআন আমাদেরকে জানাচ্ছে যে, মহান আল্লাহ অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত সব কিছুর ব্যাপারে জানেন। বলা হয়েছে –
“নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের গোপন রহস্য আল্লাহর কাছেই রয়েছে।...” [3]
“তুমি কি জানো না যে, আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা সম্পর্কে আল্লাহ জানেন? এসব বিষয় একটি কিতাবে সংরক্ষিত আছে। নিশ্চয়ই এটা আল্লাহর পক্ষে অতি সহজ।” [4]
“অদৃশ্য জগতের চাবিকাঠি তাঁরই নিকট রয়েছে; তিনি ছাড়া আর কেউঁই তা জ্ঞাত নয়। পৃথিবীতে ও সমুদ্রের সব কিছুই তিনি অবগত আছেন, তাঁর অবগতি ব্যতীত বৃক্ষ হতে একটি পাতাও ঝরে পড়ে না এবং ভূ-পৃষ্ঠের অন্ধকারের মধ্যে একটি দানাও পতিত হয় না, এমনিভাবে কোনো সরস ও নিরস বস্তুও পতিত হয় না; সমস্ত কিছুই সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। ” [5]
“এগুলো অদৃশ্যের খবর, যা ওহীর মাধ্যমে আমি তোমার [মুহাম্মাদ(ﷺ)] কাছে প্রেরণ করি। তুমি তাদের কাছে ছিলে না, যখন তারা ষড়যন্ত্র করে নিজেদের সিদ্ধান্ত স্থির করে ফেলেছিলো।” [6]
“তিনিই সেই সত্তা, যিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন যথোচিত। যেদিন তিনি বলবেন, ‘হয়ে যাও!’ তখন হয়ে যাবে। তাঁর কথা সত্য। যেদিন শিঙ্গায় ফুঁৎকার করা হবে, সেদিন আধিপত্য হবে তাঁরই। তিনি অদৃশ্য বিষয়ে এবং প্রত্যক্ষ বিষয়ে জ্ঞাত। তিনিই প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। ” [7]
“নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছেই কিয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং গর্ভাশয়ে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না, আগামীকাল সে কী উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না, কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।” [8]
“তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।” [9]
#️⃣#️⃣তাকদিরের সাথে সম্পর্কিত জটিল একটা প্রশ্ন#️⃣#️⃣
#Qn: মুসলিমরা মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। আবার হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানরা নিজ নিজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করে। আবার অনেকের কাছে হয়তো আদৌ ইসলামের দাওয়াতই পৌঁছেনি। এদের কী হবে?
মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণকারীরা মুসলিম আর অমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণকারীরা অমুসলিম; মানুষের পরিণতি কি তবে জন্মের ভিত্তিতে?
#Ans: ইসলাম এসব ব্যাপারে খুব পরিষ্কারভাবে আমাদেরকে অবহিত করেছে।
যারা মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছে, তারা জন্মের জন্য জান্নাতে যাবে না; বরং তাদের বিশ্বাস ও কর্মের জন্য জান্নাতে যাবে। অনেক মানুষ আছে, যারা মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়েও সলাত(নামায) আদায় করে না, অথচ সলাত ঈমান ও কুফরের মধ্যে পার্থক্যকারী। [11] আবার অনেকেই মুসলিম পরিবারে জন্মেও ইসলাম ত্যাগ করে। মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া অবশ্যই জান্নাতের গ্যারান্টি নয়। আর যে অমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছে, তার জন্য সেটি একটি পরীক্ষা। সে যদি সঠিক ও অবিকৃতভাবে ইসলামের দাওয়াত পায়, তাহলে ইসলাম গ্রহণ করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য হবে।
#️⃣#️⃣ কুরআন থেকে প্রমাণ:#️⃣#️⃣
১)তিনি (আল্লাহ) সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন—কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ। তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়।” [12]
২)“...অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোনো হেদায়েত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোনো ভয় আসবে, না (কোনো কারণে) তারা চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে। আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী; তারা অনন্তকাল সেখানে থাকবে ।” [13]
(মূল পয়েন্ট)
এ প্রসঙ্গে ইবন আবিল ইজ্জ হানাফী(র) {১৩৩১-১৩৯০ খ্রি./৭৩১-৭৯২ হি.} বলেছেন, “...কেউ যদি সত্যের প্রমাণ সন্ধান ছাড়াই অন্ধভাবে বাবা-মা’কে অনুসরণ করে এবং তার সামনে প্রকাশ হয়ে যাওয়া সত্যকে অগ্রাহ্য করে, তাহলে সে প্রকৃতপক্ষে নিজ খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করছে। এ থেকে সতর্ক করে আল্লাহ বলেছেন, “এবং যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা অনুসরণ কর, তখন তারা বলেঃ বরং আমরা ওরই অনুসরণ করব যা আমাদের পিতৃ-পুরুষগণ হতে প্রাপ্ত হয়েছি; যদিও তাদের পিতৃ-পুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিলনা এবং তারা সুপথগামীও ছিলনা।” (সুরা বাকারাহ ২:১৭০) এই একই ব্যাপার মুসলিম পরিবারে জন্মানো অনেকের জন্যও সত্য। তারা বিশ্বাস ও কর্মের ক্ষেত্রে তাদের বাপ-দাদাদেরকেই অনুসরণ করে যায়। এগুলো যদি ভুলও হয় তবুও তারা সে ব্যাপারে সচেতন হয় না। এরা পরিবেশের দ্বারা মুসলিম, পছন্দের দ্বারা নয়। যখন এমন কাউকে কবরে জিজ্ঞেস করা হবেঃ “কে তোমার প্রভু?” সে বলবেঃ “হায়, আমি জানি না। আমি জানি না। আমি লোকজনকে কিছু জিনিস বলতে শুনতাম এবং আমিও তাই বলতাম।” [14]
#️⃣#️⃣অনেকের কাছে তো ইসলামের দাওয়াতই পৌঁছায় না।#️⃣#️⃣
#Qn: পৃথিবীতে অনেক দুর্গম জায়গা আছে যেখানে হয়তো ইসলামের দাওয়াত যায়নি। আবার অনেকে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার জন্য (যেমন বার্ধক্য, জ্ঞান লোপ হওয়া) ইসলামের দাওয়াত থেকে বঞ্চিত হয়।
#Ans: এসব ব্যাপারেও ইসলাম আমাদেরকে সুস্পষ্টভাবে অভিহিত করে। আল্লাহ কারো প্রতি সামান্যতম অন্যায় করবেন না। এটি আল্লাহর সিফাত বা গুণ নয় যে তিনি বান্দার প্রতি বিন্দুমাত্রও জুলুম করেন।
কুরআন হাদীস থেকে প্রমাণ:
১)নিশ্চয়ই আল্লাহ কারো প্রতি বিন্দুমাত্রও জুলুম করেন না; আর যদি তা (মানুষের কর্ম) সৎকর্ম হয়, তবে তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং নিজের পক্ষ থেকে বিপুল সওয়াব দান করেন।” [15]
২)“...বস্তুতঃ আল্লাহ তাদের ওপর কোনো অন্যায় করেননি, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের ওপর অত্যাচার করছিলো।” [16]
৩)“তারপর এদের প্রত্যেককে নিজ নিজ পাপের কারণে আমি পাকড়াও করেছিলাম; তাদের কারো ওপর আমি পাথরকুচির ঝড় পাঠিয়েছি, কাউকে পাকড়াও করেছে বিকট আওয়াজ, কাউকে আবার মাটিতে দাবিয়ে দিয়েছি আর কাউকে পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছি। আল্লাহ এমন নন যে, তাদের উপর জুলুম করবেন বরং তারা নিজেরা নিজেদের ওপর জুলুম করতো।” [17]
৪)“আর যখন তোমার পালনকর্তা বনী আদমের পৃষ্ঠদেশ থেকে বের করলেন তাদের সন্তানদেরকে এবং নিজের উপর তাদেরকে প্রতিজ্ঞা করালেন, ‘আমি কি তোমাদের পালনকর্তা নই?’ তারা বললো, ‘অবশ্যই, আমরা অঙ্গীকার করছি।’ আবার না কিয়ামতের দিন বলতে শুরু করো যে, এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।” [18]
৫)“কোনো রাসুল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।” [19]
৬)“চার প্রকারের লোক কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার সাথে কথোপকথন করবে। প্রথম হলো বধির লোক, যে কিছুই শুনতে পায় না। দ্বিতীয় হলো সম্পূর্ণ নির্বোধ ও পাগল লোক, যে কিছুই জানে না। তৃতীয় হলো অত্যন্ত বৃদ্ধ, যার জ্ঞান লোপ পেয়েছে। চতুর্থ হলো ঐ ব্যক্তি, যে এমন যুগে জীবন যাপন করেছে যে যুগে কোনো নবী আগমন করেননি বা কোনো ধর্মীয় শিক্ষাও বিদ্যমান ছিলো না। বধির লোকটি বলবে, “ইসলাম এসেছিলো, কিন্তু আমার কানে কোনো শব্দ পৌঁছেনি”। পাগল বলবে, “ইসলাম এসেছিলো বটে, কিন্তু আমার অবস্থা তো এই ছিলো যে শিশুরা আমার ওপর গোবর নিক্ষেপ করতো।” বৃদ্ধ বলবে, “ইসলাম এসেছিলো, কিন্তু আমার জ্ঞান সম্পূর্ণ লোপ পেয়েছিলো, আমি কিছুই বুঝতাম না।” আর যে লোকটির কাছে কোনো রাসুল আসেনি এবং সে তাঁর কোনো শিক্ষাও পায়নি সে বলবে, “আমার কাছে কোনো রাসুল আসেননি এবং আমি কোনো সত্যও পাইনি। সুতরাং আমি আমল করতাম কীভাবে?” তাদের এসব কথা শুনে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে নির্দেশ দেবেন—“আচ্ছা যাও, জাহান্নামে লাফিয়ে পড়ো।” রাসুল (ﷺ) বলেন, “যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! যদি তারা আল্লাহর আদেশ মেনে নেয় এবং জাহান্নামে লাফিয়ে পড়ে, তবে জাহান্নামের আগুন তাদের জন্য ঠাণ্ডা আরামদায়ক হয়ে যাবে।” অন্য বিবরণে আছে যে, যারা জাহান্নামে লাফিয়ে পড়বে তা তাদের জন্য হয়ে যাবে ঠাণ্ডা ও শান্তিদায়ক। আর যারা বিরত থাকবে, তাদের হুকুম অমান্যের কারণে টেনে হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।”
ইমাম ইবন জারির (রহ.) এই হাদিসটি বর্ণনা করার পরে আবু হুরাইরা (রা.) এর নিম্নের ঘোষণাটি উল্লেখ করেছেন, “এর সত্যতা প্রমাণ হিসেবে তোমরা ইচ্ছা করলে আল্লাহ তা‘আলার وَ مَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولًا (কোনো রাসুল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।) বাক্যও পাঠ করতে পারো।” [20],[21]
#️⃣#️⃣কেয়ামতে মেধাহীন, অজ্ঞদের বিচার#️⃣#️⃣
“কিয়ামতের দিন অজ্ঞ ও বোধহীন লোকেরা নিজেদের বোঝা কোমরে বহন করে নিয়ে আসবে এবং আল্লাহ্ তা’আলার সামনে ওজর পেশ করে বলবে, “আমাদের কাছে কোনো রাসুল আসেননি এবং আপনার কোনো হুকুমও পৌঁছেনি। এরূপ হলে আমরা মন খুলে আপনার কথা মেনে চলতাম।”
তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, “আচ্ছা, এখন যা হুকুম করবো তা মানবে তো?” উত্তরে তারা বলবে, “হাঁ, অবশ্যই বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেবো।” তখন মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলবেন, “আচ্ছা যাও, জাহান্নামের পার্শ্বে গিয়ে তাতে প্রবেশ করো।” তারা তখন অগ্রসর হয়ে জাহান্নামের পার্শ্বে পৌঁছে যাবে। সেখানে গিয়ে যখন ওর উত্তেজনা, শব্দ এবং শাস্তি দেখবে তখন ফিরে আসবে এবং বলবে, “হে আল্লাহ! আমাদেরকে এর থেকে রক্ষা করুন।” আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, “দেখো, তোমরা অঙ্গীকার করেছো যে, আমার হুকুম মানবে। আবার এই নাফরমানী কেন?” তারা উত্তরে বলবে, “আচ্ছা, এবার মানবো।” অতঃপর তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নেয়া হবে। তারপর এরা ফিরে এসে বলবে, “হে আল্লাহ, আমরা তো ভয় পেয়ে গেছি। আমাদের দ্বারা তো আপনার এই আদেশ মান্য করা সম্ভব নয়।” তখন প্রবল প্রতাপান্বিত আল্লাহ বলবেন, “তোমরা নাফরমানি করেছো। সুতরাং এখন লাঞ্ছনার সাথে জাহান্নামি হয়ে যাও।” রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন যে, “প্রথমবার তারা যদি আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী জাহান্নামে লাফিয়ে পড়তো, তবে তার অগ্নি তাদের জন্য ঠাণ্ডা হয়ে যেতো এবং তাদের দেহের একটি লোমও পুড়তো না।” [22]
🎲🎲 সিদ্ধান্ত:
আল্লাহর গুণাবলি সম্পর্কে কুরআন ও হাদিস থেকে আমরা যা জানতে পারি তা থেকে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে—যারা আদৌ ইসলামের দাওয়াত পাবে না, তাদের প্রতি পরকালে যে পরীক্ষা হবে তা মোটেও তাদের সাধ্যাতীত কিছু হবে না। অনেক লোকই আগুনের সেই পরীক্ষাতেও নিজ যোগ্যতায় পাশ করে যাবে এবং অনেকে নিজ অযোগ্যতায় ব্যর্থ হবে।
“আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না; সে তা-ই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তা-ই তার ওপর বর্তায় যা সে করে।…” [23]
ইসলাম বলে যে—মানবজাতির কাছ থেকে তাদের জন্মের পূর্বেই আল্লাহ তাঁর একত্ববাদের সাক্ষ্য নিয়েছিলেন। আল্লাহ আদি যুগ থেকে নবী-রাসুল প্রেরণ করে মানুষকে একত্ববাদের ধর্মের দিকে আহ্বান করেছেন। শেষ নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) এর মাধ্যমে এই ধর্মের প্রচার আজও আছে। যুগে যুগে প্রত্যেকের কাছেই আল্লাহর পক্ষ থেকে দূত এসেছে। যারা তাদের নিজ যুগের নবীকে মেনেছে বা মানবে, তারা মুক্তি পাবে। আর যাদের কাছে আদৌ এই আহ্বান পৌঁছেনি, তাদের ফয়সালার কথা ইতিমধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে।
“(শুরুতে) সকল মানুষ একই জাতির অন্তর্ভুক্ত ছিলো। তারপর (যখন তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিলো, তখন) আল্লাহ তা‘আলা নবীদের পাঠালেন সুসংবাদদাতা ও ভীতিপ্রদর্শনকারী হিসাবে। আর তাঁদের সাথে অবর্তীণ করলেন সত্যসম্বলিত কিতাব, যাতে তারা মানুষের মধ্যে সেসব বিষয়ে মীমাংসা করে দেন, যা নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ ছিলো। আর (পরিতাপের বিষয় হলো,) অন্য কেউ নয়; বরং যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিলো, তারাই সমুজ্জ্বল নিদর্শনাবলি আসার পরও কেবল পারস্পরিক রেষারেষির কারণে তাতেই (সেই কিতাবেই) মতভেদ সৃষ্টি করলো। তারপর যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদেরকে তারা যে বিষয়ে মতভেদ করতো, সে বিষয়ে নিজ ইচ্ছায় সঠিক পথে পৌঁছে দেন। আর আল্লাহ যাকে চান, তাকে সরল-সঠিক পথে পৌছে দেন।” [24]
“আমি তোমার [মুহাম্মাদ (ﷺ)] পূর্বে পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের মধ্যে রাসুল প্রেরণ করেছি।” [25]
“আমি প্রত্যেক উম্মতের মধ্যেই রাসুল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাগুত(আল্লাহ ব্যতিত যার উপাসনা করা হয়) থেকে নিরাপদ থাকো। এরপর তাদের মধ্যে কিছুসংখ্যককে আল্লাহ হিদায়াত করেছেন এবং কিছু সংখ্যকের জন্যে বিপথগামিতা অবধারিত হয়ে গেলো। সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো মিথ্যারোপকারীদের কীরূপ পরিণতি হয়েছে।” [26]
“যে-কেউ সৎপথে চলে, তারা নিজের মঙ্গলের জন্যেই সৎপথে চলে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তারা নিজের অমঙ্গলের জন্যেই পথভ্রষ্ট হয়। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কোনো রাসুল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।” [27]
“তোমরা কুফর অবলম্বন করলে নিশ্চিত জেনে রেখো, আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন; তিনি তাঁর বান্দাদের জন্য কুফর পছন্দ করেন না। আর যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, তাহলে তিনি তা তোমাদের জন্য পছন্দ করবেন। আর কোনো ভারবাহী অন্যের বোঝা বহন করবে না। তারপর তোমাদের প্রভুর নিকটেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন, তখন তিনি তোমাদের জানিয়ে দেবেন যা তোমরা করে যাচ্ছিলে। নিঃসন্দেহে অন্তরের ভেতরে যা আছে, সে সন্বন্ধে তিনি সম্যক অবগত।” [28]
এ ব্যাপারে প্রসিদ্ধ ফতোয়ার ওয়েবসাইট islamqa থেকে শায়খ সালিহ আল মুনাজ্জিদ (হাফিজাহুল্লাহ) এর এই ফতোয়াটি দেখা যেতে পারে:--
“The fate of kuffaar who did not hear the message of Islam” [29]
#️⃣#️⃣অমুসলিমদের মারা যাওয়া শিশু সন্তানদের পরিণতি কী হবে?#️⃣#️⃣
প্রত্যেক মানুষকেই স্রষ্টা আল্লাহ সঠিক ফিতরাত বা স্বভাবধর্মের ওপর সৃষ্টি করেন। আর সেটি হচ্ছে একত্ববাদ, স্রষ্টার প্রতি পূর্ণাঙ্গ আত্মসমর্পণ বা ইসলাম। পরবর্তীতে মানুষ পিতামাতা ও পারিপার্শ্বিক প্রভাবে বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাস লাভ করে। বিভিন্ন অমুসলিম সম্প্রদায় (হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, ইহুদি) এর শিশু সন্তানের ব্যাপারে ইসলাম যা বলে—
#দলীল-১: আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, “প্রতিটি নবজাতকই জন্মলাভ করে ফিতরাতের ওপর। এরপর তার মা-বাপ তাকে ইহুদি বা খ্রিষ্টান বা অগ্নিপূজারীরূপে গড়ে তোলে। যেমন, চতুষ্পদ পশু একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাদের মধ্যে কোনো (জন্মগত) কানকাটা দেখতে পাও?” পরে আবু হুরায়রা (রা.) তিলাওয়াত করলেন—
فِطْرَةَ اللَّهِ الَّتِي فَطَرَ النَّاسَ عَلَيْهَا لاَ تَبْدِيلَ لِخَلْقِ اللَّهِ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ
“আল্লাহর দেয়া ফিতরাতের (অর্থাৎ, ইসলাম) অনুসরণ করো, যে ফিতরাতের ওপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। এটাই সরল সুদৃঢ় দ্বীন।” (সুরা রূম: ৩০:৩০) [30]
#দলীল-২: সামুরা ইবন জুনদুব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) প্রায়ই তাঁর সাহাবীদেরকে (রা.) বলতেন, তোমাদের কেউ কোনো স্বপ্ন দেখেছো কি? রাবি বলেন, যাদের বেলায় আল্লাহর ইচ্ছা, তারা রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে স্বপ্ন বর্ণনা করতো।
তিনি [রাসুলুল্লাহ (ﷺ)] একদিন সকালে আমাদের বললেন, গত রাতে আমার কাছে দু’জন আগন্তুক আসলেন। তাঁরা আমাকে ওঠালেন। আর আমাকে বললো, চলুন। ......তাঁরা আমাকে বললেন, চলুন, চলুন। তিনি বলেন, আমরা চললাম এবং একটা সজীব শ্যামল বাগানে উপনীত হলাম, যেখানে বসন্তের হরেক রকম ফুলের কলি রয়েছে। আর বাগানের মাঝে আসমানের থেকে অধিক উঁচু দীর্ঘকায় একজন পুরুষ রয়েছে, যার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছি না। এমনিভাবে তার চতুষ্পার্শে এতো বিপুল সংখ্যক বালক-বালিকা দেখলাম যে, এতো বেশি আর কখনো আমি দেখিনি। আমি [মুহাম্মাদ (ﷺ)] তাদেরকে বললাম, উনি কে? এরা কারা? তাঁরা আমাকে বললেন, চলুন, চলুন। ...... আর ঐ দীর্ঘকায় ব্যক্তি যিনি বাগানে ছিলেন, তিনি হলেন, ইবরাহিম (আ.)। আর তাঁর আশেপাশের বালক-বালিকারা হলো ঐসব শিশু, যারা ফিতরাত (স্বভাবধর্মের) ওপর মৃত্যুবরণ করেছে। তিনি বলেন, তখন কিছু সংখ্যক মুসলিম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল (ﷺ)! মুশরিকদের(বহু ঈশ্বরবাদী/পৌত্তলিক) শিশু সন্তানরাও কি? তখন রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও। ...” [31]
#দলীল-৩: রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “প্রত্যেক শিশু ফিতরাতের ওপর জন্মগ্রহণ করে থাকে।” জনগণ তখন উচ্চস্বরে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, “মুশরিকদের শিশুরাও কি?” উত্তরে তিনি বলেন, “মুশরিকদের শিশুরাও।” [32]
#দলীল-৪: রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন যে, “মুশরিকদের শিশুদেরকে জান্নাতবাসীদের খাদেম বানানো হবে। “ [33]
#দলীল-৫: হাসনা বিন্ত মুআবিয়া (র.) বানী সুরাইম (র.) হতে বলেন যে, তাঁর চাচা তাঁকে বলেছেনঃ আমি জিজ্ঞেস করলাম, “হে আল্লাহর রাসুল (ﷺ), জান্নাতে কারা কারা যাবে? জবাবে তিনি বলেনঃ ‘শহীদ, শিশু এবং জীবন্ত প্রোথিত মেয়ে শিশুরা।'[34]
#দলীল-৬: এ সংক্রান্ত বিভিন্ন হাদিস পর্যালোচনা করে সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ইবন হাজার আসকালানী(র.) এর অভিমত হচ্ছেঃ প্রাপ্তবয়স্ক হবার আগে অমুসলিমদের যে শিশুসন্তানরা মারা যায়, তারা জান্নাতী হবে। [35]
#সিদ্ধান্ত: শিশু অবস্থায় মারা গেলে সেটি তাদের জন্য ওজর হিসাবে গণ্য হতে পারে। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় যে কোনো মানুষের বুদ্ধি ও বিবেক থাকে। এই সময়ে যদি তার কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছায় এবং সে যদি তা গ্রহণ না করে, তাহলে হিন্দু, খ্রিষ্টান বা নাস্তিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করা তার জন্য অজুহাত হতে পারে না। নিজ কর্মের জন্যই সে জাহান্নামের উপযুক্ত হয়। তার জন্য নির্ধারিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হবার দ্বারা। পৃথিবীতে বহু মানুষ এই পরীক্ষায় কৃতকার্য হচ্ছে, অমুসলিম থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করছে।
🎯🎯 ডিসিশন: উপরের আলোচনা থেকে আমরা নিম্নোক্ত ডিসিশন পেলাম:
❏ দুনিয়াতে যার নিকট ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেছে এবং সে তা অস্বীকার করেছে, পরকালে তার আর কোনো ওজর পেশ করার সুযোগ নেই। যাদের নিকট দুনিয়াতে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছেনি, পরকালে তাদের এক প্রকারের পরীক্ষা হবে এবং তাতে উত্তীর্ণ ব্যক্তিরা মুক্তিলাভ করবে। সকলের প্রতি ন্যায়বিচার করা হবে, কারো প্রতি সামান্যতম জুলুমও করা হবে না।
❏ মানুষকে চেতনা, বিবেক ও বিচারবুদ্ধি দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ মানুষকে বিবেক-বুদ্ধি এইজন্য দিয়েছেন যেন মানুষ তা ব্যবহার করে। সুনির্দিষ্টভাবে সাহাবীদের—“ তাহলে আমরা কাজ-কর্ম ছেড়ে কি ভরসা করে বসে থাকব না??”—প্রশ্নের উত্তরে রাসুল (ﷺ) এটি করতে নিষেধ করেছেন এবং সাধ্যানুযায়ী সৎকর্মের উপদেশ দিয়েছেন।
❏ মানুষ যদি এরপরেও তাকদিরের ওপর দোষ দিয়ে বসে থাকে ও সৎকর্ম না করে, তবে এজন্য আল্লাহ মোটেও দায়ী নন। কারণ তাকে তো তার তাকদির জানিয়ে দেয়া হয়নি। কে তাকে বলে দিয়েছে যে সে জাহান্নামেই যাবে? বরং এই বসে থাকাটাই তার জন্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
এবং আল্লাহই ভালো জানেন।
তথ্যসূত্রঃ
1️⃣ইবনু ফারিস, মু’জামু মাকায়িসিল লুগাহ ৫/৫৬;
‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ইসলামী আকীদা’ – খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর(র); পৃষ্ঠা ৩৩৯
2️⃣‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের আকীদা’ – শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল উসাইমিন(র), পৃষ্ঠা ৮২ (islamhouse); ডাউনলোড লিঙ্কঃ http://bit.ly/2jsTGEP অথবা https://goo.gl/aBwSFN
3️⃣আল-কুরআন, সুরা আন-নাহল ১৬:৭৭
4️⃣আল-কুরআন, সুরা হাজ ২২:৭০
5️⃣আল-কুরআন, সুরা আন‘আম ৬:৫৯
6️⃣আল-কুরআন, সুরা ইউসুফ ১২:১০২
7️⃣আল-কুরআন, সুরা আন‘আম ৬:৭৩
8️⃣আল-কুরআন, সুরা লুকমান ৩১:৩৪
9️⃣আল-কুরআন, সুরা তাগাবুন ৬৪:১৮
1️⃣0️⃣সুনান তিরমিজি, হাদিস: ২৬১৯-২৬২৩
1️⃣1️⃣আল-কুরআন, সুরা মুলক ৬৭:২
1️⃣2️⃣আল-কুরআন, সুরা বাকারাহ ২:৩৮-৩৯
1️⃣3️⃣‘শারহ আকিদা আত ত্বহাওয়ী’ – ইবন আবিল ইজ্জ হানাফী(র); পৃষ্ঠা ১৯০(ইংরেজি অনুবাদ)
1️⃣4️⃣আল-কুরআন, সুরা নিসা ৪:৪০
1️⃣5️⃣আল-কুরআন, সুরা আলি ইমরান ৩:১১৭
1️⃣6️⃣আল-কুরআন, সূরা আনকাবুত ২৯:৪০
1️⃣7️⃣আল-কুরআন, সুরা আ‘রাফ ৭:১৭২
1️⃣8️⃣আল-কুরআন, সুরা বনী ইসরাইল (ইসরা) ১৭:১৫
1️⃣9️⃣মুসনাদ আহমাদ, তাফসির ইবন কাসির {তাফসির পাবলিকেশন কমিটি (ড. মুজিবুর রহমান)}, সুরা বনী ইসরাইল ১৫ নং আয়াতের তাফসির
2️⃣0️⃣ইমাম মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহইয়া যাহলী (র) কর্তৃক বর্ণিত একটি রেওয়াতে নবীশূন্য যুগের লোক, পাগল ও শিশুর কথাও এসেছে
2️⃣1️⃣মুসনাদ বাযযার, ইমাম ইবন কাসির (রহ.) এর মতে ইমাম ইবন হিব্বান (রহ.) নির্ভরযোগ্যরূপে বর্ণনা করেছেন; তাফসির ইবন কাসির {তাফসির পাবলিকেশন কমিটি (ড. মুজিবুর রহমান)}, সুরা বনী ইসরাইল ১৫ নং আয়াতের তাফসির, ইয়াহইয়া ইবন মুঈন (রহ.) ও নাসাঈ (রহ.) এর মতে এতে (সনদের ব্যাপারে) ভয়ের কোনো কারণ নেই।
2️⃣2️⃣আল-কুরআন, সুরা বাকারাহ ২:২৮৬
2️⃣3️⃣আল-কুরআন, সুরা বাকারাহ ২:২১৩
2️⃣4️⃣আল-কুরআন, সুরা হিজর ১৫:১০
2️⃣5️⃣আল-কুরআন, সুরা নাহল ১৬:৩৬
2️⃣6️⃣আল-কুরআন, সুরা ইসরা ১৭:১৫
2️⃣7️⃣আল-কুরআন, সুরা যুমার ৩৯:৭
2️⃣8️⃣https://islamqa.info/en/1244
2️⃣9️⃣সহীহ বুখারি, হাদিস: ৯৫৩১
3️⃣0️⃣সহীহ বুখারি; খণ্ড ৯, অধ্যায় ৮৭ (স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান অধ্যায়), হাদিস নং ১৭১
3️⃣1️⃣সহীহ বুখারি, হাদিস নং : ৭০৪৭
3️⃣2️⃣তাবারানি, মুজাম আল কাবির ৭/২৪৪, আল মাজমা ৭/২১৯, তাফসির ইবন কাসির, সুরা বনী ইসরাইলের ১৫ নং আয়াতের তাফসির
3️⃣3️⃣আহমাদ ৫/৫৮, আল মাজমা ৭/২১৯, তাফসির ইবন কাসির, সুরা বনী ইসরাইলের ১৫ নং আয়াতের তাফসির
3️⃣4️⃣"They will be from amongst the dwellers of Jannah (paradise) according to the nature of Islam that every child is created upon. In the famous Hadith, Rasoolullah Sallahu alaihi wasallam has said: ‘ Every born child is created upon the fitrah (natural religion of Islam in which there is inclination to Tawhid, the oneness of Allah). Thereafter, his/her parents make him Jew, Chistian or a Fire-Worshipper.’
From this Hadith we learn that every child is born Muslim, so according to it, if a child dies before reaching the age of understanding, then he should be granted entry into Paradise. Hafiz Ibn Hajar, one of the leading Hadith Scholars of all tme is inclined towards this view. He states: ‘ The Hadith mentioned above was narrated by the Prophet before anything concrete was revealed to him about the dying children of the non-believers. This is why the Prophet left it to Allah’s knowledge and didn’t make a judgement."
From: "Do All Kids Go To Heaven - IslamQA Hanafi"
http://islamqa.org/hanafi/muftisays/9358