নক্ষত্র দেবাশীষ বসু আংকেল
লেখক জারজ নাস্তিক(ছদ্ম নাম)
পর্বঃ১১
চলে গেল পৃথিবীর আরেক দৃপ্ত ময় নক্ষত্র দেবাশীষ বসু আংকেল । হিন্দু ধর্মের লোক হলেও প্রচলিত কোন ধর্মে ওনি বিশ্বাস রাখতেন না। সমাজে উনার অবদান গুলি ধার্মিকদের কাছে জগন্য হলেও আমাদের কাছে তা ছিল অনেক মহান। উনি আমাদের সমাজে সব বাধা ভেঙে দিয়ে ফ্রি সেক্স এর উদ্ভব ঘটিয়েছিল।
উনি সমাজে ধর্ষন কমাতে নিষিদ্ধ পল্লী স্থাপন করেছিল এবং সেখানে অনেক অসহায় অবলা নারীদের আশ্রয় দিয়েছিল । উনি সমস্ত নেশাখোর কে ফ্রীতে মদ্য পান করাতো, উনিই আমার পিতার খুব কাছের লোক ছিল, আমাকেও খুব ভালোবাসতো, আমিও খুব শ্রদ্ধা এবং সন্মান করতাম। দুইজনের অনেক ঘটনা জড়িয়ে আছে যা এখন শুধু সৃতি হিসেবে থেকে যাবে । এইতো সেদিন কার কথা দেবাশীষ বসু আংকেল যখন মৃত্যু কাতর অবস্থা তখন আমাকে বললো আমার জন্য এক বোতল বাংলা মদ নিয়ে আসতে। আমি বললাম দেবাশীষ আংকেল এই অবস্থায় মদ্য পান কিভাবে করবেন, ওনি বললেন এই নেশা খুবই খারাপ, একবার যাকে পেয়ে বসে তাকে একবারে শেষ করে দেয়। আমি আংকেল কে জিজ্ঞাসা করলাম আংকেল আপনার কি হয়েছে আমাকে বলবেন কি? উনি হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললেন এইস আই বি পজিটিভ। আমি আতকে উঠলাম কিভাবে? উনি বললেন পাপ করলে তাকে সাজা ভোগ করতেই হবে। আমি আমার সাজা ভোগ করছি।আমি আর কিছু বললাম না, আংকেলের কথা শুনে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেল। আংকেলের জন্য বাংলা মদ নিয়ে আসতে চলে গেলাম। আর নিজের মনকে প্রশ্ন করলাম মানুষ কেন মৃত্যু বরন করে ।যদি মানুষ না মারা যেত তাহলে আমাদের মতো মানুষের জীবন আরও সুখের হতো, এসব ভাবতে ভাবতে আংকেলের জন্য এক বোতল বাংলা মদ নিয়ে আসলাম। নিয়ে আসা মাত্রই উনি আমার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে মদের বোতল শুখতে শুরু করে দিল। পরে দুটি গ্লাস এনে একটি আমাকে দিল অপরটি সে নিয়ে পান করতে লাগলো। ভীষণ ভালো মানুষ ছিল। এসব ভাবতেই চোখ দিয়ে জল এসে পড়ে। কালকেও যার সাথে বসে মদ্য পান করলাম আজ সে আমাদের মাঝে নেই । মৃত্যু যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে । দেবাশীষ আংকেলের মৃত্যুতে আমাদের মাঝে শোকের ছায়া বয়ে যাচ্ছে। আমার আশ্রিত পিতাও আংকেলের মৃত্যুতে সেদিন জল ছাড়া আর কিছুই পান করেনি । অবশেষে ডিসিশন হলো মরা দেহটি কি করা হবে ! প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাস না করার ফলে চিতা, কবর, সমাধি কোনটাই দিতে নারাজ আমরা। অবশেষে ঠিক করে ফেললাম মানুষের কল্যানের জন্য মৃত দেহটিকে পাঠানো হবে হসপিটালে, যেন মৃত দেহটির অঙ্গ প্রতঙ্গ সংগ্রহ করে অন্য মানুষের কল্যানে আসে। কিন্তু সেটাও হলো না এইস আই বি পজিটিভ থাকায় তারা মৃতদেহ টি ফিরিয়ে দিল। অবশেষে বাধ্য হয়ে কোন এক নির্জন স্থানে মৃতদেহ টিকে পুতে ফেলে আসলাম। হঠাৎ করে পিতা জিজ্ঞাসা করে বসলো কিরে মন খারাপ? আমি বললাম না ভাবছি। পিতা বললো কি? আমি বললাম এই যে কুত্তা আর বিলায়ের মাঝে আমাদের তফাত কি? পিতা বললো মানে? আমি বললাম এইযে দেখ কুত্তা বিড়াল মারা গেলে দূর্গন্ধ ছাড়াবে বলে মানুষ ঐ গুলি মাটিতে পুঁতে রাখে। আমাদের দেবাশীষ আংকেল ও মারা গেল এই কারনে আমরাও দূর্গন্ধের ভয়ে তাকে মাটিতে পুঁতে রাখলাম। কিন্তু অন্য দিকে দেখ ধর্ম গুলি ধার্মিকদের মৃত্যুর পরও তাদের জন্য কতো সুন্দর ব্যবস্থা করে দিয়েছে । পিতা বললো বুঝতে পারছি তোর মাথায় আবার ধর্মের ভূত চাপছে।চল হাট। হুম চল,,,
চলবে,,
এই লেখকের লেখাগুলি বাস্তব কোন কাল্পনিতা নেই।
লেখকের লেখা গুলি ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশ হবে।(সম্পাদক)