সুফিদের বিশ্বাস তাদের শাইখ বা অলীগন পৃথিবীর যে কোন স্থানে হাজির নাজির থাকেন।
অলীগনতো অনেক পরের কথা বিশ্বজাহানের রহমাত আমাদের প্রান প্রিয়
নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সকল সময়, সকল স্থানে হাজির নাযির
থাকতে পারেনা। তাদের আকিদা হওয়া উচিৎ ছিল, “নবী মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা অন্য কোন অলীর হাজির নাযির নয়, বরং আল্লাহ তাআলার
ক্ষমতা, দর্শন, জ্ঞান ও শুনার দ্বারা সর্বত্র হাজির নাযির”। এটা মহান আল্লাহর একক গুন আর এ গুন কোন সৃষ্টির জন্য
সাব্যস্ত করা শির্ক। হাজির ও নাজির আসলেকি ব্যাপরটা একটু ব্যাখ্যা করিঃ
হাজির ও নাজির শব্দ দুটির আবিধানিক
ও পারিভাষিক অর্থ সম্পর্কে ও জানতে পারলে ব্যপারটা বুঝা অনেক সহজ হবে। হাজির ও নাজির শব্দ দুটো আরবী।
হাজির
(حاضر) শব্দের
শাব্দিক অর্থ হল:- মওজুদ, বিদ্যমান বা উপস্থিত।
নাজির
(ناظر) শব্দের
শাব্দিক অর্থ হল:- দ্রষ্টা, দর্শক বা যিনি
দেখেন, পর্যবেক্ষক বা সংরক্ষক।
শাব্দিক অর্থে মানুষ, পশু, পাখিসহ
যাদের চলাচলের ক্ষমতা আছে এবং আল্লাহ দৃষ্টিশক্তি দান করছেন তারা সকলেই সীমিত
পরিসরে হাজির ও নাযির। যেমন চাকুরিজিবী অফিসে, ছাত্র স্কুলে, আসামি আদালতে, শ্রমীক
নিজ নিজ কর্মস্থলে হাজিন হন। যেখানে যিনি হাজির হন, তার চারপাশে সীমিত পরিসরে দর্শন
করার সুযোগ মহান আল্লাহ তাকে দান করেন। এই হিসাবে বলা যায়, আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সকল নবী ’আলাইহিমুস
সালাম, আল্লাহর সকল অলী আওলীয়া, সাধারন মুসলিম, কাফিরসহ সকলে মহান আল্লাহ দেওয়া
ক্ষমতা অনুসারে সীমিত পরিসরে হাজির ও নাযির।
হাজির ও নাযির যদি একত্রে বলি তবে এর অর্থ হবে উপস্থিত থেকে দেখা। মনে রাখতে হবে মহান আল্লাহ
যাকে যতটুকু হাজির নাযিরের ক্ষমতা দিয়েছেন ততটুকুই সে উপভোগ করতে পারবে।
মহান
আল্লাহ তায়ালার ‘হাজির-নাযির’ এর
ক্ষমতা অসীম। কোন কিছু দেখা জন্য মহান আল্লাহকে স্ব-সত্তায়
হাজির থাকতে হয় না অথচ "আল্লাহ সদা সর্বত্র বিরাজমান" কিন্তু কিভাবে?
এখানে সদা সর্বত্র বিরাজমান কথাটির অর্থ হবে স্ব-সত্তায় নয় বরং
আল্লাহ তাআলার ক্ষমতা, দর্শন, জ্ঞান ও শুনার দ্বারা বিরাজমান, (শুনে রাখো, আল্লাহ
সব জিনিসকে
পরিবেষ্টন করে আছেন। (হা মিম সিজদা-৫৪)৷ কোন বস্তুই তাঁর সদৃশ নয়,
তিনি সব শোনেন, সব দেখেন, (সুরা শুরা-১১)। ‘হাযির-নাযির’ বলতে বুঝব মহান আল্লাহর সদা সর্বত্র উপস্থিত বা বিরাজমান ও সবকিছুর
দর্শক, তার ক্ষমতা, দর্শন, জ্ঞান ও শুনার দ্বারা। তা হলে বোঝা গেল, “মহান আল্লাহ সদা সর্বত্র বিরাজমান” বাক্যটির অর্থ
যদি হয় ‘‘মহান আল্লাহ স্ব-সত্তায়
সর্বত্র বিরাজমান” তা হলে বাক্যটি সরাসরি বাতিল। যিনি
সদা সর্বত্র বিরাজমান ও সবকিছুর দর্শক, তিনি অবশ্যই সকল গাইবী জ্ঞানের অধিকারী
হবেন, (হুদ-১১:৪৯)। আর তিনি হলেন একমাত্র মহান
আল্লাহ তায়ালার।
কাজেই যখনই বলা হবে
“আল্লাহ সদা সর্বত্র বিরাজমান” তখন বোঝতে হবে মহান আল্লাহ তার জ্ঞান, শ্রবণ, দর্শন ও ক্ষমতা দ্বারা সর্বত্র বিরাজমান। যেমন:
মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেনঃ
أَلَمۡ تَرَ أَنَّ ٱللَّهَ يَعۡلَمُ مَا فِى
ٱلسَّمَـٰوَٲتِ وَمَا فِى ٱلۡأَرۡضِۖ مَا يَڪُونُ مِن نَّجۡوَىٰ ثَلَـٰثَةٍ
إِلَّا هُوَ رَابِعُهُمۡ وَلَا خَمۡسَةٍ إِلَّا هُوَ سَادِسُہُمۡ وَلَآ أَدۡنَىٰ
مِن ذَٲلِكَ وَلَآ أَڪۡثَرَ إِلَّا هُوَ مَعَهُمۡ أَيۡنَ مَا كَانُواْۖ ثُمَّ
يُنَبِّئُهُم بِمَا عَمِلُواْ يَوۡمَ ٱلۡقِيَـٰمَةِۚ إِنَّ ٱللَّهَ بِكُلِّ
شَىۡءٍ عَلِيمٌ (٧)
অর্থ: তোমরা কি দেখ না, আকাশ
মন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে আল্লাহ্ তা জানেন? তিন জনের মধ্যে কখনও
কোন গোপন শলা পরামর্শ হতে পারে না, যেখানে
তিনি চতুর্থ ব্যক্তিরূপে উপস্থিত নাই এবং
পাঁচ ব্যক্তির মধ্যেও হয় না যাতে ষষ্ঠ জন হিসেবে তিনি তাদের মধ্যে উপস্থিত থাকেন
না। কিংবা ইহা অপেক্ষা কম বেশী
হলেও তারা যেখানেই থাকুক না কেন, অবশ্য
তিনি উহাদের সঙ্গেই আছেন। সব
শেষে শেষ বিচারের দিনে আল্লাহ্ তাদের কৃতকর্মের সত্যতা জানিয়ে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সম্যক অবগত। (মুজাদালাহ ৫৮ :৭)।
অধিকাংশ আলেম ঐক্যমত্য
প্রকাশ করেছেন যে, অত্র আয়াতের দ্বারা
উদ্দেশ্য হল আল্লাহ তায়ালার সত্তা বিদ্যমান থাকা নয়, তার ইলম
বা জ্ঞান সব স্থানে বিদ্যমান আছে। এটাই উদ্দেশ্য , তিন জনের
সমাবেশে চতুর্থজন হবে আল্লাহর ইলম বা জ্ঞান, ( তাফসির ইবনে কাসীর ১৭ খন্ড সুরা
মোজাদেলাহ এর তাফসীর আয়াত নং ৭ পেজ নং ৩৬২)
মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন:
وَلِلَّهِ ٱلۡمَشۡرِقُ وَٱلۡمَغۡرِبُۚ فَأَيۡنَمَا
تُوَلُّواْ فَثَمَّ وَجۡهُ ٱللَّهِۚ إِنَّ ٱللَّهَ وَٲسِعٌ عَلِيمٌ۬ (١١٥)
অর্থঃ পূর্ব এবং পশ্চিম আল্লাহ তায়ালারই। সুতরাং যেদিকেই মুখ ফিরাও, সেদিকেই রয়েছেন আল্লাহ তায়ালা। নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা সর্বব্যাপী সর্বজ্ঞাত. (সূরা বাকারা -১১৫)।
উক্ত আয়াতের তাফসীরে বিশ্ববিখ্যাত তাফসীরবীদ হাফেজ ইমাদুদ্দিন ইবনু কাসীর (রাহ) তার তাফসীর ইবনু কাসীরে বলেনঃ আল্লাহ তা 'আলা হতে কোন জায়গা শুন্য নেই, এর ভাবার্থ যদি মহান আল্লাহর "ইলম বা জ্ঞান” বা অবগতি হয় তাহলে অর্থ সঠিক
হবে, যে কোন
স্থানেই আল্লাহ পাকের ইলম হতে শূন্য নেই। আর যদি এর ভাবার্থ হয়" আল্লাহ তা 'আল্লাহ সত্তা "তবে এটা সঠিক হবে না। কেন না, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যে, তার সৃষ্টি জীবের মধ্য হতে কোন জিনিষের মধ্যে সীমাবদ্ধ
থাকবেন তা থেকে তার পবিত্র সত্তা বহু ঊর্ধে। তাফসীরে ইবনে কাসির প্রথম
খন্ড পৃষ্ঠা৩৭২)।
বিভিন্ন
নবীদের ঘটনা ও দাওয়াত দান কালে মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজির নাযির ছিল না।
আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন:
وَمَا كُنتَ بِجَانِبِ ٱلۡغَرۡبِىِّ إِذۡ قَضَيۡنَآ
إِلَىٰ مُوسَى ٱلۡأَمۡرَ وَمَا كُنتَ مِنَ ٱلشَّـٰهِدِينَ (٤٤) وَلَـٰكِنَّآ أَنشَأۡنَا قُرُونً۬ا فَتَطَاوَلَ
عَلَيۡہِمُ ٱلۡعُمُرُۚ وَمَا ڪُنتَ ثَاوِيً۬ا فِىٓ أَهۡلِ مَدۡيَنَ تَتۡلُواْ
عَلَيۡهِمۡ ءَايَـٰتِنَا وَلَـٰكِنَّا ڪُنَّا مُرۡسِلِينَ (٤٥)
অর্থ: (হে মুহাম্মদ!)
তুমি সে সময় পশ্চিম প্রান্তে উপস্থিত ছিলে না৷ যখন
মূসাকে এ শরীয়াত দান করেছিলাম এবং তুমি সাক্ষীদের অন্তর্ভুক্তও ছিল না৷ বরং এরপর (তোমার যুগ পর্যন্ত) আমি বহু প্রজন্মের উদ্ভব ঘটিয়েছি
এবং তাদের ওপর অনেক যুগ অতিক্রান্ত হয়ে গেছে৷ তুমি
মাদয়ানবাসীদের মধ্যেও উপস্থিত ছিলে না, যাতে তাদেরকে আমার
আয়াত শুনাতে পারতে কিন্তু আমি সে সময়কার এসব তথ্য জানাচ্ছি৷ (কাসাস ২৮:৪৪-৪৫)।
আরও দেখুনঃ আল ইমরান-৪৪; ইউচুফ ১২:১০২
একমাত্র আল্লাহই সব
কিছুতেই পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাজির
নাযিরের ক্ষমতা থাকলে ওহীর জ্ঞানের প্রয়োজন ছিল না।
আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন:
ٱللَّهُ
ٱلَّذِى خَلَقَ سَبۡعَ سَمَـٰوَٲتٍ۬ وَمِنَ ٱلۡأَرۡضِ مِثۡلَهُنَّ يَتَنَزَّلُ
ٱلۡأَمۡرُ بَيۡنَہُنَّ لِتَعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ عَلَىٰ كُلِّ شَىۡءٍ۬
قَدِيرٌ۬ وَأَنَّ ٱللَّهَ قَدۡ أَحَاطَ بِكُلِّ شَىۡءٍ عِلۡمَۢا (١٢)
অর্থ: আল্লাহ সপ্তাকাশ সৃষ্টি করেছেন এবং
পৃথিবীও সেই পরিমাণে, এসবের মধ্যে তাঁর
আদেশ অবতীর্ণ হয়, যাতে তোমরা জানতে পার যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান এবং একথাও
জানতে পার যে, আল্লাহর জ্ঞান সব কিছুতেই
পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে।(সুরা ত্বালাক- ১২)
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাজির নাযির বিশ্বাস করলে মুলত মিরাজ অস্বিকার করা হয়। আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন:
سُبۡحَـٰنَ ٱلَّذِىٓ أَسۡرَىٰ بِعَبۡدِهِۦ لَيۡلاً۬
مِّنَ ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡحَرَامِ إِلَى ٱلۡمَسۡجِدِ ٱلۡأَقۡصَا ٱلَّذِى بَـٰرَكۡنَا
حَوۡلَهُ ۥ لِنُرِيَهُ ۥ مِنۡ ءَايَـٰتِنَآۚ إِنَّهُ ۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلۡبَصِيرُ (١)
অর্থ: পবিত্র
তিনি যিনি নিয়ে গেছেন এক রাতে নিজের বান্দাকে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আক্সা পর্যন্ত, যার পরিবেশকে তিনি বরকতময়
করেছেন, যাতে তাকে নিজের কিছু নিদর্শন দেখান৷আসলে তিনিই সবকিছুর শ্রোতা ও দ্রষ্টা৷
(বনী ইসরাইল ১৭:১)।
মিরাজ হল মসজিদুল হারাম থেকে
মসজিদুল আক্সা অতপর
সপ্ত আকাশ পাড়ি দিয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের আরশে আজিমে পৌছান। রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদা
সর্বদা হাজির নাযির থাকলেতো আ র আলশে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। তিনি তো সেখানেই
হাজিরই ছিলেন। তাহলে মিরাজ আর রইল কোথায়? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কে হাজির নাযির বলাটা বাহ্যিকভাবে সম্মানজনক মনে করা হলেও আসলে তা শির্ক,
যা একজন মুসলিম কে ইসলাম থেকে বাহির করে দেয়। এর দ্বারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম মিরাজকে অস্বীকার করা হয়।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাজির নাযিরের ক্ষমতা থাকলে হিজরতের প্রয়োজন ছিল না কারন
মুহুর্তে মুহুর্তে মক্কা থেকে মদিনা আবার মদিনা থেকে মক্কা যেতে পারতেন।
আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেন:
إِلَّا تَنصُرُوهُ فَقَدۡ نَصَرَهُ ٱللَّهُ إِذۡ
أَخۡرَجَهُ ٱلَّذِينَ ڪَفَرُواْ ثَانِىَ ٱثۡنَيۡنِ إِذۡ هُمَا فِى ٱلۡغَارِ إِذۡ
يَقُولُ لِصَـٰحِبِهِۦ لَا تَحۡزَنۡ إِنَّ ٱللَّهَ مَعَنَاۖ فَأَنزَلَ ٱللَّهُ
سَڪِينَتَهُ ۥ عَلَيۡهِ
وَأَيَّدَهُ ۥ بِجُنُودٍ۬
لَّمۡ تَرَوۡهَا وَجَعَلَ ڪَلِمَةَ ٱلَّذِينَ ڪَفَرُواْ ٱلسُّفۡلَىٰۗ وَڪَلِمَةُ
ٱللَّهِ هِىَ ٱلۡعُلۡيَاۗ وَٱللَّهُ عَزِيزٌ حَكِيمٌ (٤٠)
অর্থ: তোমরা
যদি নবীকে সাহায্য না কর,
তাহলে কোন পরোয়া নেই৷ আল্লাহ তাকে এমন সময় সাহায্য করেছেন যখন
কাফেররা তাকে বের করে দিয়েছিল, যখন সে ছিল মাত্র দু’জনের মধ্যে দ্বিতীয় জন, যখন তারা দু’জন গুহার মধ্যে ছিল, তখন সে তার সাথীকে বলেছিল,
চিন্তিত হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন৷ সে সময় আল্লাহ নিজের পক্ষ থেকে তার ওপর মানসিক প্রশান্তি নাযিল করেন এবং
এমন সেনাদল পাঠিয়ে তাকে সাহায্য করেন, যা তোমরা দেখনি এবং
তিনি কাফেরদের বক্তব্যকে নীচু করে দেন৷ আর আল্লাহর কথা তো সমুন্নত আছেই৷ আল্লাহ
পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়৷(তাওবা ৯:৪০)
হিজরত মানে হল, এক স্থান
থেকে অন্য স্থানে চলে যওয়া। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাজির
নাযিরের ক্ষমতা থাকলে তিনি তো হিজরত না
করে ও মদিনা অবস্থান করতে পারতেন। এত নাটক করার প্রয়োজন ছিল না (নাউজুবিল্লাহ)। হাজির
নাযির হলে তো মক্কা থেকে মদীনায় যাওয়া প্রমাণিত হয় না। তাহলে হিজরত হল কি করে? অথচ হিজরতের ঘটনা কুরআন হদিসে
সুদৃঢ়ভাবে প্রমানিত।
কুরায়শরা
রাসুলুল্লাহ (সাঃ)
তার মিরাজের ঘটনা কেন্দ্র করে বায়তুল মুকাদ্দাসের এমন সব বিষয়
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লাগল যা তিনি দেখেন নি। ফলে তিনি খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাজির নাযিরের ক্ষমতা থাকলে তিনি চিন্তিত
হতেন না।
যুহায়র
ইবন হারব (র)……আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) বলেনঃ আমি
হাজরে আসৃওয়াদের কাছে ছিলাম। এ সময় কুরায়শরা আমাকে আমার মিরাজ সম্পর্কে প্রশ্ন
করতে শুরু করে। তারা আমাকে বায়তুল মুকাদ্দাসের এমন সব বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে
লাগল, তা আমি ভালভাবে দেখিনি। ফলে আমি খুবই চিন্তিত
হয়ে পড়লাম। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ
তারপর আল্লাহ তাআলা আমার সম্মুখে বায়তুল মুকাদ্দাসকে উদ্ভাসিত করে দিলেন এবং আমি
তা দেখছিলাম। তারা আমাকে যে প্রশ্ন করছিল, তার জবাব দিতে
লাগলাম। এরপর নবীদের এক জামাতেও আমি নিজেকে উদ্ভাসিত দেখলাম। মুসা (আঃ)-কে নামাযে দণ্ডায়মান দেখলাম, তিনি শানূয়া
গোত্রের লোকদের মত মধ্যমাকৃতির। তাঁর চুল ছিল কোঁকড়ানো। হযরত ঈসা (আঃ)-কেও নামাযে দাঁড়ানো দেখলাম। উরওয়া ইবন মাসঊদ আবু সাকাফী হচ্ছেন তাঁর নিকটতম
সদৃশ। ইবরাহীম (আঃ) কেও নামাযে দাঁড়ান দেখলাম। তিনি তোমাদের
এ সাথীরই সদৃশ। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ তারপর
নামাযের সময় হলো, আমি তাঁদের ইমামত করলাম। নামায শেষে এক ব্যক্তি আমাকে বললেন, হে মুহাম্মাদ (সাঃ)! ইনি জাহান্নামের
তত্ত্বাবধায়ক ‘মালিক’, ওকে সালাম করুন। আমি তাঁর দিকে তাকালাম। তিনি আমাকে আগেই সালাম করলেন (আঃ)-কেও
নামাযে দাঁড়ান দেখলাম। তিনি তোমাদের এ
সাথীরই সদৃশ। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ তারপর নামাযের সময় হলো, আমি তাঁদের ইমামত করলাম। নামায শেষে এক ব্যক্তি আমাকে বললেন, হে মুহাম্মাদ (সাঃ)! ইনি
জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক ‘মালিক’, ওকে
সালাম করুন। আমি তাঁর দিকে তাকালাম। তিনি আমাকে আগেই সালাম করলেন। (সহিহ
মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, হাদিস ৩২৮)।
মন্তব্যঃ মহান আল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন স্থানে হাজির নাযির
নয়, তাহলে কি করে অঘোসিত একজন শাইখ বা অলী কিকরে পৃথিবীর যে কোন স্থানে হাজির নাজির থাকতে পারেন? সুফিদের এ ধরনের বিশ্বাস শির্ক যা তাদের ইসলাম থেকে বহু দুরে
নিক্ষেপ করছে।
0 Comments
Thanks for your comment