মুফতি গোলাম সামদানি রেজবী(পশ্চিমবঙ্গ- ভারত)
''মহিলাদের মসজিদ গমন''
প্রসঙ্গে লিখনীর ইলমী তাহকীকি ইসলাহী জাবাব।
জবাব লিখনী :- ব্রাদার রুহুল হুসেইন
সংক্ষিপ্ত ভাবে জবাব লিখছি।
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
----------------০০০০০০০--------------------
আল্লাহ তাআলা বলেন:
فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتّٰى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِىٓ أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
অতএব তোমার রবের কসম, তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়। (সূরা নিসা ৪/৬৫)
আল্লাহ তায়ালা বলেন :-
وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُۥ يُدْخِلْهُ نَارًا خٰلِدًا فِيهَا وَلَهُۥ عَذَابٌ مُّهِينٌ
আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক আযাব। (সূরা নিসা ৪/১৪)
আল্লাহ তাআলা বলেন :-
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ ۗ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدْ ضَلَّ ضَلٰلًا مُّبِينًا
আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে। (সূরা আহযাব ৩৩/৩৬)
প্রথমে রেজবী সাহেবের পক্ষ থেকে দলীল।
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ لَوْ أَدْرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَحْدَثَ النِّسَاءُ لَمَنَعَهُنَّ كَمَا مُنِعَتْ نِسَاءُ بَنِي إِسْرَائِيلَ. قُلْتُ لِعَمْرَةَ أَوَ مُنِعْنَ قَالَتْ نَعَمْ.
‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানতেন যে, নারীরা কী অবস্থা সৃষ্টি করেছে, তাহলে বানী ইসরাঈলের নারীদের যেমন বারণ করা হয়েছিল, তেমনি এদেরও মসজিদে আসা নিষেধ করে দিতেন। (সহীহ বুখারী হা/৮৭৩)
আমাদের জবাব -১) আয়েশা (রাযি) তিনি শুধুমাত্র আসঙ্কা করেছেন। কিন্তু তিনি হারাম নাজায়েয মাকরুহ ফাতাওয়া দেয়নি। যেটা রেজবী সাহেব আপনারা দিয়েছেন !
জবাব -২) হাদিসের মধ্যে আয়েশা (রাযি) পক্ষথেকে নিষিদ্ধ শব্দ নেয়। আলহামদুলিল্লাহ তিনি নিষিদ্ধ ফাতওয়া কেনইবা দিবেন কারণ রাসুল ( সা) যে জায়েয বলেছেন।
(সুনান আবু দাউদ গা/৫৬৫; মুসনাদ আহমাদ (২/৪৩৮, ৪৭৫, ৫২৮)সুনান দারিমী (অধ্যায়ঃ সালাত, অনুঃ মহিলাদের মাসজিদে গমনে বাঁধা দেয়া নিষেধ, হাঃ ১২৭৯; সহীহ্ ইবনু খুযাইমাহ হা/১৬৭৭ মুসনাদে হুমাইদী হা/৯৭৮)
অভিযোগ -৩) আয়েশা (রাযি) বলেছেন 'মহিলারা যা শুরু করেছে' মহিলারা কি শুরু করেছেন?
সামদানী রাজবী বলেছেন পর্দাহীনিতা। সাজগোজ ইত্যাদি
জবাব: ৩)- আমরা বলছি রাসুল (সা) এর যুগেও ব্যভিচারের মতো মহাপাপ সংঘটিত হয়েছে তবুও রাসুল (সা) মহিলাদের মসজিদ গমন নিষিদ্ধ করেননি। আলহামদুলিল্লাহ
হাদীস :-
ওয়ায়িল ইবনু হুজর (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে জনৈকা মহিলা সলাতের উদ্দেশে বের হলো। এমন সময় এক ব্যক্তি তাকে ধরে নিয়ে জোরপূর্বক যিনা করলে মহিলাটির চিৎকারে পুরুষটি পালিয়ে যায়। তখন মুহাজিরদের একটি দল সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। তখন মহিলাটি বলল, ঐ লোকটি আমার সাথে এরূপ এরূপ করেছে। তারা তখন ঐ লোকটিকে গ্রেফতার করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত করল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঐ মহিলাটিকে বললেন, চলে যাও আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আর যে লোকটি মহিলাটির সাথে যিনা করেছিল। যিনাকারীর ব্যাপারে হুকুম করলেন, একে পাথর নিক্ষেপে হত্যা কর। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, লোকটি এমনভাবে তাওবাহ্ করেছে যদি মাদীনার সকল লোক এরূপ তাওবাহ্ করত, তাহলে তাদের সকলের পক্ষ থেকে তা কবুল করা হতো। (সুনান আবূ দাঊদ হা/ ৪৩৭৯, সুনান তিরমিজি হা/ ১৪৫৪, মুসনাদ আহমাদ হা/২৭২৪০,সহীহ আত্ তারগীব হা/২০২৩)
নোট :- আল্লাহ রাসুল (সা) যেনা কারিকে শাস্তি দিয়েছেন কিন্তু মহিলাকে মসজিদ আসতে নিষিদ্ধ করেননি। তাহলে আপনারা কেন নিষিদ্ধ করছেন! ?
আমরা আরো বলছি রাসুল (সা) এর যুগেও ব্যভিচারের মতো মহাপাপ সংঘটিত হয়েছে দেখুন হাদীস সহীহ্ বুখারী হা/৬৮১৪; ৬৮২০; মুসলিম হা/১৬৯৩; ১৬৯৫; সুনান আবু দাউদ হা/৪৪৩০; তিরমিজি হা/১৪২৯; নাসাঈ হা/১৯৫৬)
নোট :- এতদাসত্বেও নবী (সা) নিষিদ্ধ করেননি। কেন না রাসুল (সা) শরিয়াতের কনো কথা নিজের তরফ থেকে কিছুই বলতেন না। সূরা নাজম ৫৩/৩-৪)
কিন্তু আপনারা রাসুল (সা) এর বিরুদ্ধে ফাতওয়া দিয়েছেন। এমন কি আয়েশা (রাযি) বিরুদ্ধে ফাতওয়া দিয়েছেন!
অভিযোগ :- ৪) আর যদি বলেন আয়েশা (রাযি) তো বলেছেন 'রাসুল (সা) এমন পরিস্থিতি দেখলে মহিলাদের মসজিদ গমন নিষিদ্ধ করে দিতেন'! তাহলে আমরা বলবো এটা আপনাদের আক্বীদার পরিপন্থী কারণ আপনারা রাসুল (সা) কে ইলমে গায়েব বিশ্বাস করেন! এই উক্তি থেকে প্রতিয়মান হয় যে রাসুল (সা) ইলমে গায়েব না। যেমন পর্যায়ে আপনাদের আক্বীদা। একখ এমন দলিল কেন দেন যা আপনাদের বিরুদ্ধে হয়ে দাড়িয়েছে।
অভিযোগ :- ৫) আয়েশা (রাযি:-) বলেছেন
বলেছেন বাণী ঈসরাইলের মহিলাদের মতো মসজিদ গমন নিষিদ্ধ করে দিতেন।
জবাব :- আয়েশা (রাযি) বলেছেন রাসুল (সা) নিষিদ্ধ করে দিতেন! কিন্তু রাসুল (সা) নিষিদ্ধ করেননি। এবং আয়েশা (রাযি) তিনিও নিষিদ্ধ করেননি তাহলে আপনারা কেন নিষিদ্ধ করছেন। আপনাদের অজ্ঞতা পরিষ্কার আলহামদুলিল্লাহ
জবাব: - ৬) বানী ঈসারাঈলের সর্ব শেষ নবী হজরত ঈসা (আ) 'আল্লাহ তাআলা তারা মাতা মারিয়ামকে মসজিদে গমনের নির্দেশ প্রদান করেছিলেন
সূরা ইমরান ৩/৪৩
يٰمَرْيَمُ اقْنُتِى لِرَبِّكِ وَاسْجُدِى وَارْكَعِى مَعَ الرّٰكِعِينَ
‘হে মারইয়াম, তোমার রবের জন্য অনুগত হও। আর সিজদা কর এবং রুকূকারীদের সাথে রুকূ কর’। সুরা ইমরান ৩/৪৩)
নোট :- অত্র আয়াত থেকে প্রমানিত হলো 'মারিয়াম (আ) কে আল্লাহ তাআলা মসজিদে জামায়াতের সহীত সালাত আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রুকূকারীদের সাথে রুকূ কর’।
তাহলে এই যুক্তিও আর টিকলো না। আলহামদুলিল্লাহ।
৭) জবাব :- আয়েশা (রাযী) ৫৫ হিজরিতে সদ বিন আবি ওকাস (রাযি) জানাজার নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে তার লাশ আনতে বলেছিলেন। (সহীহ মুসলিম হা/৯৭৩ মাকতাবা শামিলা) মুয়াত্তা ইমাম মালিক হা/১০১৮)
সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রাযি) ইন্তেকাল করেন৫৫ হিজরিতে (তাকরীবুত তাহজীব রাবি নং ২২৫৯)
আয়েশা (রাযী) ইন্তেকাল করেন ৫৭ হিজড়িতে (তাকরীবুত তাহজীব রাবি নং ৮৬৩৩)
নোট :- এতদ্বারা প্রমানিত হলো যে আয়েশা (রাযি) শেষ জীবন পর্যন্ত শুধুমাত্র মসজিদে নামাজ নয় বরং জানাযার নামাজ ও পড়েছেন আলহামদুলিল্লাহ।
রেজবীদের ফাতাওয়া মারদুদ।
একটি প্রশ্ন :-
যারা নিজেদের হানাফী দাবী করেন তাদের কাছে প্রশ্ন ইমাম আবু হানিফা (রহ) থেকে প্রমাণ পেশ করুন মহিলাদের মসজিদ গমন প্রসঙ্গে। জানি আপনারা করবেন না। কারণ ইমাম আবু হানীফা (রহ) আপনাদের হস্তের কলমের কালি শেষ করে দিয়েছে কারণ ইমাম আবু হানীফা (রহ) তিনি জায়েয ফাতাওয়া দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ।
বিদ্রঃ:- বিস্তারিত ভিডিও জবাব আসছে ইনশাআল্লাহ। ইলমের গভীরতা থাকলে জবাব লিখেন অথবা ভিডিওতে জবাব দিতে পারেন । গালি গালাজ করবেন না। গালিগালাজ করে লাভ নায় এটা ইলমের ময়দান ইলমি তাহকীকি জবাব দেন। ইনশাআল্লাহ পাল্টা জবাব দেবো।
দ্বিতীয় অধ্যায় :-
কিছু দলীল দিলাম মহিলাদের মসজিদ গমন প্রসঙ্গে যেন আল্লাহ আপনাদের হিদায়াত করেন।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো স্ত্রী যদি মাসজিদে যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করে সে যেন তাকে নিষেধ না করে। (মিশকাত হা/১০৫৯)
بَابُ الْجَمَاعَةِ وَفَضْلِهَا وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ ﷺ: إِذَا اسْتَأْذَنَتِ امْرَأَةُ أحَدِكُمْ إِلَى الْمَسْجِد فَلَا يمْنَعهَا. (مُتَّفَقٌ عَلَيْه সহীহ : বুখারী ৮৭৩, মুসলিম ৪৪২।
ব্যাখ্যা: (إِذَا اسْتَأْذَنَتِ امْرَأَةُ أحَدِكُمْ إِلَى الْمَسْجِد) ‘‘তোমাদের কারো স্ত্রী যখন (তার স্বামীর কাছে) মাসজিদে যাওয়ার অনুমতি চায় তাহলে সে যেন তাকে নিষেধ না করে’’।
(১) হাদীস থেকে বুঝা যায় স্ত্রীকে মাসজিদে যেতে বারণ করা স্বামীর জন্য হারাম।
(২) হাদীস থেকে এও বুঝা যায় যে, স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষে কোন স্ত্রীর পক্ষে মাসজিদে যাওয়া বৈধ। আর স্বামীর পক্ষে তখনই স্ত্রীকে অনুমতি দেয়া বৈধ যখন ঐ মহিলা মাসজিদে যাওয়ার বৈধতার শর্তগুলো পূর্ণ করবে। নচেৎ নয়। শর্তগুলো নিম্নরূপঃ
(১) কোন প্রকার সুগন্ধি লাগাবে না, (২) অতিরিক্ত সাজসজ্জা করবে না, (৩) এমন গহনা পরিধান করবে না যার আওয়াজ হয়, (৪) অহংকারী বস্ত্র পরিধান করবে না, (৫) পর পুরুষের সাথে সংমিশ্রণ ঘটবে না, (৬) যুবতী নারী হবে না যাদের ফিতনার মধ্যে পরার আশংকা আছে, (৭) রাস্তা নিরাপদ হবে, তাতে কোন প্রকার ফিতনার আশংকা থাকবে না। এ শর্তগুলো পাওয়া গেলে স্বামীর পক্ষে স্ত্রীকে মাসজিদে অনুমতি দেয়া বৈধ।
হাদীস :-২)
আবূ কাতাদাহ্ আনসারী (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি সালাতে দাঁড়িয়ে তা দীর্ঘায়িত করব বলে ইচ্ছা করি, অতঃপর শিশুর কান্না শুনতে পেয়ে আমি সালাত সংক্ষিপ্ত করি এ আশংকায় যে, তার মা কষ্ট পাবে। (সহীহ্ বুখারী হা/৮৬৫)
এই হাদীস প্রমাণ করে রাসুল (সা) এর জামানায় মহিলারা মসজিদে জামায়াত করতেন।
হাদীস :-৩)
হিন্দ বিনত হারিস (রহ.) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী সালামাহ (রাযি.) তাঁকে জানিয়েছেন, নারীরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় ফরজ সালাতের সালাম ফিরানোর সাথে সাথে উঠে যেতেন এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তাঁর সঙ্গে সালাত আদায়কারী পুরুষগণ, আল্লাহ্ যতক্ষণ ইচ্ছা করেন অবস্থান করতেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল উঠলে পুরুষরাও উঠে যেতেন। (সহীহ বুখারী হা/৮৬৬)
হাদীস :-৪)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহর বাঁদীদেরকে আল্লাহর ঘরে (মাসজিদে) যেতে নিষেধ করো না। তবে তারা বের হওয়ার সময় যেন সুগন্ধি ব্যবহার না করে। সুনান আবু দাউদ গা/৫৬৫) হাদীস হাসান সহীহ।
তাহকীক তাখরীজ :-
মুসনাদ আহমাদ (২/৪৩৮, ৪৭৫, ৫২৮)সুনান দারিমী (অধ্যায়ঃ সালাত, অনুঃ মহিলাদের মাসজিদে গমনে বাঁধা দেয়া নিষেধ, হাঃ ১২৭৯), সহীহ্ ইবনু খুযাইমাহ (১৬৭৭) মুসনাদে হুমাইদী ‘ (৯৭৮), সকলেই মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমর সূত্রে।
ঈদের ময়দানে গমন প্রসঙ্গে হাদীস :-
তাছাড়া মহিলাদেরকে নিয়ে ঈদগাহে যাওয়ার ব্যাপারে জোরাল নির্দেশ এসেছে। এমনকি ঋতুবতী হলেও। তারা শুধু দু‘আ অর্থাৎ খুৎবা, তাসবীহ, তাকবীর, তাহলীলে শরীক হবে।
উম্মু ‘আত্বিয়্যাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’ঈদের দিনে ঋতুবতী ও পর্দানশীন মহিলাদেরকে মুসলিমদের জামা‘আতে ও দু‘আয় অংশ নিতে বের করে নেবার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হলো। তবে ঋতুবতীগণ যেন সলাতের জায়গা হতে একপাশে সরে বসেন। একজন মহিলা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কারো কারো (শরীর ঢাকার জন্য) বড় চাদর নেই। তিনি বললেন, তাঁর সাথী-বান্ধবী তাঁকে আপন চাদর প্রদান করবে। (মিশকাত হা/১৪৩১)
بَابُ صَلَاةِ الْعِيْدَيْنِ وَعَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: أُمِرْنَا أَنْ نُخْرِجَ الْحُيَّضَ يَوْمَ الْعِيْدَيْنِ وَذَوَاتَ الْخُدُوْرِ فَيَشْهَدْنَ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِيْنَ وَدَعْوَتَهُمْ وَتَعْتَزِلُ الْحُيَّضُ عَنْ مُصَلَّاهُنَّ قَالَتِ امْرَأَةٌ: يَا رَسُولَ اللّهِ إِحْدَانَا لَيْسَ لَهَا جِلْبَابٌ؟ قَالَ: لِتُلْبِسْهَا صَاحِبَتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَا. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ) [সহীহ : বুখারী ৩৫১, মুসলিম ৮৯০।
ক্বাযী ‘আয়ায, আবূ বাকর ও ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যা ইবনু আবী শায়বাতে তাঁরা দু’জন বলেন, (حَقٌّ عَلى كُلِّ ذَاتِ نِطَاقٍ الْخُرُوْجُ إِلَى الْعِيْدَيْنِ) প্রত্যেক যুবতীর অধিকার দু’ঈদের উদ্দেশে ঈদগাহে গমন করা। ইবনু হাজার বলেন, এ হাদীসটি মারফূ‘ সূত্রে সহীহভাবে বর্ণিত হয়েছে।
বিদ্রঃ :- পশ্চিমবঙ্গের কোনো ভাই যদি লেখাটি হুবুহু ছাপাতে চান তবে আমার সাথে যোগাযোগ করে তারপর ছাপাবেন। আমার অনুমতি ব্যাতিত ছাপানো নিষিদ্ধ ঘোষণা দিলাম। ৩১/০৫/২০১৯. রাত্রি ২:১৯ মিনিট
ব্রাদার রাহুল হোসেন
''মহিলাদের মসজিদ গমন''
প্রসঙ্গে লিখনীর ইলমী তাহকীকি ইসলাহী জাবাব।
জবাব লিখনী :- ব্রাদার রুহুল হুসেইন
সংক্ষিপ্ত ভাবে জবাব লিখছি।
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيمِ
----------------০০০০০০০--------------------
আল্লাহ তাআলা বলেন:
فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتّٰى يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا فِىٓ أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا تَسْلِيمًا
অতএব তোমার রবের কসম, তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক নির্ধারণ করে, তারপর তুমি যে ফয়সালা দেবে সে ব্যাপারে নিজদের অন্তরে কোন দ্বিধা অনুভব না করে এবং পূর্ণ সম্মতিতে মেনে নেয়। (সূরা নিসা ৪/৬৫)
আল্লাহ তায়ালা বলেন :-
وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُۥ وَيَتَعَدَّ حُدُودَهُۥ يُدْخِلْهُ نَارًا خٰلِدًا فِيهَا وَلَهُۥ عَذَابٌ مُّهِينٌ
আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক আযাব। (সূরা নিসা ৪/১৪)
আল্লাহ তাআলা বলেন :-
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُۥٓ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ ۗ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَقَدْ ضَلَّ ضَلٰلًا مُّبِينًا
আর আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে। (সূরা আহযাব ৩৩/৩৬)
প্রথমে রেজবী সাহেবের পক্ষ থেকে দলীল।
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ لَوْ أَدْرَكَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَحْدَثَ النِّسَاءُ لَمَنَعَهُنَّ كَمَا مُنِعَتْ نِسَاءُ بَنِي إِسْرَائِيلَ. قُلْتُ لِعَمْرَةَ أَوَ مُنِعْنَ قَالَتْ نَعَمْ.
‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানতেন যে, নারীরা কী অবস্থা সৃষ্টি করেছে, তাহলে বানী ইসরাঈলের নারীদের যেমন বারণ করা হয়েছিল, তেমনি এদেরও মসজিদে আসা নিষেধ করে দিতেন। (সহীহ বুখারী হা/৮৭৩)
আমাদের জবাব -১) আয়েশা (রাযি) তিনি শুধুমাত্র আসঙ্কা করেছেন। কিন্তু তিনি হারাম নাজায়েয মাকরুহ ফাতাওয়া দেয়নি। যেটা রেজবী সাহেব আপনারা দিয়েছেন !
জবাব -২) হাদিসের মধ্যে আয়েশা (রাযি) পক্ষথেকে নিষিদ্ধ শব্দ নেয়। আলহামদুলিল্লাহ তিনি নিষিদ্ধ ফাতওয়া কেনইবা দিবেন কারণ রাসুল ( সা) যে জায়েয বলেছেন।
(সুনান আবু দাউদ গা/৫৬৫; মুসনাদ আহমাদ (২/৪৩৮, ৪৭৫, ৫২৮)সুনান দারিমী (অধ্যায়ঃ সালাত, অনুঃ মহিলাদের মাসজিদে গমনে বাঁধা দেয়া নিষেধ, হাঃ ১২৭৯; সহীহ্ ইবনু খুযাইমাহ হা/১৬৭৭ মুসনাদে হুমাইদী হা/৯৭৮)
অভিযোগ -৩) আয়েশা (রাযি) বলেছেন 'মহিলারা যা শুরু করেছে' মহিলারা কি শুরু করেছেন?
সামদানী রাজবী বলেছেন পর্দাহীনিতা। সাজগোজ ইত্যাদি
জবাব: ৩)- আমরা বলছি রাসুল (সা) এর যুগেও ব্যভিচারের মতো মহাপাপ সংঘটিত হয়েছে তবুও রাসুল (সা) মহিলাদের মসজিদ গমন নিষিদ্ধ করেননি। আলহামদুলিল্লাহ
হাদীস :-
ওয়ায়িল ইবনু হুজর (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে জনৈকা মহিলা সলাতের উদ্দেশে বের হলো। এমন সময় এক ব্যক্তি তাকে ধরে নিয়ে জোরপূর্বক যিনা করলে মহিলাটির চিৎকারে পুরুষটি পালিয়ে যায়। তখন মুহাজিরদের একটি দল সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। তখন মহিলাটি বলল, ঐ লোকটি আমার সাথে এরূপ এরূপ করেছে। তারা তখন ঐ লোকটিকে গ্রেফতার করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত করল। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঐ মহিলাটিকে বললেন, চলে যাও আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আর যে লোকটি মহিলাটির সাথে যিনা করেছিল। যিনাকারীর ব্যাপারে হুকুম করলেন, একে পাথর নিক্ষেপে হত্যা কর। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, লোকটি এমনভাবে তাওবাহ্ করেছে যদি মাদীনার সকল লোক এরূপ তাওবাহ্ করত, তাহলে তাদের সকলের পক্ষ থেকে তা কবুল করা হতো। (সুনান আবূ দাঊদ হা/ ৪৩৭৯, সুনান তিরমিজি হা/ ১৪৫৪, মুসনাদ আহমাদ হা/২৭২৪০,সহীহ আত্ তারগীব হা/২০২৩)
নোট :- আল্লাহ রাসুল (সা) যেনা কারিকে শাস্তি দিয়েছেন কিন্তু মহিলাকে মসজিদ আসতে নিষিদ্ধ করেননি। তাহলে আপনারা কেন নিষিদ্ধ করছেন! ?
আমরা আরো বলছি রাসুল (সা) এর যুগেও ব্যভিচারের মতো মহাপাপ সংঘটিত হয়েছে দেখুন হাদীস সহীহ্ বুখারী হা/৬৮১৪; ৬৮২০; মুসলিম হা/১৬৯৩; ১৬৯৫; সুনান আবু দাউদ হা/৪৪৩০; তিরমিজি হা/১৪২৯; নাসাঈ হা/১৯৫৬)
নোট :- এতদাসত্বেও নবী (সা) নিষিদ্ধ করেননি। কেন না রাসুল (সা) শরিয়াতের কনো কথা নিজের তরফ থেকে কিছুই বলতেন না। সূরা নাজম ৫৩/৩-৪)
কিন্তু আপনারা রাসুল (সা) এর বিরুদ্ধে ফাতওয়া দিয়েছেন। এমন কি আয়েশা (রাযি) বিরুদ্ধে ফাতওয়া দিয়েছেন!
অভিযোগ :- ৪) আর যদি বলেন আয়েশা (রাযি) তো বলেছেন 'রাসুল (সা) এমন পরিস্থিতি দেখলে মহিলাদের মসজিদ গমন নিষিদ্ধ করে দিতেন'! তাহলে আমরা বলবো এটা আপনাদের আক্বীদার পরিপন্থী কারণ আপনারা রাসুল (সা) কে ইলমে গায়েব বিশ্বাস করেন! এই উক্তি থেকে প্রতিয়মান হয় যে রাসুল (সা) ইলমে গায়েব না। যেমন পর্যায়ে আপনাদের আক্বীদা। একখ এমন দলিল কেন দেন যা আপনাদের বিরুদ্ধে হয়ে দাড়িয়েছে।
অভিযোগ :- ৫) আয়েশা (রাযি:-) বলেছেন
বলেছেন বাণী ঈসরাইলের মহিলাদের মতো মসজিদ গমন নিষিদ্ধ করে দিতেন।
জবাব :- আয়েশা (রাযি) বলেছেন রাসুল (সা) নিষিদ্ধ করে দিতেন! কিন্তু রাসুল (সা) নিষিদ্ধ করেননি। এবং আয়েশা (রাযি) তিনিও নিষিদ্ধ করেননি তাহলে আপনারা কেন নিষিদ্ধ করছেন। আপনাদের অজ্ঞতা পরিষ্কার আলহামদুলিল্লাহ
জবাব: - ৬) বানী ঈসারাঈলের সর্ব শেষ নবী হজরত ঈসা (আ) 'আল্লাহ তাআলা তারা মাতা মারিয়ামকে মসজিদে গমনের নির্দেশ প্রদান করেছিলেন
সূরা ইমরান ৩/৪৩
يٰمَرْيَمُ اقْنُتِى لِرَبِّكِ وَاسْجُدِى وَارْكَعِى مَعَ الرّٰكِعِينَ
‘হে মারইয়াম, তোমার রবের জন্য অনুগত হও। আর সিজদা কর এবং রুকূকারীদের সাথে রুকূ কর’। সুরা ইমরান ৩/৪৩)
নোট :- অত্র আয়াত থেকে প্রমানিত হলো 'মারিয়াম (আ) কে আল্লাহ তাআলা মসজিদে জামায়াতের সহীত সালাত আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রুকূকারীদের সাথে রুকূ কর’।
তাহলে এই যুক্তিও আর টিকলো না। আলহামদুলিল্লাহ।
৭) জবাব :- আয়েশা (রাযী) ৫৫ হিজরিতে সদ বিন আবি ওকাস (রাযি) জানাজার নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে তার লাশ আনতে বলেছিলেন। (সহীহ মুসলিম হা/৯৭৩ মাকতাবা শামিলা) মুয়াত্তা ইমাম মালিক হা/১০১৮)
সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রাযি) ইন্তেকাল করেন৫৫ হিজরিতে (তাকরীবুত তাহজীব রাবি নং ২২৫৯)
আয়েশা (রাযী) ইন্তেকাল করেন ৫৭ হিজড়িতে (তাকরীবুত তাহজীব রাবি নং ৮৬৩৩)
নোট :- এতদ্বারা প্রমানিত হলো যে আয়েশা (রাযি) শেষ জীবন পর্যন্ত শুধুমাত্র মসজিদে নামাজ নয় বরং জানাযার নামাজ ও পড়েছেন আলহামদুলিল্লাহ।
রেজবীদের ফাতাওয়া মারদুদ।
একটি প্রশ্ন :-
যারা নিজেদের হানাফী দাবী করেন তাদের কাছে প্রশ্ন ইমাম আবু হানিফা (রহ) থেকে প্রমাণ পেশ করুন মহিলাদের মসজিদ গমন প্রসঙ্গে। জানি আপনারা করবেন না। কারণ ইমাম আবু হানীফা (রহ) আপনাদের হস্তের কলমের কালি শেষ করে দিয়েছে কারণ ইমাম আবু হানীফা (রহ) তিনি জায়েয ফাতাওয়া দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ।
বিদ্রঃ:- বিস্তারিত ভিডিও জবাব আসছে ইনশাআল্লাহ। ইলমের গভীরতা থাকলে জবাব লিখেন অথবা ভিডিওতে জবাব দিতে পারেন । গালি গালাজ করবেন না। গালিগালাজ করে লাভ নায় এটা ইলমের ময়দান ইলমি তাহকীকি জবাব দেন। ইনশাআল্লাহ পাল্টা জবাব দেবো।
দ্বিতীয় অধ্যায় :-
কিছু দলীল দিলাম মহিলাদের মসজিদ গমন প্রসঙ্গে যেন আল্লাহ আপনাদের হিদায়াত করেন।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো স্ত্রী যদি মাসজিদে যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করে সে যেন তাকে নিষেধ না করে। (মিশকাত হা/১০৫৯)
بَابُ الْجَمَاعَةِ وَفَضْلِهَا وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ ﷺ: إِذَا اسْتَأْذَنَتِ امْرَأَةُ أحَدِكُمْ إِلَى الْمَسْجِد فَلَا يمْنَعهَا. (مُتَّفَقٌ عَلَيْه সহীহ : বুখারী ৮৭৩, মুসলিম ৪৪২।
ব্যাখ্যা: (إِذَا اسْتَأْذَنَتِ امْرَأَةُ أحَدِكُمْ إِلَى الْمَسْجِد) ‘‘তোমাদের কারো স্ত্রী যখন (তার স্বামীর কাছে) মাসজিদে যাওয়ার অনুমতি চায় তাহলে সে যেন তাকে নিষেধ না করে’’।
(১) হাদীস থেকে বুঝা যায় স্ত্রীকে মাসজিদে যেতে বারণ করা স্বামীর জন্য হারাম।
(২) হাদীস থেকে এও বুঝা যায় যে, স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষে কোন স্ত্রীর পক্ষে মাসজিদে যাওয়া বৈধ। আর স্বামীর পক্ষে তখনই স্ত্রীকে অনুমতি দেয়া বৈধ যখন ঐ মহিলা মাসজিদে যাওয়ার বৈধতার শর্তগুলো পূর্ণ করবে। নচেৎ নয়। শর্তগুলো নিম্নরূপঃ
(১) কোন প্রকার সুগন্ধি লাগাবে না, (২) অতিরিক্ত সাজসজ্জা করবে না, (৩) এমন গহনা পরিধান করবে না যার আওয়াজ হয়, (৪) অহংকারী বস্ত্র পরিধান করবে না, (৫) পর পুরুষের সাথে সংমিশ্রণ ঘটবে না, (৬) যুবতী নারী হবে না যাদের ফিতনার মধ্যে পরার আশংকা আছে, (৭) রাস্তা নিরাপদ হবে, তাতে কোন প্রকার ফিতনার আশংকা থাকবে না। এ শর্তগুলো পাওয়া গেলে স্বামীর পক্ষে স্ত্রীকে মাসজিদে অনুমতি দেয়া বৈধ।
হাদীস :-২)
আবূ কাতাদাহ্ আনসারী (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি সালাতে দাঁড়িয়ে তা দীর্ঘায়িত করব বলে ইচ্ছা করি, অতঃপর শিশুর কান্না শুনতে পেয়ে আমি সালাত সংক্ষিপ্ত করি এ আশংকায় যে, তার মা কষ্ট পাবে। (সহীহ্ বুখারী হা/৮৬৫)
এই হাদীস প্রমাণ করে রাসুল (সা) এর জামানায় মহিলারা মসজিদে জামায়াত করতেন।
হাদীস :-৩)
হিন্দ বিনত হারিস (রহ.) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী সালামাহ (রাযি.) তাঁকে জানিয়েছেন, নারীরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় ফরজ সালাতের সালাম ফিরানোর সাথে সাথে উঠে যেতেন এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তাঁর সঙ্গে সালাত আদায়কারী পুরুষগণ, আল্লাহ্ যতক্ষণ ইচ্ছা করেন অবস্থান করতেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল উঠলে পুরুষরাও উঠে যেতেন। (সহীহ বুখারী হা/৮৬৬)
হাদীস :-৪)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহর বাঁদীদেরকে আল্লাহর ঘরে (মাসজিদে) যেতে নিষেধ করো না। তবে তারা বের হওয়ার সময় যেন সুগন্ধি ব্যবহার না করে। সুনান আবু দাউদ গা/৫৬৫) হাদীস হাসান সহীহ।
তাহকীক তাখরীজ :-
মুসনাদ আহমাদ (২/৪৩৮, ৪৭৫, ৫২৮)সুনান দারিমী (অধ্যায়ঃ সালাত, অনুঃ মহিলাদের মাসজিদে গমনে বাঁধা দেয়া নিষেধ, হাঃ ১২৭৯), সহীহ্ ইবনু খুযাইমাহ (১৬৭৭) মুসনাদে হুমাইদী ‘ (৯৭৮), সকলেই মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমর সূত্রে।
ঈদের ময়দানে গমন প্রসঙ্গে হাদীস :-
তাছাড়া মহিলাদেরকে নিয়ে ঈদগাহে যাওয়ার ব্যাপারে জোরাল নির্দেশ এসেছে। এমনকি ঋতুবতী হলেও। তারা শুধু দু‘আ অর্থাৎ খুৎবা, তাসবীহ, তাকবীর, তাহলীলে শরীক হবে।
উম্মু ‘আত্বিয়্যাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’ঈদের দিনে ঋতুবতী ও পর্দানশীন মহিলাদেরকে মুসলিমদের জামা‘আতে ও দু‘আয় অংশ নিতে বের করে নেবার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হলো। তবে ঋতুবতীগণ যেন সলাতের জায়গা হতে একপাশে সরে বসেন। একজন মহিলা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কারো কারো (শরীর ঢাকার জন্য) বড় চাদর নেই। তিনি বললেন, তাঁর সাথী-বান্ধবী তাঁকে আপন চাদর প্রদান করবে। (মিশকাত হা/১৪৩১)
بَابُ صَلَاةِ الْعِيْدَيْنِ وَعَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ رَضِيَ اللّهُ عَنْهَا قَالَتْ: أُمِرْنَا أَنْ نُخْرِجَ الْحُيَّضَ يَوْمَ الْعِيْدَيْنِ وَذَوَاتَ الْخُدُوْرِ فَيَشْهَدْنَ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِيْنَ وَدَعْوَتَهُمْ وَتَعْتَزِلُ الْحُيَّضُ عَنْ مُصَلَّاهُنَّ قَالَتِ امْرَأَةٌ: يَا رَسُولَ اللّهِ إِحْدَانَا لَيْسَ لَهَا جِلْبَابٌ؟ قَالَ: لِتُلْبِسْهَا صَاحِبَتُهَا مِنْ جِلْبَابِهَا. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ) [সহীহ : বুখারী ৩৫১, মুসলিম ৮৯০।
ক্বাযী ‘আয়ায, আবূ বাকর ও ‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যা ইবনু আবী শায়বাতে তাঁরা দু’জন বলেন, (حَقٌّ عَلى كُلِّ ذَاتِ نِطَاقٍ الْخُرُوْجُ إِلَى الْعِيْدَيْنِ) প্রত্যেক যুবতীর অধিকার দু’ঈদের উদ্দেশে ঈদগাহে গমন করা। ইবনু হাজার বলেন, এ হাদীসটি মারফূ‘ সূত্রে সহীহভাবে বর্ণিত হয়েছে।
বিদ্রঃ :- পশ্চিমবঙ্গের কোনো ভাই যদি লেখাটি হুবুহু ছাপাতে চান তবে আমার সাথে যোগাযোগ করে তারপর ছাপাবেন। আমার অনুমতি ব্যাতিত ছাপানো নিষিদ্ধ ঘোষণা দিলাম। ৩১/০৫/২০১৯. রাত্রি ২:১৯ মিনিট
ব্রাদার রাহুল হোসেন